জলাবদ্ধতা নিরসনে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) একটি, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) দুটি ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি প্রকল্পের আওতায় ১১ হাজার ৩৪৪ কোটি টাকার কাজ চলছে গত ছয় বছরে ধরে। এরমধ্যে ৫ হাজার ৭৯০ কোটি টাকা খরচও হয়েছে। এরপরও সুফল পাচ্ছে না নগরবাসী। কখন পাবে তার নিশ্চয়তাও দিচ্ছে না কেউ। কারণ আগামী বছরের জুনে এসব প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা হচ্ছে না, মেয়াদ আরও বাড়ানো হবে বলে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন।
গত তিনদিনের বৃষ্টিতে অর্ধশতাধিক এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। কিছু কিছু এলাকা তো দিনের অর্ধেক সময় পানিতে ডুবে ছিল। এমনকি সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরীর বহদ্দারহাটে নিজের বাড়ির উঠান ও সামনের রাস্তাও ডুবে যায়। গত তিনদিন তিনি রিকশায় চড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এমন এলাকায় অনেকে দোকানপাট খুলতে পারেননি, অনেকে অফিসে যেতে পারেননি। বেশি বিড়ম্বনা পোহাতে হচ্ছে নারী-শিশু, বয়স্ক ও অসুস্থ লোকদের।
এই ভয়াবহ অবস্থা তৈরি হওয়ার জন্য সিটি করপোরেশন ও সিডিএ পরস্পরকে দায়ী করছে। এতে জলাবদ্ধতা নিরসনের কাজে যে কোনো সমন্বয় নেই তা প্রকট হয়ে উঠছে। সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী বলছেন, জলাবদ্ধতা কেন নিরসন হচ্ছে না, এটি ভালো বলতে পারবে সিডিএ। সিডিএ খালগুলো থেকে দৃশ্যত বাঁধ অপসারণ করলেও এখনো মাটি রয়ে গেছে। তাতে পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তারা জলকপাটগুলোর কাজও শেষ করতে পারেনি। অন্যদিকে সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলছেন, সিটি করপোরেশন ঠিকমতো নালা-নর্দমাগুলো পরিষ্কার করছে না। নতুন খালটি খনন করতে পারেনি। এ কারণে নগরের ড্রেনেজ ব্যবস্থা অকার্যকর হয়ে পড়েছে। ফলে জলাবদ্ধতা বেশি হচ্ছে। তবে সব প্রকল্পের কাজ শেষ হলে মানুষ সুফল পাবে।
চট্টগ্রাম নগরের জলাবদ্ধতা দীর্ঘদিনের পুরোনো সমস্যা। এ সমস্যা নিরসন না হওয়ার জন্য একসময় অর্থ বরাদ্দকে অন্যতম কারণ হিসেবে দায়ী করা হতো। কিন্তু এখন সে সমস্যা নেই। গত ছয় বছরে ৫ হাজার ৭৯০ কোটি টাকা খরচ হলেও চট্টগ্রাম নগরের জলাবদ্ধতা নিরসন তো হয়নি; বরং প্রকট হয়েছে। এখন নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। আবার বেশি সময় ধরে পানিও জমে থাকছে। তারা বলছেন, প্রকল্পের কাজ শেষ হলে মানুষ সুফল পাবে। আর ভুক্তভোগী মানুষ তাদের কাছে জানতে চাইছে, প্রকল্পের কাজ শেষ হবে কবে?
এ মুহূর্তের সংবাদ