সুপ্রভাত ডেস্ক »
জাতীয় শোক দিবসে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার বেলা ১১টা ৫২ মিনিটে টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছে বঙ্গবন্ধুর সমাধি বেদীতে তিনি পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। স্বশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল এসময় সশস্ত্র সালাম জানায়। বিউগলে বাজানো হয় করুণ সুর। শ্রদ্ধা নিবেদনের পর প্রধানমন্ত্রী সমাধি বেদীর পাশে কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
এরপর ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্টে নিহত বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের জন্য বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন শেখ হাসিনা, সঙ্গে ছিলেন বোন শেখ রেহানা। বঙ্গবন্ধু সমাধিসৌধ কমপ্লেক্স জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা নওয়াব আলী এ মোনাজাত পরিচালনা করেন।
আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতাদের নিয়ে দলীয় সভাপতি হিসেবেও শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেন করেন। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে টুঙ্গিপাড়া বঙ্গবন্ধু ভবনে প্রবেশ করেন তিনি। খবর বিডিনিউজ।
এরপর জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধের বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান।
পরে গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন, জেলা প্রশাসন এবং বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন পুষ্পস্তবক করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। বঙ্গবন্ধু সমাধিসৌধ কমপ্লেক্সের পাবলিক প্লাজায় বিশেষ দোয়া মাহফিলের কর্মসূচি রয়েছে জেলা প্রশাসনের।
প্রধানমন্ত্রী দুপুরে ঢাকার উদ্দেশে টুঙ্গিপাড়া ছাড়ার পর সমাধিপ্রাঙ্গণ সবার জন্য খুলে দেওয়া হবে। ১৯৭৫ সালের এই দিনে সেনাবাহিনীর একদল কর্মকর্তা ও সৈনিকের হাতে সপরিবারে জীবন দিতে হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের নায়ক, তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। সেই রাতে ঘাতকরা বঙ্গবন্ধু ছাড়াও তার স্ত্রী বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব, তিন ছেলে শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ রাসেল, শেখ কামালের স্ত্রী সুলতানা কামাল, শেখ জামালের স্ত্রী রোজী জামাল, বঙ্গবন্ধুর ছোট ভাই শেখ নাসেরকে হত্যা করে। নিহত হন বঙ্গবন্ধুর বোনের স্বামী আবদুর রব সেরনিয়াবাত, তার ছেলে আরিফ, মেয়ে বেবী ও শিশুপুত্র সুকান্ত বাবু; বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে যুবনেতা শেখ ফজলুল হক মণি, তার অন্তঃসত্ত¡া স্ত্রী আরজু মণি, নিকট আত্মীয় শহীদ সেরনিয়াবাত ও রিন্টু।
ধানমণ্ডির বাড়িতে পুলিশের বিশেষ শাখার সাব ইন্সপেক্টর সিদ্দিকুর রহমান ও নিরাপত্তা কর্মকর্তা কর্নেল জামিলকেও গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয়। বঙ্গবন্ধুর দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা দেশের বাইরে থাকায় সে সময় প্রাণে বেঁচে যান।
বঙ্গবন্ধুকে জন্মস্থান গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় দাফন করা হলেও পরিবারের অন্য সদস্যদের ঢাকার বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়।