নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার, প্রতিনিধি, সাতকানিয়া, চন্দনাইশ ও রাঙ্গুনিয়া
বিভিন্ন স্থানে পৃথক ঘটনায় ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। কক্সবাজারে দুজন, কর্ণফুলীতে একজন, রাঙ্গুনিয়ায় শ্রমিক, সাতকানিয়ায় শিশু ও চন্দনাইশে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে সমুদ্রে গোসলে নেমে মো. আসাদ (২৫) নামের এক পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার (১ জুলাই) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। আসাদ ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকার মো. আহসান উল্লাহর ছেলে। কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) শেহেরিন আলম জানান, শনিবার সকালে বন্ধুদের সঙ্গে কক্সবাজার বেড়াতে আসেন আসাদ। তারা সবাই কলাতলী এলাকার মোরশেদা রিসোর্ট নামের একটি আবাসিক হোটেল উঠেন। দুপুর ২টার দিকে বন্ধুরা মিলে সৈকতের লাবণী পয়েন্টে গোসল করতে যান। এ সময় সাগরে ভাটার তীব্র স্রোতের টানে আসাদ ভেসে যান। সঙ্গে থাকা বন্ধুরা চিৎকার করলে লাইফ গার্ড কর্মীরা তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করেন। পরে আসাদকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি আরও বলেন, ‘সাগরে গোসলে নেমে ভেসে যাওয়ার সময় অতিরিক্ত লবণ পানি পান করায় আসাদের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক।
প্রাণ গেল বৃদ্ধার
কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার জালালাবাদে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় এক বৃদ্ধ প্রাণ হারিয়েছেন। নিহত জাফর আলম (৬২) ঈদগাঁও উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়নের পালাকাটা এলাকার মৃত হাজী সোলেমান ফরাজীর ছেলে।
বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) রাতে ঈদগাঁও-চৌফলদন্ডী,খুরুশকুল ইদমনি সড়কের পালাকাটা গুম গাছতলা নামক স্থানে নিহতের বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা জানান, নিহত জাফর আলম এশারের নামাজ আদায় করে বাড়ি ফিরছিলেন, প্রতিমধ্যে চৌফলদন্ডী থেকে আসা ঈদগাঁওমুখী একটি মোটরসাইকেল চালক সজোরে ধাক্কা দিলে সড়কে লুটে পড়ে জাফর আলম।
স্থানীয়রা এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে ঈদগাঁওস্থ একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নিয়ে গেলে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। সেখানে রাত আনুমানিক দেড়টায় মারা যান।
বেওয়ারিশ যুবকের মরদেহ উদ্ধারের পর দাফন
কর্ণফুলী উপজেলায় শিকলবাহায় অজ্ঞাত এক যুবকের (আনুমানিক ২৭ বছর) মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (৩০ জুন) শিকলবাহা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড ভেল্লাপাড়া ব্রিজের পাশে বালুর মাঠ থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। তবে মরদেহটি উদ্ধারের তিন দিন পেরিয়ে গেলেও তার নাম-পরিচয় জানা যায়নি। মারা যাওয়া এই অজ্ঞাত যুবকের কপাল, কাঁধ ও বাম চোখের নিচে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে জানায় পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দুলাল মাহমুদ।
তিনি বলেন, মরদেহ উদ্ধারের পর তিনদিন পেরিয়ে গেলেও মৃত ব্যক্তির কোন নাম পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি। পরে ফিঙ্গার প্রিন্টের মাধ্যমে তার পরিচয় সনাক্ত করার চেষ্টা করা হলেও দেখা যায় সে ভোটার হননি। প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি ভোটার না হওয়ায় প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে যে ব্যক্তিটি মানসিক ভারসাম্যহীন। হয়তো সড়কের মধ্যে কোন যানবাহনের ধাক্কায় তিনি মারা যান। তবে তারা ডিএনএ সংরক্ষণ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মরদেহ উদ্ধারের সময় যুবকের গায়ে লাল-সাদা প্রিন্টের ছেড়া পাঞ্জাবি ও কোমরে কালো রঙের সুতা দিয়ে দুটি তাবিজ এবং গলায় একইভাবে পয়সার মতো আরও একটি তাবিজ বাধা ছিল। শনিবার মরদেহটি আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলামের মাধ্যমে দাফন প্রক্রিয়া শেষ করা হয়।
সাতকানিয়া
সাতকানিয়ায় পুকুরে ডুবে আইরা (৩) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (১ জুলাই) দুপুর দেড়টায় সাতকানিয়ার ছদাহা ইউনিয়নের ফকির পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।নিহত শিশু আইরা লোহাগাড়া উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ওয়াজ উদ্দিন তালুকদার পাড়ার জাহেদুল ইসলাম তালুকদারের মেয়ে।
ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
রাঙ্গুনিয়া
রাঙ্গুনিয়ায় চা শ্রমিকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শ্রমিকের নাম মুজিব সাওতাঁল। শনিবার রাতে ঠান্ডাছড়ি চা বাগানের একটি ডোবা থেকে তার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতের বাড়ি মৌলভী বাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলায়। সে রাম সাওতাঁলের ছেলে বলে পুলিশ সূত্র জানিয়েছে।
জানা যায়, উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের ঠান্ডাছড়ি চা বাগানে ২৫ দিন পূর্বে মুজিব সাওতাঁল সিলেট থেকে চাকরি করতে আসেন। বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) সন্ধ্যায় চা বাগান এলাকার নিজ বাসা থেকে মুজিব বের হলে আর ফেরেননি। পরে শনিবার বিকেলের দিকে ডোবায় তাঁর লাশ ভাসতে দেখে পুলিশকে খবর দেন স্থানীয়রা। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে চা শ্রমিকের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চমেক হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে।
চন্দনাইশ
তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে চন্দনাইশে মো. মুছা (৫৫) এক ব্যক্তিকে ছুরিকাঘাতে খুন করা হয়েছে। খুনি তারই আপন ছোট ভাই আব্দুল বায়েজ।
শুক্রবার (৩০ জুন) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার দোহাজারী পৌরসভার ফুলতলা ছগির পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।নিহত মুছা ওই এলাকার মৃত আবদুল ওয়ারেছের পুত্র।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অর্থ লেনদেনের বিষয় নিয়ে দুই ভাই মুছা ও আবদুল বায়েজের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে ছোট ভাই আব্দুল বায়েজ বড় ভাই মুছাকে ছুরিকাঘাত করে। পরিবারের লোকজন দ্রুত তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় দোহাজারী হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মুছাকে মৃত ঘোষণা করেন।