নিজস্ব প্রতিবেদক »
দিনভর ছিল কড়া রোদ। এমন আবহাওয়ার মধ্যেও সড়কের ওপর জমেছে পানি। এবার বৃষ্টি ছাড়াই ডুবলো নগরের ব্যস্ততম জিইসি মোড়। গতকাল রাত নয়টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সেখানে হাঁটুসমান পানি জমেছিল। এতে ভোগান্তির শিকার হয় পথচারী, ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দারা। নালার ব্লকেজে (প্রতিবন্ধকতা) বর্জ্য আটকে যাওয়ায় এমন পানি জমেছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
সরেজমিন শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকালে জিইসি মোড় সেন্ট্রাল প্লাজার বিপরীতে পুলিশবক্সের সামনে থেকে ইউনেস্কো শপিং কমপ্লেক্স পর্যন্ত হাঁটুসমান পানি দেখা যায়। পুলিশবক্সের সামনে চা-নাশতার দোকানগুলো খোলা থাকলেও আশপাশের দোকানগুলোতে বেচাকেনা বন্ধ ছিল। পানিতে গাড়ি আটকে যাচ্ছিল। সৃষ্টি হয় যানজট। ওই ময়লা পানি ডিঙিয়ে পার হতে হয় পথচারীদের। পানির দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে চারপাশে।
ভোগান্তি প্রসঙ্গে পুলিশ সদস্য মো. রমিজ উদ্দিন বলেন, ‘আমি সকাল থেকে এখানে দায়িত্ব পালন করছি। সকাল ৮টা থেকে নালার পানি চলাচল বন্ধ হয়ে আছে। দুপুরের দিকে পানি উপচে এসে ডুবিয়ে দেয় পুরো রাস্তা। বিকাল গড়াতে হাঁটুসমান পানি। চসিক থেকে কিছু লোক কাজ করছে। কিন্ত কোনো সুরাহা পাওয়া যায়নি। পানির কারণে গাড়ি আটকে যাচ্ছে। সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। পথচারীদের চরম ভোগান্তি হচ্ছে।’
মেয়েকে নিয়ে স্কুল থেকে ফিরছিলেন রোজিনা বেগম। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘শুনেছি নালায় ময়লা জমে যাওয়ায় পানি উঠেছে রাস্তায়। নিয়মিত নালা পরিষ্কার না করায় এমন ভোগান্তি দেখতে হচ্ছে। পানি থাকায় সেন্ট্রাল প্লাজা থেকে পুলিশবক্স পর্যন্ত আসতে হলো রিকশা চড়ে। অথচ প্রতিদিন এটা হেঁটেই যাতায়াত করি।’
কী কারণে পানি উঠেছে, এমন প্রশ্নে ১৫ নম্বর বাগমনিরাম ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. গিয়াস উদ্ধীন বলেন, ‘যখন ড্রেন বানানো হয় তখন শহরে এত লোকজন আর এত বর্জ্য ছিল না। এখন মার্কেট, বসতবাড়ি আর মানুষ বেড়েছে। একই সাথে ড্রেনের ওপর চাপ বেড়েছে। আমাদের পকেট লাইনে যেখানে এক সময় পানি জমতো এখন সেখানে বাড়িঘর উঠে গেছে। এছাড়া অপরিকল্পিতভাবে ওয়াসাসহ বিভিন্ন সংস্থা ও ব্যক্তিবিশেষ ড্রেন দিয়ে পাইপ টেনেছে। এসব পাইপে বর্জ্য জমে-জমে পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের লোক সেখানে কাজ করছেন। প্রকৌশল বিভাগকেও ডাকা হয়েছে। কিছু পাইপও কাটা হতে পারে। আমরা দ্রুত সমস্যা সমাধানে কাজ করছি।’
একই কথা বললেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকতা আবুল হাশেম। তিনি বলেন, ড্রেনে একটা ব্লকেজ (প্রতিবন্ধকতা) ধরা পড়েছে। সেখানে বর্জ্য জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। যে ব্লকেজটা চিহ্নিত করা হয়েছে তা আমরা কাটবো। একই সাথে পাম্প আনা হয়েছে। কেটে যদি পানি না কমে পাম্পআউট করবো। ঝুঁকি থাকায় রাতের বেলায় কাজ করা যাচ্ছে না। আশা করি, ঘন্টা দুয়েক পর সমস্যা থাকবে না।’
প্রসঙ্গটি নিয়ে কথা বলতে ফোনকল দেয়া হয় চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল্লাহকে। তবে তিনে কল রিসিভ করেননি।