নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রবাসীদের টার্গেট করে ছিনতাই, সিএনজি অটোরিকশা চুরি ও আন্তঃজেলা বাসে ডাকাতির সাথে এক চক্রের ১১ সদস্যকে গ্রেফতার করেছেন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব ৭)।
জানা যায়, বিমানবন্দরের ভেতরে অবস্থান নিয়ে বিদেশ ফেরত যাত্রীদের টার্গেট করে তাদের গাড়িবহরের পিছু নিতো সংঘবদ্ধ ১০ থেকে ১২ জন ছিনতাইকারী। পরে সুযোগ বুঝে নির্জন স্থানে প্রবাসীদেরকে বহনকারী গাড়িটির গতিরোধ করা হতো। এরপর সেখানে অবস্থান করা চক্রটির আরো কয়েকজন সদস্যসহ দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে প্রবাসীদের ল্যাগেজ, দামি মোবাইল ও টাকা পয়সা লুট করে নিত। এ ছাড়া চক্রটি প্রবাসী ব্যক্তিদের পাসপোর্ট ছিনিয়ে নিয়ে পরে ব্ল্যাকমেইল করে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে পাসপোর্ট ফেরত দেয়। তেমনি একটা চক্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়ে শনিবার রাত থেকে গতকাল রোববার সকাল পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে নগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে আন্তঃজেলা বাস ডাকাতি, ছিনতাই, সিএনজি অটোরিকশা চুরি ও প্রবাসীদের টার্গেট করে সর্বস্ব লুটকারী চক্রের ১১ সদস্যকে গ্রেফতার করেছেন র্যাব। গতকাল রোববার দুপুর র্যাবের গণমাধ্যম শাখা থেকে প্রেরিত এক বার্তায় এসব তথ্য জানায় র্যাব ৭।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মো. ইমরান হাসান (২৭), মো. রুবেল (৩১), মো. শফি ওরফে মিজাইন্না চোরা (২৯), জাহাঙ্গীর আলম সোহাগ (২৮), মো. মোয়াজ্জেম হোসেন (৩৪), ইয়াছিন আরাফাত মিনার (২৫), মো. জমির (৪৫), মো. সৈকত (২২), হাবিবুল কিবরিয়া ওরফে আরমান (২২), কিল্টন দে (২৯) ও মো. কায়সার হামিদ। গ্রেফতারকৃত প্রথম আট ছিনতাইকারীর বিরুদ্ধে নগরী ও রাঙামাটি জেলার বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।
র্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়, আটকরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, চক্রটির ৩/৪ জন বিমানবন্দরের ভেতরে অবস্থান করে এবং বাকি সদস্যরা বাইরে অপেক্ষারত থাকে। বিমানবন্দরের ভেতরে থাকা সদস্যগণ বিদেশ থেকে আগত প্রবাসীদের টার্গেট করে। প্রবাসীরা যখন বিমানবন্দর থেকে বের হয়ে গাড়িযোগে যাওয়ার জন্য রওনা দেয় তখন বিমানবন্দরের ভেতরে থাকা সদস্যদের তথ্য অনুযায়ী বাইরে অপেক্ষারত ছিনতাই চক্রের অন্য সদস্যরা পথিমধ্যে প্রবাসীদের দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে লাগেজসহ সর্বস্ব কেড়ে নেয়। তারা এ ধরনের ছিনতাই ছাড়াও সিএনজি অটোরিকশা টার্গেট করত। সিএনজি ড্রাইভারকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আহত করে সিএনজি ছিনতাই করে চলে যেতো। পরে এগুলো তাদের নির্দিষ্ট গোপন একটি স্থানে নিয়ে নম্বর প্লেট, চেসিস নম্বর ও সিএনজির রং পরিবর্তন কাভার্ডভ্যানের মাধ্যমে ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা এবং বগুড়ায় পাঠিয়ে দিত।
এছাড়া ওই চক্র রমজান মাস এবং ঈদুল ফিতর উপলক্ষে জঙ্গল সলিমপুরসহ বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী বাসসমূহের সাধারণ যাত্রী এবং ড্রাইভারদেরকে দেশীয় ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে জিম্মি করে মূল্যবান জিনিসপত্র, স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা-পয়সা ছিনতাই করত।
র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম) মো. নূরুল আবছার জানান, আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদের চক্রের সদস্যরা ডাকাত ও ছিনতাই কাজে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছে। আসামিদের বিরুদ্ধে নগরী ও বিভিন্ন উপজেলায় চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইসহ কয়েকটি মামলা রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট থানায় পাঠানো হয়েছে।