চট্টগ্রামে প্রিপেইড মিটারে অনীহা কার

চট্টগ্রামে ২০২৪ সালের মধ্যেই এক লাখ আবাসিক গ্রাহক পাচ্ছেন গ্যাসের প্রিপেইড মিটার। ইতিমধ্যেই মিটার বসানো শুরু করেছে চট্টগ্রামে গ্যাস বিতরণকারী সংস্থা কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল)। এখন পর্যন্ত ১ হাজার ১০০টি মিটার বসানো সম্পন্ন হয়েছে। তবে নানা জটিলতার কারণে পিছিয়ে যায় এ প্রকল্পের বাস্তবায়ন। এতে প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ২৯১ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত সময়ও বেড়েছে।
চট্টগ্রামে আবাসিক গ্রাহকের সংখ্যা ৫ লাখ ৯৭ হাজার ৫৬১ জন। প্রথম ধাপে জাইকার অর্থায়নে প্রাকৃতিক গ্যাস দক্ষতা প্রকল্পের মাধ্যমে মোট ৬০ হাজার গ্রাহককে প্রিপেইড মিটারের আওতায় আনা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল) ২৯১ কোটি টাকা ব্যয়ে শহর ও জেলার বিভিন্ন উপজেলায় আরও এক লাখ আবাসিক গ্রাহকের জন্য প্রিপেইড মিটার স্থাপন করছে। প্রথম পর্যায়ে জাইকার অর্থায়নে প্রাকৃতিক গ্যাস দক্ষতা প্রকল্পের মাধ্যমে মোট ৬০ হাজার গ্রাহককে প্রিপেইড মিটারের আওতায় আনা হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে চট্টগ্রামে এক লাখ প্রিপেইড মিটার স্থাপনের জন্য ২০২১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর জাপানি কোম্পানি টয়োকিকি কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (কেজিডিসিএল) উপমহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো: নাহিদ আলম বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত ১ হাজার ১০০টি মিটার বসানো সম্পন্ন হয়েছে। চট্টগ্রামে দ্বিতীয় দফায় আবাসিকে গ্যাসের মিটার লাগানোর কাজ গত ১৬ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে। এ প্রকল্পের মেয়াদ আছে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত বাড়লেও আমরা ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এক লাখ মিটার লাগানোর কাজ সম্পন্ন করবো। প্রিপেইড মিটারের প্রথম চালান জাপান থেকে দেশে এসেছে। কেজিডিসিএল সূত্র জানায়, গত ২০১৫ সালে হাতে নেওয়া এই প্রকল্পের কাজ শেষ হয় ২০১৯ সালে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে গ্যাস সাশ্রয়সহ গ্রাহক ভোগান্তি কমে আসায় প্রিপেইড মিটার স্থাপনে দ্বিতীয় ধাপে নতুন এ প্রকল্প হাতে নেয় কেজিডিসিএল কর্তৃপক্ষ।
‘আবাসিক গ্রাহকদের জন্য প্রিপেইড মিটার স্থাপন প্রকল্প’ শিরোনামে ২০২১-এর ফেব্রুয়ারিতে এক লাখ মিটার স্থাপনের জন্য দ্বিতীয় ধাপে প্রকল্প হাতে নেয় কেজিডিসিএল। প্রাথমিক পর্যায়ে এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয় ২৪১ কোটি ৬১ লাখ টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে প্রথমে মেয়াদ ধরা হয়েছিল ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত।
কেজিডিসিএল-এর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে গ্রাহকদের মধ্যে প্রিপেইড মিটার বসানোর ব্যাপারে আগ্রহ কম। এ বিষয়ে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন সুপ্রভাতকে বলেন, ‘প্রিপেইড মিটার স্থাপন করলে রাষ্ট্রের গ্যাস অপচয় বন্ধ হবে। পাশাপাশি ভোক্তাদের গ্যাস বাবদ ব্যয় কমে যাবে। তাই এ প্রকল্পটি প্রশংসনীয়। কিন্তু কেজিডিসিএলের গ্রাহকদের প্রিপেইড মিটার বসাতে আগ্রহ কম থাকার অন্যতম কারণ হলো- তারা গ্রাহকদের সচেতনতা সৃষ্টিতে খুবই কম প্রচার-প্রচারণা করায় মানুষের মধ্যে সচেতনতার অভাব রয়েছে। এছাড়া আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো- লাইনে কাজ করতে বাড়তি একটা খরচ হচ্ছে। সবাই এ মুহূর্তে এককালীন খরচটা করতে আগ্রহী হচ্ছে না। আমার মনে হয়, জনসচেতনতা সৃষ্টি ও লাইনের কাজে ব্যয় ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কেজিডিসিএল যদি কোনো উদ্যোগ নেয়, তাহলে গ্রাহকরা আগ্রহী হবে।’
আমরা আশা করব, গ্যাসের অপচয় ও এ ক্ষেত্রে দুর্নীতি কমাতে প্রিপেইড সিস্টেম একটি কার্যকর পন্থা কাজেই এটি যত দ্রুত সম্পন্ন করা যাবে ততই দেশ লাভবান হবে।