সুপ্রভাত ডেস্ক »
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণকে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হবার পরামর্শ দিয়ে বিদ্যুৎ খাতে তাঁর সরকারের দেয়া ভর্তুকির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করার আহবান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘বিদুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হলে আরো বেশি সংখ্যক জনগণকে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনার মাধ্যমে গ্রাম ও শহরের বৈষম্য আরো কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।
একইসঙ্গে সরকারের উন্নয়নের গতিধারা অব্যাহত রাখার জন্য অশুভ কোন শক্তি যাতে এদেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে দেশকে যেন আবার সেই দাসত্বের শৃঙ্খলে আবদ্ধ করে পিছিয়ে দিতে না পারে সে ব্যাপারেও দেশবাসীকে সতর্ক করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে ৭৭৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঁচটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র উদ্বোধনকালে একথা বলেন।
তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিদ্যুৎ ভবনে বিদ্যুৎ বিভাগ আয়োজিত মূল অনুষ্ঠানে সংযুক্ত হয়ে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন। এই সময় সংশ্লিষ্ট বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোও ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত ছিল।
বিদ্যুৎ কেন্দ্র পাঁচটি হচ্ছে- হবিগঞ্জের জুলদায় বিবিয়ানা-৩ ৪০০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্র, চট্টগ্রাম ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র ইউনিট-২, নারায়ণগঞ্জে মেঘনাঘাট ১০৪ মেগাওয়াট পাওয়ার প্লান্ট, বাগেরহাটে মধুমতি ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং সিলেটের ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ১৫০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উত্তরণ।
বর্তমানে বিদ্যুৎ গ্রাহক ৪ কোটি ৯ লক্ষ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ার ফলে গ্রাম পর্যায়েও তাঁর সরকার নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দিতে পারায় গ্রামীন জনগোষ্ঠীর নাগরিক সুবিধা অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। যেটা আমাদের সংবিধানে নির্দেশ করেছে এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিল। মানুষের মাঝে বৈষম্য কমিয়ে আনাই ছিল সেই স্বপ্ন, এই সুযোগ তাঁর সরকার সৃষ্টি করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদ্যুৎ যারা ব্যবহার করেন তাদেরকে সাশ্রয়ী হতে হবে। কারণ আমরা যে বিদ্যুৎ উৎপাদন করছি তার খরচ কিন্তু অনেক বেশি। কিন্তু আমরা গ্রাহকদের সেবা নিশ্চিত করার জন্য সেখানে ব্যাপকহারে ভর্তুকি দিচ্ছি। উৎপাদনের যে খরচ সেটা কিন্তু বিদ্যুৎ বিল হিসেবে আপনাদের দিতে হচ্ছেনা।
তিনি বলেন, অনেক কম টাকা বিল নেয়া হয়। সেক্ষেত্রে সকলকে একটু অনুরোধ করবো বিদ্যুৎ ব্যবহারে আপনারা সচেতন হবেন। যখন লাগবেনা নিজের হাতেই নিজের ঘরে বিদ্যুতের সুইচগুলো বন্ধ করে রাখবেন। তাতে বিলটাও কম আসবে, আপনাকেও টাকা কম দিতে হবে। আর আমাদের বিদ্যুৎও সাশ্রয় হবে। এ বিষয় একটু নজর দিতে আমি সবাইকে অনুরোধ করবো।
আগামীতে দেশে বিদ্যুৎ চালিত মেট্রোরেল চালু হবে, পর্যায়ক্রমিকভাবে ভবিষ্যতে বিদ্যুৎ চালিত যানবাহনের ব্যবস্থা সরকার করবে, বিদ্যুৎ চালিত গাড়ি উৎপাদন হবে দেশে, রেল খাতটাকে ধীরে ধীরে বিদ্যুৎ চালিত খাতে নিয়ে আসা সহ এরকম ভবিষ্যতের বহুপরিকল্পনা তাঁর সরকারের রয়েছে।
তিনি বলেন,‘কাজেই বিদ্যুৎ সবসময় আমাদের লাগবে। অতীতের ৩ হাজার ২শ’ মেগাওয়াট থেকে বর্তমানে আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা বেড়ে দৈনিক ২৫ হাজার ২৩৫ মেগাওয়াট হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ ও জ্বালানী উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী বীর বিক্রম, বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, বিদ্যুৎ সচিব মো. হাবিবুর রহমান অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
অনুষ্ঠানে নবনির্মিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর ওপর একটি ভিডিও চিত্র প্রদর্শিত হয়।
সূত্র : বাসস