গণমাধ্যম সম্মিলনের আয়োজন প্রাণবন্ত

অমর একুশে বইমেলার ১১তম দিন

হুমাইরা তাজরিন

অমর একুশে বইমেলার এগারোতম দিন বেশ জমে উঠেছে। এদিন বইমেলায় গণমাধ্যম সম্মিলনের আয়োজন ছিলো প্রাণবন্ত।

মেলায় ঘুরতে আসা মহিউদ্দিন মনির নামের এক দর্শনার্থী বলেন, ‘এবারের বইমেলা আমার কাছে কমপ্লিট প্যাকেজ মনে হচ্ছে। যেখানে শিল্প-সাহিত্য দুটো বিষয়ই সমানভাবে উদযাপিত হচ্ছে। যার যেখানে ভালো লাগে সেখানে বসে উপভোগ করছেন। প্রতিদিনের সাংস্কৃতিক আযোজনও বেশ সমৃদ্ধ। ভালো ভালো শিল্পীরা এতে অংশ নিচ্ছেন। শিশুদের খেলার জন্য আলাদা ব্যবস্থা আছে। তবে কাগজের দাম বাড়াতে অতীতের তুলনায় বইয়ের দামটা বেড়েছে। সেই অর্থে বই কেনা হচ্ছে না।’

গতকাল ১৯ ফেব্রুয়ারি ছিলো বইমেলার এগারোতম দিন। শিরীষতলায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এক প্রান্তে গণমাধ্যমের বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত হয়েছেন সম্মিলনে। তাঁদের জ্ঞানগর্ভ আলোচনা মনোযোগ দিয়ে শুনছেন সবাই। অন্যদিকে রয়েছে বইয়ের পসরা। চলছে বই বিকিকিনি।

গতকালের আয়োজনে ছিলো ‘গণমাধ্যম সম্মিলন’। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন দৈনিক আজাদীর সম্পাদক এম এ মালেক। বিশেষ অতিথি ছিলেন সাংবাদিক আবু সুফিয়ান। সভাপতিত্ব করেন সুপ্রভাত বাংলাদেশের সম্পাদক রুশো মাহমুদ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে দৈনিক আজাদীর সম্পাদক এম. এ মালেক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রয়োজন স্মার্ট নাগরিক। আর স্মার্ট নাগরিক হতে হলে আমাদের বেশি বই পড়তে হবে। তিনি বলেন, গণমাধ্যম হচ্ছে সত্যের ধারক ও বাহক। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গণমাধ্যমকর্মীরা বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ সংগ্রহ ও পরিবেশন করেন। বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মহান মুক্তিযুদ্ধসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনে গণমাধ্যমের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন, ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি বাংলা ভাষার দাবিতে আন্দোলন করতে গিয়ে ঢাকার রাজপথ যখন শহীদদের রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল তখন দৈনিক আজাদীতে কবি মাহবুবুল আলম চৌধুরীর ‘কাঁদতে আসিনি ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি’ কবিতা প্রকাশ করে তৎকালীন পাকিস্তানি স্বৈরাচারী সরকারের নির্যাতনের স্বীকার হয়। তিনি বলেন, গণমাধ্যম সমাজ ও রাষ্ট্রের ভালো-মন্দ তুলে ধরে যেমন সমালোচনা ও জবাবদিহিতার পরিবেশ তৈরি করে ঠিক তেমনি ইতিহাস ও ঐতিহ্য বিশ্বব্যাপী প্রচার ও প্রকাশ করে থাকে।

আলোচনাসভা শেষে শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। রুমিলা বড়ুয়ার সঞ্চালনায় অংশ নেয় রেওয়াজ সঙ্গীত নিকেতন, মাধুরি নৃত্যকলা একাডেমি, নৃত্য নিকেতন, জলি মুখার্জি, শুক্লা পাল কণিকা, রিমি সিনহা ও মুন্নী আকতার।

ধারাবাহিক আয়োজনে আজ ‘চাটগাঁইয়া উৎসব’ অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. ইফতেখার উদ্দীন চৌধুরী।
এদিন মেলায় এসেছে বেশ কয়েকটি বই। চন্দ্রবিন্দু প্রকাশনীর থেকে খন্দকার সাখাওয়াত আলী রচিত ‘কুসুমিত ইস্পাত: আমার কমরেড শাহিদ আনোয়ার’।

খড়িমাটি প্রকাশনীর মোকাদ্দেম মোরশেদ রচিত ‘নাটকের বই’। আপন আলো প্রকাশনীর ফরিদা বেগম রচিত ‘নতুন বইয়ের পাতা’।