সাবেক এমপি লাঞ্ছিত
নিজস্ব প্রতিনিধি, পটিয়া »
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে আয়োজিত চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সমাবেশে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। একপর্যায়ের সমাবেশের মঞ্চও ভেঙে পড়ে এবং সাবেক সংসদ সদস্য সরওয়ার নিজামকে লাঞ্ছিত করা হয়। বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কর্ণফুলী উপজেলার সিডিএ আবাসিক মাঠে বিএনপির সমাবেশে এ ঘটনা ঘটে। সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। প্রধান অতিথি বক্তব্য রাখার সময় একপর্যায়ে মঞ্চ ভেঙে কাত হয়ে পড়ে। অবশ্যই এর আগে থেকেই বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় মারামারি হয়।
জানা গেছে, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে কেন্দ্রের ঘোষিত বুধবার দক্ষিণ জেলা বিএনপি সমাবেশের আয়োজন করে। সংর্ঘের আশঙ্কায় প্রশাসন শুরুতে অনুমতি না দিলেও পরবর্তীতে বুধবার সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়। এর মধ্যে সকাল থেকে দক্ষিণ চট্টগ্রামের আনোয়ারা, পটিয়া, বোয়ালখালী, বাঁশখালী, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চন্দনাইশ ও কর্ণফুলী উপজেলা থেকে নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগদান করে। সাবেক সংসদ সদস্য সওয়ার নিজামকে কর্ণফুলী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এসএম মামুন মিঞা, জেলা বিএনপির সদস্য লায়ন হেলাল ও জেলা বিএনপির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমানের অনুসারীরা লাঞ্ছিত করে। দলীয় নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়ন ও দীর্ঘদিনের ক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে লাঞ্ছিত করা হয়।
অপরদিকে, পটিয়ার সাবেক সংসদ সদস্য গাজী মো. শাহজাহান জুয়েল বক্তব্য শুরু করলে কিছু নেতাকর্মী ‘ভুয়া’ ‘ভুয়া’ বলে বিশৃঙ্খলা করায় তিনি বক্তব্য সমাপ্ত না করে মঞ্চ ত্যাগ করেন।
এর আগে দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি আবু সুফিয়ানের সভাপতিত্বে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নাল আবেদীন ফারুক। বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, কেন্দ্রীয় যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব আবুল হাশেম বক্কর, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মোস্তাক খাঁন, সাবেক সংসদ সদস্য গাজী মো. শাহজাহান জুয়েল, সাবেক সংসদ সদস্য সরওয়ার নিজাম, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সিনিয়র সদস্য এনামুল হক এনাম, কর্ণফুলী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এসএম মামুন মিঞা।
সমাবেশে প্রধান অতিথি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ১৪৪ ধারার দিন শেষ হয়েছে গেছে। দফায় দফায় অনুমতি নিয়ে জনসভার দিন শেষ হয়ে গেছে। দেশের মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ। মঞ্চ তো ভাঙবেই। এই সমাবেশ সরকার পতন আন্দোলনের। কিছুতেই জনগণকে আটকে রাখা যাবে না। আন্দোলন বন্ধ হবে না, চলতে থাকবে বলে সরকার হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পটিয়া উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব খোরশেদ আলম জানিয়েছেন, নেতাকর্মীদের চাপে সমাবেশের মঞ্চ ভেঙে পড়েছে। এখানে কেউ হামলা করেনি। মূলত অনুষ্ঠানের বাইরে দু’পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়েছে। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি শেষ পর্যন্ত বক্তব্য রেখে গেছেন।
কর্ণফুলী থানার ওসি দুলাল মাহমুদ জানিয়েছেন, দক্ষিণ জেলা বিএনপি সমাবেশের অনুমতি চাইলে সংঘর্ষের আশঙ্কায় তাদের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। সমাবেশে সাবেক সংসদ সদস্যকে লাঞ্ছিত করার কথা তিনি শুনেছেন।