নিজস্ব প্রতিবেদক »
গত চব্বিশ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে নতুন করে ৯২ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। নগরীর বিভিন্ন হাসপাতালে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন ইদ্রিস মিয়া (৫৫), সানজিদা আক্তার (৩৪) এবং সিতারা জাহান (৫৩)। ইদ্রিস এবং সানজিদা ১৩ আগস্ট মারা যান। সিতারা জাহান (৫৩) ২৯ জুলাইয় চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। গতকাল সোমবার চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন থেকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য দেওয়া হয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারিতে ৭৭ জন , ফেব্রুয়ারিতে ২২ জন, মার্চে ১২ জন, এপ্রিলে ১৮ , মে ৫৩, জুনে ২৮৩ জন, জুলাইয়ে ২ হাজার ৩১১ জন এবং আগস্টে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৩৬৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩৬ জন। তারমধ্যে পুরুষ ৯, নারী ১২ এবং শিশু ১৫ জন রয়েছেন।
এদিকে চট্টগ্রামে সপ্তাহখানেক টানা বৃষ্টির পর গতকাল রোদের দেখা মিলেছে। আপাতত ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই বলে দাবি করেছেন আবহাওয়া কর্মকর্তারা। টানা বৃষ্টির ফলে ড্রেন ও টবে জমে রয়েছে পানি। সে পানি দ্রুত পরিষ্কার করা না হলে ডেঙ্গুর প্রকোপ জটিল রূপ ধারণের সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন কীটতত্ববিদরা।
চট্টগ্রাম জেলা সার্জন কার্যালয়ের কীটতত্ত্ববিদ এনতেজার ফেরদৌস বলেন ‘টানা বৃষ্টিতে মশার বংশবৃদ্ধি প্রাকৃতিকভাবে কমে যায়। কারণ যে পানিতে ডিম পারে সে জায়গাটি বৃষ্টিতে তলিয়ে যায়। শুধু তাই নয় প্রাপ্তবষয়ষ্ক মশাগুলোও মরে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। টানা বৃষ্টিতে তারা বের হতে পারে না। যদি বেরও হয় উড়তে গেলেই ডানা ভিজে ভেঙে পড়ে যায়। তবে বৃষ্টি থেমে যাওয়ার পর টবে, ড্রেনে এবং পলিথিনসহ বিভিন্ন জায়গায় পানি জমতে পারে। সে জায়গায় এডিস মশা ডিম পারতে পারে। ডিম পারার কয়েকদিন পর বাচ্চার জন্ম নেয়। তাই এখনই নিয়মিত ওষুধ ছিটাতে হবে। পানি জমে থাকলে দ্রুত পরিষ্কার করতে হবে।
ড্রেন পরিষ্কারের দাবি জানিয়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মশক নিধন ও ম্যালেরিয়া কর্মকর্তা শরফুল ইসলাম মাহি বলেন, বৃষ্টি থেমে যাওয়ায় বিভিন্ন জায়গায় পানি জমে রয়েছে। সবচেয়ে জলাবদ্ধতা হয়েছে এমন ১৫টি ওয়ার্ড বেছে নেওয়া হয়েছে। কারণ সেখানে বেশি পরিমাণে পানি জমতে থাকতে পারে ড্রেনে। নির্বাচিত ওয়ার্ডগুলো হলো চান্দগাঁও, মোহরা, পূর্ব ষোলশহর, পশ্চিম ষোলশহর, শুলকবহর, চকবাজার, পশ্চিম বাকলিয়া, পূর্ব বাকলিয়া, দক্ষিণ বাকলিয়া, উত্তর হালিশহর, উত্তর আগ্রাবাদ, রামপুর, দক্ষিণ মধ্যম হালিশহরসহ বেশ কয়েকটি ওয়ার্ড। এসব এলাকায় গত তিনদিন ধরে পরিষ্কারে অভিযান চলমান রয়েছে। অতিরিক্ত লোকবল নিয়ে আমরা পরিষ্কারের কাজ চালিয়ে নিচ্ছি। সেই সাথে রয়েছে ৬ টি বিশেষ দল যারা সেই সব ওয়ার্ডে ড্রেন পরিষ্কার কাজে পারদর্শী। আশা করি দ্রত কাজ শেষ হবে।