পচা মাংস সংরক্ষণসহ চার অপরাধে বারকোড ফুড জাংশনকে ৪ লাখ টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। ৩০ আগস্ট বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বি এম মশিউর রহমানের নেতৃত্বে নগরীর মুরাদপুর এলাকায় বারকোড ফুড জাংশনে অভিযান পরিচালনা করে এই জরিমানা আদায় করা হয়।
চট্টগ্রাম জেলা ও মেট্রোপলিটন নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফারহান ইসলাম পত্রিকাকে বলেছেন, অভিযানে বারকোড ফুড জাংশনের রান্নাঘরে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্য দ্রব্য প্রক্রিয়াকরণ, পচা মাংস ফ্রিজে সংরক্ষণ, অনুমোদনহীন ঘি ব্যবহার, কাঁচা ও রান্না করা মাংস একত্রে সংরক্ষণসহ নানাবিধ অসঙ্গতি পরিলক্ষিত হওয়ায় নিরাপদ খাদ্য আইনে ৪ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
একইদিন ফুলকলিতেও অভিযান পরিচালিত হয়। নোংরা পরিবেশে খাবার তৈরি, লেভেলিং প্রবিধানমালা লংঘন, নি¤œমানের কাঁচামাল ব্যবহারসহ বিভিন্ন অপরাধের দায়ে ফুলকলিকে নিরাপদ খাদ্য আইনে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বাকলিয়ায় অবস্থিত এ কারখানায় অভিযান চালিয়ে বাইরে চকচকে প্যাকেটে মোড়ানো খাবার তৈরির উপদানে ভেজাল মেশানোর প্রমাণ পাওয়া যায়। মেয়াদ উত্তীর্ণ অবিক্রিত খাবার মার্কেট থেকে ফ্যাক্টরিতে ফেরত আসলে, তা তারিখ পরিবর্তন করে পুনরায় বাজারজাত করারও প্রমাণ পেয়েছে আদালত।
এই চিত্র দেখে আঁতকে ওঠার কিছু নেই। এরা আভিজাত্য বা ব্রান্ডিংয়ের আড়ালে মানুষকে দিনের পর দিন ঠকিয়ে যাচ্ছে। ভেজাল, বাসি ও মানহীন খাবার খাইয়ে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে। আসলে ফুটপাতের হোক আর নামকরা অভিজাত হোটেলই হোক সর্বত্র একই অবস্থা বিদ্যমান। বাইরে যতই চাকচিক্য থাকুক না কেন রান্নাঘর বা ফ্যাক্টরির অবস্থা সবারই এক। এটা জানা যায় তখনই যখন অভিযান পরিচালনা করা হয়। কিন্তু কথা হচ্ছে যতবার অভিযান চালানো হয় ততবারই যদি একই অবস্থা উঠে আসে তাহলে অভিযানের ফল কী পেলাম আমরা।
এর একটি ব্যাখ্যা আছে ক্যাবের সহসভাপতির কথায়। তিনি সংবাদপত্রকে বলেন, ‘কেবল জরিমানা নয়, খাদ্যে ভেজাল মেশানো প্রতিষ্ঠানগুলোকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করা জরুরি। আইনে জরিমানা ও জেল দুটোই আছে। ঝামেলা এড়ানোর জন্য জরিমানার বিধান বেশি প্রয়োগ হয়। কিন্তু তাতে অপরাধ প্রবণতা কমছে না। জরিমানার টাকা তাৎক্ষণিক পরিশোধ করা হলে পরোক্ষভাবে ভোক্তা ও কর্মচারীদের কাছ থেকে তা আদায় করে নেন মালিকরা। এক্ষেত্রে খাবারে ভেজাল মেশানো অপরাধকে ভয়াবহ বিবেচনায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রয়োগ করা উচিত। এমনকি ওসব প্রতিষ্ঠান সিলগালা করারও বিধান রয়েছে।’
সমস্যাটি হচ্ছে এখানে। শুধু অর্থদ- দিয়ে এই অপরাধকে থামানো যাবে না। এটা গুরু পাপে লঘু দ-ের মতো হচ্ছে। এই অপরাধ বন্ধ করতে হলে অপরাধীরা যাতে আর কখনো খাদ্যদ্রব্যের ব্যবসা করতে না পারে সে ব্যবস্থা নিতে হবে।
এ মুহূর্তের সংবাদ