নিজস্ব প্রতিনিধি, সীতাকুণ্ড
সীতাকুণ্ড বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের সাগর উপকূলে ৪০ কোটি টাকা বরাদ্দে নির্মিত বেড়িবাঁধটি বছর না ফুরোতেই ধসে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় নির্মিত বাঁধটি টেকসই হয়নি বলে মনে করছেন এলাকাবাসী। বাঁধের ব্লক ধসে যাওয়ায় জোয়ারের পানিতে ৫টি গ্রামের বাড়িঘর প্লাবিত হবার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের বোয়ালিয়াকুল এলাকার ৩ স্থানে এবং আকিলপুর এলাকার ৭ স্থানে মোট ১০ স্থানে বাঁধের ব্লক নিচের দিকে ধসে গেছে। স্থানীয় এলাকাবাসী বেড়িবাঁধের সংস্কারে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন। নি¤œমানের নুড়িপাথর, সিমেন্ট ও বালু দিয়ে নির্মিত সিসি ব্লকগুলো বাঁধরক্ষায় স্থাপন করা হয়েছিল। যার ফলে ব্লকের নিচ থেকে বালু ও নুড়িপাথর সরে গিয়ে বাঁধ ভেঙে যেতে শুরু করেছে। ফলে ৪০ কোটি টাকা বরাদ্দের বাঁধটি টেকসই হয়নি বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।
সীতাকু-ের বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের বোয়ালিয়াকূল, আকিলপুর, জমাদারপাড়া, সত্যপাড়া গ্রামের সাগর উপকূলের সোয়া ২ কিলোমিটার দীর্ঘ উপকূল রক্ষাবেড়িবাঁধটি দেড় যুগ ধরে ভাঙতে ভাঙতে সাগরে বিলীন হয়ে যায়। যার ফলে এসব এলাকার শত শত একর ফসলি জমিতে নোনাপানি ঢুকে ফসল উৎপাদন বন্ধসহ জোয়ারের সময় বাড়িঘরে পানি ঢুকে যেত। ফলে বাঁধ সংস্কারের দাবিতে মহাসড়কে মানববন্ধন, মিছিল-সমাবেশসহ নানা কর্মসূচি পালন করে হাজার হাজার নরনারী। এভাবে দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের পর স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শওকত জাহাঙ্গীরের অনুরোধে এলাকার সংসদ সদস্য দিদারুল আলম পানিসম্পদ মন্ত্রীকে সমস্যাটি অবগত করেন। মন্ত্রী অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এখানে স্থায়ী ও মজবুত বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য ৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেন। জয়েন্ট ভেঞ্চার লিমিটেড, রহমান ইঞ্জিনিয়ারিং ও ইউনুছ ব্রাদার্স নামক তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। ২০১৭ সালের ৯ ডিসেম্বর পানিসম্পদমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বেড়িবাঁধ নির্মাণকাজ পরিদর্শন করেন। ২ কিলোমিটার দীর্ঘ বেড়িবাঁধের কাজ ২০১৯ সালে শেষ হয় ।
এ প্রসঙ্গে বাঁশবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান শওকত আলী জাহাঙ্গীর বলেন, উত্তাল সমূদ্রের ঢেউয়ের কারণে বাঁধের ব্লকের নিচ থেকে মাটি সরে গিয়ে গর্ত হয়ে কয়েক জায়গায় ধসে গেছে। বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ড সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। তারা পরিদর্শন করে সংস্কার বিষয়ে প্রদক্ষেপ নেবেন বলে জানিয়েছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান বলেন, মাঝখানে কয়েকদিন অতিবৃষ্টিতে সমুদ্রের জোয়ারের পানি বেড়ে যাওয়া এবং সাগরে প্রচ- ঢেউ থাকার কারণে অনেক স্থানে ব্লক ধসে গেছে শুনেছি। তা শিগগিরই আমরা পরিদর্শনপূর্বক মেরামত করার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে আদেশ দেব।