নিজস্ব প্রতিবেদক »
প্রশাসনকে বেঁধে দেওয়া ৭ কার্যদিবস শেষে দাবি বাস্তবায়নের উদ্যোগ না দেখে শর্ত অনুযায়ী পুনরায় আন্দোলনে নেমেছে চারুকলা ইনস্টিটিটিউটের শিক্ষার্থীরা। তবে এবার শিক্ষার্থীদের অন্য একটি অংশ দাবি জানাচ্ছেন কেবল শ্রেণি কার্যক্রম অব্যাহত রাখার।
গত ৩১ জানুয়ারি সকাল ৯টা থেকে চট্টগ্রাম চারুকলা ইনস্টিটিউটের মূল ফটকে তালা দিয়ে ভিতরে বিক্ষোভ করেন ‘চারুকলা মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তর চাই’ দাবি জানানো আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এসময় ফটকের বাইরে অবস্থান করতে দেখা যায় কয়েকজন শিক্ষককে। এছাড়া ফটকের বাইরে পৃথক একটি ব্যানার নিয়ে চারুকলার শিক্ষার্থীদের অন্য একটি অংশকে ‘আমরা ক্লাসে ফিরতে চাই’ দাবি জানাতে দেখা যায় ।
এ বিষয়ে ক্লাস কার্যক্রম অব্যাহত রাখার দাবি জানিয়ে অর্পা ধর বলেন,‘ আমরা ২২ দফা দাবির সাথে ছিলাম। কিন্তু সেটা যখন একদফা দাবিতে পরিণত হলো অর্থাৎ চারুকলা স্থানান্তর, যেটা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার । যেটা পসিবলই না। তাহলে এরকম একটা অযৌক্তিক দাবি নিয়ে সবার এখন নিজের সময়গুলো নষ্ট করার কোনো মানে হয় না। মূল ক্যাম্পাসে ৫টা রুম দেবে সেখানে এভাবে কি ক্লাস করা যাবে। একটা ফ্যাকাল্টি দিলে তাও কথা ছিলো। আমরা জেনেছি, চারুকলা সংস্কারের জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে। তাহলে সে প্রক্রিয়াটা তো বাস্তবায়নের সময় দিতে হবে।’
এ ব্যাপারে মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরে ফেরার দাবিতে অনড় আন্দোলরত শিক্ষার্থীদের পক্ষে মোহাম্মদ শহীদ বলেন, ‘আমরা ৭ কার্যদিবসের মধ্যে জেলা প্রশাসকের আশ্বাস বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া ও কার্যক্রম শুরু দাবি জানিয়েছিলাম, যা মেনে নেওয়া হয়েছিলো। তার মধ্যে মূল দাবি ছিলো চারুকলা স্থানান্তর। যেটির প্রক্রিয়া শুরুর ক্ষেত্রে সবচেয়ে জরুরি অ্যাকাডেমিক মিটিং। সেই অ্যাকাডেমিক মিটিং এখনও পর্যন্ত হয়নি। আমরা পরিচালক ম্যামের সাথে কথা বলেছি তিনি জানালেন, স্থানান্তর নয় ইনস্টিটিউট সংস্কারের যে কাজগুলো আছে সেগুলোর প্রক্রিয়া শুরুর চিঠি প্রেরণ করেছেন। তাহলে আমাদেরকে এ ধরনের আশ্বাস দেওয়া হলো কেন? আমাদের শর্ত অনুযায়ী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে আশ্বাস বাস্তবায়নের অগ্রগতি না দেখে আন্দোলনে ফিরে গেছি।’
গত ২০ জানুয়ারি শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল চট্টগ্রাম চারুকলা ইনস্টিটিউটে এসে ৮১দিন পর মূল ফটকের তালা খুলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরার আহ্বান জানান। পরবর্তী দিন ২১ জানুয়ারি জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম. নাছির উদ্দিন চারুকলা ইনস্টিটিটিউটে এসে মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের দাবিসহ ৫ দফা বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়ে ক্লাস শুরুর অনুরোধ জানান।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক আবুল বাসার ফখরুজ্জামান গতকাল বলেন, ‘আমি এ ব্যাপারে আশ্বাস দিলেও দু‘পক্ষের ( আন্দোলনরত শিক্ষার্থী-চারুকলা ইনস্টিটিউট প্রশাসন) সাথে কথা বলেছি। কিন্তু তাদের মতের সমন্বয় ঘটাতে পারিনি। তাই সিদ্ধান্ত হোল্ড হয়ে গেছে। আমি যে আশ্বাস দিয়েছিলাম সেটি বাস্তবায়নে ব্যর্থ।’
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম চারুকলা ইনস্টিটিটিউটের পরিচালক সুফিয়া বেগম বলেন, ‘আমরা ২২ দফার সবগুলো দাবি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর ৪ থেকে ৫টি চিঠি পাঠিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও আমাদের চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। এগুলো তো সময়সাপেক্ষ ব্যাপার- এটা যদি শিক্ষার্থী না বুঝে তাহলে কি করার আছে বলুন। ’