চবি চারুকলা ইনস্টিটিউটের মানববন্ধন-সমাবেশে বক্তারা
নিজস্ব প্রতিবেদক :
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা ইনস্টিটিউটের মানববন্ধন ও সমাবেশে বক্তারা বলেছেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মাণাধীন ভাস্কর্যের প্রতি অবমাননা বাংলাদেশের স্বাধীনতা তথা স্বাধীন বাংলাদেশের ওপরই আঘাত। ভাস্কর্যের বিরোধিতা করা মানে ইতিহাস, ঐতিহ্য আর জ্ঞানার্জনের বিরোধিতা করা। শিল্প-সাহিত্যের পথ রুদ্ধ করার একটিই অর্থ হতে পারে মানুষকে আলোর পথ থেকে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যাওয়া।
বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের প্রতি অবমাননার প্রতিবাদে এবং ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধীদের শাস্তির দাবিতে গতকাল ১৩ ডিসেম্বর বিকালে নগরীর প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে এবং একইদিন সকালে চবি ক্যাম্পাসের বঙ্গবন্ধু চত্বরে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
চবি চারুকলা ইনস্টিটিউটের পরিচালক প্রণব মিত্র চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তৃতা করেন, কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের সাবেক ডিন প্রফেসর ড. মো. সেকান্দর চৌধুরী, চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মনজুরুল আলম, রসায়ন বিভাগের প্রফেসর বেনু কুমার দে, লোকপ্রশাসন বিভাগের প্রফেসর হোসাইন কবির, নৃবিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. রাহমান নাসির উদ্দিন, চারুকলার শিক্ষক জাহেদ আলী চৌধুরী, দর্শন বিভাগের শিক্ষক ও সাবেক সিন্ডিকেট সদস্য মাছুম আহমেদ প্রমুখ।
স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য অবমাননাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে সমাবেশে বক্তারা বলেন, ইসলামের নামে এদেশের অসাম্প্রদায়িক ও শান্তিপ্রিয় ধর্মপ্রাণ মানুষের ধর্মীয় মূল্যবোধকে পুঁজি করে মৌলবাদী অপশক্তি একাত্তরের পরাজিত শক্তির উদ্দেশ্য হাসিল করতে চায়। তারা বাংলাদেশের বর্তমান সমৃদ্ধিকে স্তব্ধ করতে রাজনৈতিক দূরভিসন্ধি বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের বিরোধিতায় অবতীর্ণ হয়েছে।
বক্তারা বলেন, বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালে যে সংবিধান উপহার দিয়েছেন সেখানে ধর্ম, বর্ণ, জাতি ও গোষ্ঠী সকল মানুষের সমান অধিকারের কথা বলা হয়েছে। একটি অসাম্প্রদায়িক চেতনায় স্বাধীন হয়েছে বাংলাদেশ। ধর্মের নামে সেই চেতনায় আঘাত আর অন্য ধর্মের প্রতি কটাক্ষ দেশের সংবিধানেরই লঙ্ঘন।
শিক্ষকবৃন্দ বলেন, ভাস্কর্য শিল্প চারুকলার অন্যতম শাখা। একটি দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য আর সৃজনশীলতার অনবদ্য স্মারক হলো এই ভাস্কর্য। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য অবমাননার মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী দেশের স্বাধীনতা ও মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাসকেই নিশ্চিহ্ন করার অপচেষ্টা চালিয়েছে।
বক্তারা সাম্প্রদায়িক মৌলবাদীদের সমূলে উৎপাটনের জন্য বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষের সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ার আহবান জানান।
সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চারুকলার প্রফেসর সৈয়দ সাইফুল কবীর, ইংরেজী বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর মাইনুল হাসান চৌধুরী, চারুকলার প্রফেসর মো. জসিম উদ্দিন, প্রফেসর নাসিমা আখতার, দর্শনের প্রফেসর ড. এফ এম এনায়েত হোসেন, চারুকলার শিক্ষক উত্তম কুমার বড়ুয়া, তাসলিমা আকতার, হায়দারী আন্দালুসিয়া প্রমুখ।