সুপ্রভাত ডেস্ক »
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন পরিসংখ্যান অনুযায়ী মহামারির গত দুই বছরে করোনায় ৬২ লাখ ৭০ হাজারের কিছু বেশি সংখ্যক মানুষের মৃত্যু হলেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দাবি, এই সময়সীমায় কোভিডজনিত অসুস্থতায় মৃতদের প্রকৃত সংখ্যা অন্তত ১ কোটি ৪৯ লাখ।
এই সংখ্যা যে কোনো আন্তর্জাতিক পরিসংখ্যানের চেয়ে তিন গুণ বা তার চেয়েও বেশি। বৃহস্পতিবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে এএফপি।
বিবৃতিতে ডব্লিউএইচওর মহাসচিব তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস বলেন, ‘২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে নেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এই সংখ্যা পাওয়া গেছে। এই মৃতদের সবাই করোনা মহামারির প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ শিকার।’
‘এই দুঃখজনক সংখ্যা যে কেবল মহামারির ক্ষয়ক্ষতিই আমাদের সামনে তুলে ধরেছে— তা নয়, বরং ইঙ্গিত দিচ্ছে যে—যদি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা আরও উন্নত হতো, সেক্ষেত্রে অনেক কম মৃত্যু দেখতে হতো আমাদের।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মহমারির ২ বছরে করোনায় মৃত্যু সবচেয়ে বেশি হয়েছে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশসমূহে। এসব দেশে মৃত্যুর শতকরা হার ৫৩ শতাংশ। এছাড়া উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশসমূহে মৃত্যুর শতকরা হার ২৮ শতাংশ ও উন্নত দেশসমূহে এই হার ১৫ শতাংশ।
আরও বলা হয়েছে, কোভিডজনিত অসুস্থতায় মৃতদের মধ্যে পুরুষদের হার বেশি— ৫৭ শতাংশ; আর নারীদের বেলায় এ হার ৪৩ শতাংশ।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে বিশ্বের প্রথম করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। করোনায় প্রথম মৃত্যুর ঘটনাটিও ঘটেছিল চীনে।
তারপর অত্যন্ত দ্রুতগতিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসটি। পরিস্থিতি সামাল দিতে ২০২০ সালের ৩০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
কিন্তু তাতেও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় অবশেষে ওই বছরের ১১ মার্চ করোনাকে মহামারি হিসেবে ঘোষণা করে ডব্লিউএইচও।
বিভিন্ন দেশের সরকার ডব্লিউএইচওতে যেসব তথ্য পাঠিয়েছে, সেগুলো বলছে—২০২০ ও ২০২১ সালে কোভিডজনিত অসুস্থতায় মৃত্যু হয়েছে ৫৪ লাখ ২০ হাজার মানুষের; তারপর ২০২২ সালের গত ৫ মাসে এই সংখ্যা বেড়ে পৌঁছেছে ৬২ লাখ ৭০ হাজারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অবশ্য বরাবরই দাবি করে আসছিল যে, সরকারি তথ্যের চেয়ে করোনায় মৃতের প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি।
সূত্র : ঢাকা পোস্ট