নিজস্ব প্রতিবেদক, রাঙামাটি <
কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণে তিনমাসের নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। শুক্রবার মধ্যরাত থেকেই তিনমাসের জন্য কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
কার্প জাতীয় মাছের বংশবিস্তার ও প্রাকৃতিক প্রজনন নিশ্চিতকরণে ৩১ জুলাই পর্যন্ত তিন মাস কাপ্তাই হ্রদে সব ধরনের মাছ আহরণ, বাজারজাত ও পরিবহনের ওপর নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে। রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান মাছ আহরণ নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত এই প্রজ্ঞাপন জারি করেছেন।
জেলা প্রশাসক জানান, কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের বংশবৃদ্ধি, হ্রদে অবমুক্ত করা পোনা মাছের বৃদ্ধি, মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন নিশ্চিতকরণসহ হ্রদের প্রাকৃতিক পরিবেশ মৎস্য সম্পদ বৃদ্ধির সহায়ক হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রতিবছর কাপ্তাই হ্রদে তিন মাস মাছ শিকার বন্ধ রাখা হয়।
তিনি বলেন, অবৈধ উপায়ে মাছ আহরণ, পরিবহন ও বাজারজাতকরণ বন্ধ করতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার পাশাপাশি কাপ্তাই হ্রদের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নৌ পুলিশ মোতায়েন করা হবে। হ্রদে অবৈধ উপায়ে মাছ শিকারের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে সতর্ক করেন তিনি।
জেলা প্রশাসক বলেন, নিষেধাজ্ঞাকালীন মৎস্য আহরণের ওপর নির্ভরশীল প্রায় ২০ হাজার জেলেকে বিশেষ ভিজিএফ কার্ডের মাধ্যমে খাদ্য সহায়তা দেয়া হবে, যা প্রতিবছরই দিয়ে আসা হয়। এই সহায়তাটি প্রদান করা হয় মূলত হ্রদে মাছ ধরার উপর নির্ভরশীল জেলে জনগোষ্ঠী যেনো খাদ্য সংস্থানে অবৈধভাবে মাছ আহরণ না করে, তারই প্রণোদনা হিসেবে। আর বন্ধকালীন হ্রদে মাছের পোনা ছাড়ে হ্রদে মৎস সম্পদের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশ মৎস উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি)।
জানা গেছে, ষাটের দশকে খরস্রোতা কর্ণফুলী নদীতে বাঁধ দিয়ে গড়ে তোলা হয় কাপ্তাইয়ের কর্ণফুলী জলবিদ্যুৎকেন্দ্র। যার ফলে বিশাল এলাকাজুড়ে সৃষ্ট হয় ৩৫৬ বর্গমাইল আয়তনের সুবিশাল কৃত্রিম কাপ্তাই হ্রদ। নবসৃষ্ট কাপ্তাই হ্রদে মাছ চাষ শুরু করে বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি)।
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, কাপ্তাই হ্রদ দুই প্রজাতির চিংড়িসহ মোট ৭৫ প্রজাতির মাছের আবাসস্থল। এর মধ্যে ৬৭টি প্রজাতির মাছ দেশীয় এবং ৮ প্রজাতির মাছ বিদেশি। তবে বিএফআরআইয়ের হিসেবে ৭৫ প্রজাতির মাছ থাকলেও বিএফডিসির কাছে প্রায় ৪২ প্রজাতির মাছের বিপণন হিসেবে পাওয়া গেছে। তন্মধ্যে বেশ কিছু প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত।