মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কখনো নাগরিক সমাজের মানসিকতা পরিবর্তন ছাড়া সফল হতে পারে না। এ সময় পরিচ্ছন্ন শহর গড়তে জনগণকে দায়িত্ব নেয়ার আহ্বান জানিয়ে মেয়র বলেন, আমরা নিয়মিত খাল-ড্রেন পরিস্কার করছি কিন্তু বাসা বাড়ির আবর্জনা খাল-ড্রেনে ফেলে আবার তা ভরাট করছি। মেয়র ডোর টু ডোর কর্মীদের হাতে গৃহস্থালী বর্জ্য তুলে দেয়ার জন্য নগরবাসীর প্রতি অহ্বান জানান।
তিনি বলেন, এখন বৃষ্টির মৌসুম ফলে এডিস মশার প্রজনন ক্ষেত্র বাড়ছে বিশেষ করে বিভিন্ন জায়গায় জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে মশার ডিম পাড়া ও প্রজননের জন্য খুবই উপযুক্ত সময়। শীতের আগ পর্যন্ত ডেঙ্গুর প্রার্দুভাব থাকবে। আমরা সকলে জানি ডেঙ্গু জ্বর হয় এডিস মশার কারণে তাই মশাকে নিয়ন্ত্রণই হচ্ছে ডেঙ্গু প্রতিরোধ তথা তার প্রকোপ কমানোর প্রধান উপায়। মশার প্রজনক্ষেত্রে বা ডিম পাড়ার স্থান যাই বলিনা কেন এগুলোকে ধ্বংস করতে হবে। মশক নিধন কর্মীদের বাসা বাড়ি হাসপাতাল, অফিস আদালতের আনাচে-কানাচে ও জলাশয়ে, মশার ওষুধ ছিটানো এবং মশক নিধন কার্যক্রমের গতি বাড়ানোর জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন। মশক নিধন কাজে নিয়োজিতদের জন্য আলাদা পোষাক ও এই কার্যক্রমে বিশেষ দলের জন্য অন্য রংয়ের পোষাকের ব্যবস্থা, মশার ওষুধ ছিটানোর জন্য স্প্রে, ফগার মেশিন ও ওষুধ যথাযথভাবে সরবরাহ করা হবে বলে জানান তিনি।
তিনি নগরবাসীকে ডেঙ্গু জ¦রে আতঙ্কিত না হয়ে চিকিৎসকের পরার্মশ নেয়ার জন্য আহ্বান জানান।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে বাটালি হিলস্থ চসিক নগর ভবনের সম্মেলন কক্ষে বর্জ্য স্ট্যান্ডিং কমিটির সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এ কথা বলেন।
বর্জ্য স্ট্যন্ডিং কমিটির সভাপতি মো. মোবারক আলীর সভাপতিত্বে ও প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবুল হাশেমের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন কাউন্সিলর হাজী মো. নুরুল হক, আবদুল বারেক, হাসান মুরাদ বিপ্লব, মোহাম্মদ ইলিয়াছ, পরিচ্ছন্ন বিভাগের জোন প্রধানদের মধ্যে প্রণব শর্মা, হাসান রেজা, কল্লোল দাশ, আলী আকবর, মোহাম্মদ হাসান ও আবু তাহের প্রমুখ।
মেয়র আরো বলেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ভ্রাম্যমাণ আদালত ইতোমধ্যে নিমাণাধীন বিভিন্ন টাওয়ার ও ইমারত নির্মাণের জন্য তৈরিকৃত জলাধারে জমা পানি রাখার বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে। এ প্রসঙ্গে মেয়র আরো বলেন, যাদের বাড়ি বা আঙ্গিনায় এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে জরিমানাসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। ডেঙ্গু ও চিকনগুনিয়া প্রতিরোধে তিনি নগরবাসীকে দিনের বেলা মশারী টাঙিয়ে ঘুমানো, বাসা বাড়ির দরজা জানালা ও ভেন্টিলেটরে মশা নিরোধক নেট ব্যবহার, শিশুদের স্কুল ড্রেসের ফুলহাতা শার্ট, ফুল প্যান্ট, মোজা ব্যবহার, পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা ক্যান, টিনের কৌটা, মাটির পাত্র, বোতল, নারিকলের খোশা, ফুলের টপ, বালতি, ড্রাম, প্লাস্টিক ও সিমেন্টের ট্যাংক, কিংবা মাটির গর্তে ৩-৫ দিনের বেশি জমানো পানি না রাখায় এবং গাড়ি টায়ার, এসির নিচে, ফ্রিজের নিচে সামান্য পানি জমে থাকলেও তা পরিস্কার ও নিষ্কাশনের জন্য নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানান। ডেঙ্গু ও চিকনগুনিয়া প্রতিরোধে আগামী সাপ্তাহে নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডে একযোগে ক্র্যাশ প্রোগ্রাম পরিচালনা করা হবে। বিজ্ঞপ্তি