‘চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। নাগরিক সেবার মান কিভাবে বৃদ্ধি করা যায় সেদিকে সবসময় গুরুত্ব দিতে হবে। নাগরিকদের জীবন মান কতটুকু উন্নত করা গেল কাউন্সিলরদের জনপ্রতিনিধি হিসেবে সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে একটি পরিবেশবান্ধব স্মার্ট সিটিতে পরিণত করাই হবে এই পরিষদের মূল লক্ষ্য।’
গতকাল বৃহস্পতিবার নগরীর আন্দরকিল্লাস্থ পুরাতন নগর ভবনের কে বি আবদুচ ছত্তার মিলনায়তনে চসিক ষষ্ঠ পরিষদের ১৫তম সাধারণ সভায় সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী এ কথা বলেন।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলমের সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন প্যানেল মেয়র আব্দুস সবুর লিটন, মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, সচিব খালেদ মাহমুদসহ অন্য কাউন্সিলর, বিভাগীয় ও শাখা প্রধানগণ।
মেয়র আরো বলেন, নগরীর প্রধান সমস্যা জলাবদ্ধতা হলেও জনগণের প্রধান ভোগান্তি এখন মশার উৎপাত। এই বিষয়টিকে চিহ্নিত করে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ইতোমধ্যে মশক নিধনের জন্য আলাদা শাখা এবং একজন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব প্রদান করেছে। এ শাখাটি সম্পূর্ণ মশক নিধন কাজে নিয়োজিত থাকবে। মশার ওষুধ প্রয়োগ করা, মশক প্রজনন ক্ষেত্রসমূহ ধ্বংস করা এবং ঝোপ পরিষ্কার করাই হবে এ শাখার মুখ্য কাজ। পরিচ্ছন্ন বিভাগের অন্য কোন সংশ্লিষ্ট কাজে তাদের ব্যবহার করা যাবে না।
তিনি নগরীর পরিচ্ছন্নতার উপর অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, ডোর টু ডোরে যেসব সেবক কাজ করে তাদের ওয়ার্ড অনুযায়ী তালিকা আগামী সাধারণ সভার আগে উপস্থাপন করতে হবে। এদের মধ্যে কেউ কাজ না করে বেতন গ্রহণের যে অভিযোগ আছে তা প্রমাণিত হলে তাদের চাকরিচ্যুত করা হবে বলেও জানান।
নগরীর আলোকায়ন প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, আসন্ন রমজানের ঈদের আগে নগরীর সড়ক বাতির পোস্টগুলোতে কোন-কোনটিতে বাতি না জ্বললে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে স্বাবলম্বী করার উপর গুরুত্ব দিয়ে বলেন, সিটি করপোরেশনের যে সকল খাত থেকে আইনগত কর, টোল আদায় করার সুযোগ আছে সেই সুযোগ কাজে লাগানো এবং চসিকের যে সম্পত্তিগুলো অব্যবহৃত আছে তা ডেভেলপারদের দিয়ে উন্নয়ন করার আইনগত কোনো সুযোগ আছে কিনা তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ প্রদান করেন।
মেয়র যান্ত্রিক শাখার যে গাড়িগুলো অকেজো আছে সে গাড়িগুলো নিলামে বিক্রি করাসহ মেরামতযোগ্য গাড়িগুলো দ্রুত মেরামতের জন্য পদক্ষেপ নেয়ার উপর গুরুত্বারোপ করেন। চট্টগ্রাম নগরীর উন্নয়নে ২৪৯৫ কোটি টাকার সড়ক উন্নয়ন, ব্রিজ ও কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্প এবং বারইপাড়া খাল খনন প্রকল্পের ১৩৭০ কোটি টাকা কোন ম্যাচিং ব্যতিরেকে অনুমোদন প্রদান করায় সাধারণ সভায় প্রধানমন্ত্রী ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রীকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
এ প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে চসিকের কাউন্সিলর এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগকে দায়িত্ব নিয়ে আন্তরিকভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।
তিনি আরো জানান, ১৫ থেকে ২১ জুনের মধ্যে যে জনশুমারি হবে তাতে কাউন্সিলরদের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে সঠিক তথ্য ও উপাত্ত সংগ্রহের জন্য পরিসংখ্যান বিভাগকে সহযোগিতার আহ্বান জানান। মেয়র নগরীর ৪১টি ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের তত্ত্বাবধানে একটি করে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়ে বলেন, মুসল্লীরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদ জামাতে নির্বিঘ্নে অংশগ্রহণ করতে পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। মেয়র চট্টগ্রাম নগরীতে বিদ্যমান সকল সেবাসংস্থাকে তাদের কাজের সমন্বয়ের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। বিজ্ঞপ্তি