ব্যাংক কর্মকর্তা মোরশেদ চৌধুরীর আত্মহনন
নিজস্ব প্রতিবেদক <<
ব্যাংক কর্মকর্তা আব্দুল মোরশেদ চৌধুরীর আত্মহত্যার ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছেন তার স্ত্রী ইশরাত জাহান। তিনি অভিযোগ করেছেন, তার স্বামীকে হামলা, হেনস্থা এবং ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়েও হুমকি দেওয়া হয়েছে। এসব হুমকি, ভয়ভীতি, নির্যাতন সইতে না পেরেই তিনি মৃত্যুর পথ বেছে নেন। গতকাল রোববার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন নিহতের স্ত্রী।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ইশরাত জাহান অভিযোগ উত্থাপন করে বলেন, ‘আসামিগণ একাধিকবার আমার স্বামীকে বিভিন্ন স্থানে আক্রমণ ছাড়াও তার অফিসে গিয়ে হেনস্থা করে। ফলে আমার স্বামী নিয়মিত অফিসও যেতে পারতেন না। পাওনা টাকার অতিরিক্ত পাওয়ার পরও জামানত হিসেবে প্রদত্ত চেকগুলো ফেরত না দিয়ে অত্যন্ত সুকৌশলে আপোষ ও আলোচনার কথা বলে ২০১৯ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর সৈয়দ সাকিব নাইম উদ্দিনের পাচঁলাইশ বাসায় অস্ত্রের মুখে মোট ৮৪ টি চেক জোরপূর্বক নিজের দখলে নেয় আসামিরা।’
নিহত মোরশেদ চৌধুরীর স্ত্রীর অভিযোগ, ‘জাবেদ ইকবাল ও পারভেজ ইকবাল তাদের পাওনা ১২ কোটি ৩০ লাখের স্থলে ১৮ কোটি ৮৯ লাখ ৯৯ হাজার টাকা গ্রহণ করে ২০১৮ সালের ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত। পরবর্তীতেও আরও অনেক টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে এবং নগদে গ্রহণ/আদায় করে, যার প্রমাণ রয়েছে। সৈয়দ সাকিব ১২ কোটি ৬০ লাখ ১৫ হাজার টাকা পাওনার স্থলে ১৮ কোটি ৮৯ লাখ ৯৯ হাজার টাকা আদায় করে ২০১৮ সালের ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত। যা ব্যাংক হিসাবে ও ভাউচারে প্রমাণ আছে।’
ইশরাত জাহান বলেন, ‘ওই তিন জনের নিকট আমাদের পরিবারের সকলের পাসপোর্টসহ ১০০ টাকা মূল্যমানের ৬ টি অলিখিত ও স্বাক্ষরিত নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প আছে। আত্মহত্যার আগের দিন তাদের ভাড়া করা সন্ত্রাসী কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা রাসেল পরিচয়ে ০১৭১১-৭৫০৪১৫ নম্বর হতে আমার স্বামীকে হুমকি প্রদান করেন।’
তিনি বলেন, ‘আমার একমাত্র মেয়ে ১২ বছর বয়সী জুম তার বাবাকে ছাড়া কখনো একা ছিল না। বাবার মৃত্যুতে আমার মেয়ের মুক্তির পথ হিসাবে আমরা উভয়ে আত্মহত্যা করে যেন বাবার সাথী হই এমন অবুঝ সিদ্ধান্তে জুম অসুস্থ হয়ে পড়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে পরিবারের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন নিহত আব্দুল মোরশেদ চৌধুরীর মা, বড় ভাই এবং তার কন্যা মোবাশ্বেরা জুম ।
উল্লেখ্য, গত ৭ এপ্রিল নিজ বাসায় ফ্যানের সাথে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন বেসরকারি একটি ব্যাংকের ব্র্যাঞ্চ ম্যানেজার আব্দুল মোরশেদ চৌধুরী। তিনি মৃত্যুর আগে আর্থিক দেনা ও মানসিক চাপ এবং হুমকির কথা লিখে যান চিরকুটে। এই ঘটনায় গত ৮ এপ্রিল দুপুরে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় যুবলীগ নেতা শহীদুল হক চৌধুরী রাসেলসহ আরো তিন জনের নামে পাঁচলাইশ থানায় মামলা দায়ের করেন নিহতের ভাই।