সুপ্রভাত ডেস্ক :
ফুটবলকেই জীবনের অঙ্গ করে গড়ে তুলেছেন বিশ্বের প্রথম ভাসমান ফুটবল খেলার মাঠ। থাইল্যান্ডের অবস্থিত এটি একটি ছোট দ্বীপ। যেখানে নেই কোনো সমতলভূমি। চারিদিকে পানি আর ছোট ছোট চুনা পাথরের পাহাড়। আর এই পরিবেশে তৈরি করা হয়েছে ভাসমান এক গ্রাম। থাইল্যান্ডের দক্ষিণ অঞ্চলের অবস্থিত পানইয়ে দ্বীপ। এখানেই চারিদিকে থৈ থৈ পানি। ডুবো পাহাড় আর চারিদিকে পানিবৃষ্টিত এই দ্বীপের সৌন্দর্য যে কারো চোখ জুড়িয়ে যাবে।
এখানকার বাসিন্দারা মূলত মৎস্যজীবী। তাদের আয়ের মূল উৎস মাছ ধরা এবং পর্যটকদের সাহায্য করা। প্রতিদিন সকালে তাদের মাছের চালান চলে যায় নিকটবর্তী বাজারে। তারপর সেখান থেকেই সারা শহরে।
১৯৮৬ সালে ম্যারাডোনার সেই ঝড়ো ফুটবলের মুহূর্ত দেখে অনুপ্রাণীত ভাসমান এই গ্রামের যুবকেরা। তারা নেমে পড়েন ফুটবল খেলা শিখতে। যেহেতু তাদের সমতলভূমির অভাব রয়েছে এজন্য তারা পানির উপরেই খেলা শেখার বন্দোবস্ত করে।
কারণ পানইয়ে দ্বীপ মাঠ তৈরি করার মতো তেমন কোনো জমি নেই। তবে এই জমির অভাব তাদের জন্য বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। জমি যখন নেই তখন পানিতেই হবে ভাসমান মাঠ।
এমন ভাবনায় কিশোর-যুবকদের একটা দল নেমে পড়ে ভাসমান মাঠ তৈরি করতে। রক্তে ফুটবলের নেশা ছড়িয়ে পড়া সেই তরুণীর সব বাঁধা অতিক্রম করে তৈরি করেন বিশ্বের প্রথম ভাসমান ফুটবল খেলার মাঠ।
প্রথমে পুরনো কাঠ জোগাড় করা হয়। তারপর পানির মধ্যে খুঁটি পুঁতে তৈরি হয় মাচা। সেই মাচাতেই তৈরি হয় মাঠ। তখন সমস্যা ছিল প্রচুর আনাড়ি হাতে তৈরির কারণে পেরেকের খোঁচার আঘাতে অনেকেই আহত হন।
এইভাবে কেটে গেছে ৩০ বছরেরও বেশি সময়। তারপর পুরনো সেই কাঠের মাঠ ভেঙে ওই পানিতেই প্লাস্টিকের ড্রাম এবং রাবার ফোম ব্যবহার করে নতুন করে তৈরি করা হয়। সেখানেই ফুটবল নিয়ে বেড়ে ওঠা পানইয়ে ক্লাব এখন দক্ষিণ থাইল্যান্ডের অন্যতম সেরা ক্লাব হিসেবে বিবেচিত।
সম্প্রতি পানইয়ে ক্লাবের সন্ধান পায় একটি থাই ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। সংস্থার কর্মীদের উদ্দীপনা বাড়িয়ে তুলতে পানইয়ে দলের উপর একটি ছোট্ট সিনেমা তৈরি করা হয়। এরপর থেকে ছড়িয়ে পড়ে দ্বীপটি ও পানিতে ভাসমান ফুটবল মাঠের কথা।
এখানকার বাসিন্দাদের একটাই চাওয়া। যাকে দেখে তারা অনুপ্রাণিত হয়ে এই ভাসমান মাঠ তৈরি করেছেন। সেই ম্যারাডোনার পায়ের ধুলি যেন তাদের মাঠে পড়ে। খবর : ডেইলিবাংলাদেশ’র।
ফিচার দেউড়ি