নিজস্ব প্রতিবেদক »
মহান আল্লাহতায়ালা মানব জাতিকে ভালোবেসে সৃষ্টির মাঝে শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। ছৈয়্যদুল মুরসালিন (দ.) কে ধূলির ধরায় প্রেরণ করে সৃষ্টিকে পূর্ণতা দিয়েছেন। হেদায়তের মিশন নিয়ে প্রিয় নবী (দ.) পৃথিবীতে তশরীফ আনেন এবং খতমে নবুয়্যতের মাধ্যমে নবুয়্যতের ধারার পরিসমাপ্তি হয়। পরবর্তীতে হেদায়তের এ মহান মিশন বেলায়তের অধিকারী ব্যক্তিত্বদের দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। কালের পরিক্রমায় কাগতিয়ার পূণ্যভূমিতে আমরা পেয়েছি খলিলুল্লাহ আওলাদে মোস্তফা খলিফায়ে রাসুল হযরত শায়খ ছৈয়্যদ গাউছুল আজম (রাঃ) কে। যিনি নব্য জাহেলিয়ত যুগে এসে মানুষকে বিভ্রান্তি হতে সত্যের দিকে, অন্যায়ের অন্ধকার হতে ন্যায়ের আলোর দিকে, বেদ্বীনি সংস্কৃতির পরিবর্তে দ্বীনের সুশীতল ছায়াতলে সর্বোপরি সিরাতুল মোস্তাকিমের পথে নিয়ে এসেছেন। বর্তমান ফেতনা-ফ্যাসাদ, অপসংস্কৃতির যুগে এসেও নবীর নূরের সন্ধানে যুবকদের বাধভাঙ্গা জোয়ার দেখা যায় কাগতিয়া দরবার শরীফে।
গত ২ ডিসেম্বর শুক্রবার বাদে জুমা রাজধানী ঢাকার গুলিস্থানের কাজী বশির মিলনায়তন সম্মুখস্থ ময়দানে অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক এশায়াত সম্মেলনে উপস্থিত লাখো মুসলমানের উদ্দেশ্যে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কাগতিয়ার মোর্শেদে আজম এসব কথা বলেন।
চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট ও সিনেট সদস্য এবং মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশের সিনিয়র সহ-সভাপতি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবুল মনছুর এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এশায়াত সম্মেলনের উদ্বোধক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুক্ত বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক এম.পি। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ জমিয়তুল মোদার্রেছীন এর মহাসচিব হযরতুলহাজ্ব আল্লামা শাব্বির আহমদ মোমতাজী, সংগঠনের কানাডা শাখার সভাপতি মীর মুহাম্মদ কায়কোবাদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় গণিত বিভাগের প্রফেসর ড.জালাল আহমেদ, বাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গভর্নর ড. মাওলানা মুহাম্মদ কফিল উদ্দীন সরকার ছালেহী, নৌ-পুলিশ হেড কোয়ার্টারের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোতাজ্জের হোসেন পি.পি.এম প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, বিশ্বায়নের এ যুগে মানুষ যখন আধুনিকতার নামে বেহায়পনার দিকে নিশ্চিন্তে জীবন যাপন শুরু করে দিলো, দিশাহীন অবস্থায় খোদাকে ভুলে যাচ্ছিলো ঠিক তখনি গাউছিয়্যতের সোনালী সূর্যের উদয় হলো। দিশাহীন এ মানবজাতিকে হেদায়তের পথে ফিরাতে কাগতিয়ার মিনার হতে তিনি ঘোষণা দিলেন- “হে যুবক! নামাজ পড়ো, রোজা রাখো, নবী করিম (দ.) এঁর উপর দরূদ পড়ো, মাতৃভূমি শান্ত করো”। এ মহান ঘোষণা পৃথিবীর সর্বত্র ছড়িয়ে পড়লো। ফলে যুবকেরা নামাজ-রোজার আহবানে, দরূদে মোস্তফার নূরের টানে, ফয়েজে কোরআন, তাওয়াজ্জুহ, জিকিরুল্লাহর মুহাব্বতে পাড়ি জমাতে শুরু করলো কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফে। এ যুবকদের নিয়ে তিনি গঠন করলেন মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশ। যারা পারষ্পরিক হৃদ্যতা, সৎ কাজের আদেশ, অসৎ কাজের নিষেধ মেনে হেদায়তের পথে চলতে শুরু করলো।
তাওয়াজ্জুহর প্রভাবে এ যুবকদের মধ্যে মানবীয় দোষ-ত্রুটি দূরীভূত হয়ে উত্তম গুণাবলীর সমারোহ ঘটলো। ফলশ্রুতিতে এ সকল যুবকরা আধুনিকতার ছোবলে গা না ভাসিয়ে হেদায়তের পথে দ্বীন প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালনে অংশগ্রহন করলো। মাদক, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড হতে মুক্ত এসব যুবকেরা দেশ ও জাতির কল্যাণে অনন্য হয়ে উঠেছে। বর্তমানে খলিফায়ে রাসুল এর একমাত্র খলিফা মাননীয় মোর্শেদে আজম এ দায়িত্ব নিখুঁতভাবে পালন করছেন। তরিক্বতের যাবতীয় কাজ পরিচালনার পাশাপাশি মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটির মাধ্যমে সাধারণ মানুষদের আলোকিত মানুষ তৈরিতে কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফ ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করছেন। শিক্ষার প্রচার-প্রসারেও দেশে বিদেশে বহু প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। আত্মশুদ্ধির এ মহান দর্শন যদি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া যায় তবে অশান্ত পৃথিবী হবে নবী প্রেমের আলোতে শান্তিময়। হাহাকার আর হতাশা ভুলে সৃষ্টি পাবে স্রষ্টার সন্ধান, হেদায়তময় এহসান। এ দরবারের সকল কার্যক্রমে নিঃসন্দেহে আল্লাহ ও রাসুল (দ.) সন্তুষ্ট। সুশৃঙ্খল এবং নিখাদ নবী প্রেম নিয়ে আয়োজিত ঐতিহাসিক এশায়াত সম্মেলনের সফলতা তারই বাস্তব উদাহরণ।
সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশ, কেন্দ্রীয় এশায়াত পরিষদের সদস্য মাওলানা মোহাম্মদ কারিমুল মওলা, মোহাম্মদ রকিব উদ্দীন, মাওলানা মুহাম্মদ শফিউল আলম, মাওলানা মুহাম্মদ জসিম উদ্দিন নূরি, মাওলানা মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম।
এশায়াত সম্মেলন উপলক্ষ্যে প্রকাশিত ক্রোড়পত্রে মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সহ বিশিষ্টজনেরা বাণী প্রদান করায় প্রধান অতিথি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। সম্মেলন শেষে প্রধান অতিথি প্রিয় নবীজির উসিলায় এবং খলিফায়ে রাসুল (দ.) এর এখলাসের সাদকায় দেশ জাতির উন্নয়ন, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির জন্য বিশেষ মোনাজাত করেন।