সুপ্রভাত ডেস্ক »
সাম্প্রতিক সময়ে মাথাব্যথার কারণ হয়ে ওঠা কিশোর গ্যাংগুলোর পেছনে যাদের মদদ রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর দেওয়ানজি পুকুর লেনের ওয়াইএনটি সেন্টারে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা জানান।
চট্টগ্রামে কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতা বৃদ্ধি এবং কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় বুধবার এক চিকিৎসকের মৃত্যুর ঘটনার বিষয়টি উল্লেখ করে সাংবাদিকরা চট্টগ্রামের সন্তান হিসেবে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য জানতে চান। খবর বিডিনিউজের।
জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, “গত মন্ত্রিসভার মিটিংয়ে অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় কিশোর গ্যাং নিয়ে কথা হয়েছে। তাদের ব্যাপারে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যাতে যথাযথ পদক্ষেপ নেয় সে ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন।”
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, “কিশোর গ্যাং এর সদস্যদের গ্রেপ্তারের পর জেলে না রেখে সংশোধনাগারে পাঠানোর পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। কারণ, সাধারণ জেলে যদি তাদেরকে পাঠানো হয় সেখানে থাকা অন্যান্য সন্ত্রাসীদের সাথে যুক্ত হয়ে তারা আরো ভয়ংকর সন্ত্রাসী হয়ে উঠতে পারে।
“দেশে এটি নতুন সমস্যা, এটিকে দূরীভুত করার জন্য সরকার কাজ করছে। কিশোর গ্যাংয়ের নেপথ্যে যেই থাকুক, সে যে দলেরই হোক তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং হচ্ছে।”
সন্তানকে বাঁচাতে গিয়ে কিশোর দলের মারধরের শিকার হয়ে হাসপাতালের আইসিইউতে থাকা দাঁতের চিকিৎসক কোরবান আলী বুধবার সকালে মারা যান।
নগরীর আকবর শাহ থানার ফিরোজশাহ কলোনি ঈদগাঁও মাঠ সংলগ্ন জে লাইনে গত ৫ এপ্রিল ‘কিশোর গ্যাংয়ের’ হামলার মুখে পড়েছিলেন কোরবান আলীর ছেলে আলী রেজা।
ছেলেকে মারধর করতে দেখে বাঁচাতে গিয়ে নিজেও হামলার শিকার হন কোরবান আলী। তার মাথায় পাথর দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল বলে জানিয়েছিলেন আলী রেজা।
নাবিকদের নিয়ে ‘উদ্বেগ নেই’
সোমালিয়ার জলদস্যুদের কাছে আটক জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ ও নাবিকদের কখন উদ্ধার করা সম্ভব হবে- এমন প্রশ্নের হাছান মাহমুদ বলেন, “জলদস্যুদের হাত থেকে নাবিক এবং জাহাজ দুটোই উদ্ধার করার ক্ষেত্রে অল্প সময়ের মধ্যে অনেক অগ্রগতি হয়েছে, আশা করছি শিগগির তাদেরকে মুক্ত করতে পারব। তবে উদ্ধারের দিনক্ষণ বলাটা কঠিন।
“আমরা নাবিকদের পরিবারকে আশ্বস্ত করতে চাই, সরকার সর্বাত্মকভাবে চেষ্টা করছে, প্রথমত, যারা অপহরণ করেছে তাদের সাথে বিভিন্ন পক্ষের মাধ্যমে আলোচনা চলছে। দ্বিতীয়ত, তাদের ওপর মনস্তাত্তিক প্রচুর চাপ তৈরি করা হয়েছে।”
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “নাবিকরা ভালো আছে, নিয়মিতভাবে তাদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ রাখছে, এমনকি ভিডিও কলেও কথা বলছে। সুতরাং যে উদ্বেগটা কিছুদিন আগে ছিল সেটি এই মুহূর্তে নেই। আমরা আশা করছি তাদেরকে শিগগির মুক্ত করতে পারব।”
গত ১২ মার্চ দুপুরে ভারত মহাসাগরে সোমালি জলদস্যুদের কবলে পড়ে বাংলাদেশের কবির গ্রুপের এসআর শিপিংয়ের মালিকানাধীন জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ।
বাজার অস্থিতিশীল করতেই বিএনপির ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক
বাজারকে অস্থিতিশীল করতেই বিএনপি ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়েছিল, কিন্তু সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে এবার রমজানে বাজার ‘স্থিতিশীল’ ছিল বলে দাবি করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “আপনারা জানেন, আমাদের দেশে রমজান আসার আগে এবং রমজানের সময় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করার জন্য একটি অসাধু চক্র ও কিছু মজুদদার সবসময় সক্রিয় হয়। এবারও তার ব্যত্যয় হয়নি।
“সেটির সাথে নতুনভাবে যুক্ত হয়েছিল বিএনপির ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক। তাদের উদ্দেশ্য ছিল বাজারকে অস্থিতিশীল করা, পণ্যের মূল্য যাতে বাড়ে। কিন্তু সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়ার প্রেক্ষিতে এবার রমজানের সময় বাজার স্থিতিশীল ছিল এবং অনেক পণ্যের দাম কমেছে।”
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলটির নেতা আবদুল মঈন খান সম্প্রতি বলেছেন, আওয়ামী লীগ দেশে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে এবং সারাবিশ্বে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে এটি প্রচার হচ্ছে।
বিএনপির দুই নেতার বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, “যাদের জন্মটাই অগণতান্ত্রিক আর প্রতিনিয়ত গণতন্ত্র ধ্বংস করার জন্য অপচেষ্টা চালায়, সেই বিএনপি এখন গণতন্ত্রের কথা বলে, এটিই হচ্ছে দুঃখজনক। এটি যেন, চোরের মায়ের বড় গলা।
“শুধু বিএনপির জন্মই অগণতান্ত্রিক নয়, তারা দেশে সবসময় গণতন্ত্র হরণ করার জন্য অপচেষ্টা চালিয়েছে এবং এখনো চালিয়ে যাচ্ছে।”