রুমন ভট্টাচার্য :
বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে আতঙ্কের নাম করোনা ভাইরাস। এ ভাইরাস থেকে সৃষ্ট রোগ কোভিড-১৯ এর কোনো ওষুধ এখনও আবিষ্কার হয়নি। করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরি করার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।
দেশে দিন দিন বাড়ছে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। তাদের চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতালগুলোকে। বর্তমান সময়ে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে বেড়েছে আর্সেনিকাম অ্যালবাম-৩০ নামের হোমিও ওষুধের চাহিদা। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে হোমিওপ্যাথি ও ইউনানি ওষুধ ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে ভারতের ‘আয়ুস মন্ত্রণালয়’।
জানা গেছে, আর্সেনিকাম অ্যালবাম-৩০ ওষুধটি সংক্রমিত হওয়ার আগে ও পরে ওষুধটি সেবন করা যায়। ফলে অনেকে সংক্রমিত হওয়ার ভয়ে শরীরে এন্টিবডি বৃদ্ধি সহায়ক হিসেবে ওষুধটি সেবন করছেন। ইতোমধ্যে ওষুধটি ঘিরে ব্যাপক চাহিদার সৃষ্টি হয়েছে। ওষুধটির নাম ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও। চাহিদা বাড়ায় বাজারে দেখা দিয়েছে সংকট। কিছুটা বেড়েছে দামও।
হোমিও চিকিৎসকদের জানান, একটানা তিনদিন খালি পেটে এই ওষুধ সেবন করতে হবে। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে আর্সেনিকাম অ্যালবাম-৩০ কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে এবং এটি ব্যবহারে সফলতাও এসেছে ইতোমধ্যে। এই ওষুধের কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।
প্রভা হোমিও ক্লিনিকের মালিক ও হোমিও চিকিৎসক পীযুষ নন্দী সুপ্রভাতকে বলেন, ‘করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে আর্সেনিকাম অ্যালবাম-৩০ চাহিদা বেড়েছে। গত তিনদিন প্রায় ১০০ জন ওষুধটি নিয়ে গেছে। অনেকে এসে খোঁজখবর নিচ্ছেন। কেউ কেউ অগ্রিম বুকিং দিয়ে যাচ্ছেন। মার্কেটেও ওষুধটির সংকট দেখা দিয়েছে। দামও আগের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। তবে এই ওষুধের কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। ১ বছরের শিশু থেকে প্রাপ্ত বয়স্করা এই ওষুধ সেবন করতে পারবে।’
শুধু করোনা ভাইরাস নয় যে কোনো ভাইরাসসহ দুরারোগ্য ব্যাধিতে হোমিওপ্যাথি ওষুধ সেবন করে রোগীরা সম্পূর্ণ সুস’ হচ্ছে বলে দাবি এই হোমিও চিকিৎসকের।
ওষুধ সেবনকারী অজয় মিত্র বলেন, ‘যেহেতু আপাতত কোনো আশার আলো নেই, তাই যেভাবেই সম্ভব এন্টিবডি বৃদ্ধি সহায়ক কিছু সেবন করতে পারলে ভাল। আমি নিজেও ও পরিবারের সবাই সেবন করেছি। যেহেতু কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই, তাই চিকিৎসকের পরামর্শে সঠিক মাত্রায় সেবন করতে হবে।’
জানা গেছে, গত ২৪ এপ্রিল রাজধানী ঢাকার স্বামীবাগ ইসকন মন্দিরের পুরোহিত সেবায়েতসহ ৩৬ জন করোনা ভাইরাসে আক্রানত্ম হন। পরদিন ২৫ এপ্রিল মন্দিরটি লকডাউন করা হয়। তারপর থেকে কোনোরকম হাসপাতালে ভর্তি না হয়ে হোমিও ওষুধ আর্সেনিকাম অ্যালবাম-৩০ সেবন ও চিকিৎসকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে পরবর্তী রিপোর্টে ৩৫ জন নেগেটিভ আসে।
বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ ডা. আবদুল করিম বলেন, ‘ প্রতিষেধক হিসেবে আর্সেনিকাম অ্যালবাম-৩০ প্রয়োগ করে আমরা সুফল পেয়েছি। কিছুদিন আগে ঢাকার একটি মন্দিরে প্রায় ৩৬ জন আক্রান্ত হয়েছিল। তারা সকলেই এই ওষুধ সেবন করে সুস্থ হয়েছে।’ এই ওষুধকে প্রতিষেদক হিসেবে ব্যবহারের জন্য তিনি সরকারের প্রতি দাবি জানান।
তিনি আরো বলেন, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে হোমিওপ্যাথি ও ইউনানি ওষুধ ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে ভারতের ‘আয়ুস মন্ত্রণালয়’। আয়ুর্বেদ, ইউনানি, হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা বিষয়ক মন্ত্রণালয়টি করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধের উপায় সংক্রান্ত নানা তথ্য প্রকাশ করেছে।