অবরোধে ভোগান্তিতে পর্যটক
নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার »
কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করার প্রতিবাদে পৌর শহর উত্তাল হয়ে পড়েছে। তার কর্মীসমর্থকেরা এ খবর জানার সাথে সাথে কক্সবাজার পৌর শহরসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। এসময় তারা সড়ক অবরোধ এবং সড়কের বিভিন্নস্থানে টায়ার জ্বালিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। এতে শহরবাসীর সঙ্গে বিপাকে পড়েছেন সেখানে ভ্রমণ করতে আসা ৫০ হাজার পর্যটক। সন্ধ্যার পর সৈকত এলাকার সব হোটেল-মোটেল ও দোকানপাটও বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়াও বিক্ষুব্ধ অনুসারীরা কক্সবাজার শহরের বিভিন্নস্থানে দোকানপাট, বাস কাউন্টারও বন্ধ করে দিয়েছেন। এ সময় পৌরসভার ময়লা আবর্জনাবাহী ট্রাক রাস্তার ওপর রেখে যান চলাচলে বাধা সৃষ্টি করেন। প্রায় অচল হয়ে পড়ে পর্যটন শহর কক্সবাজার। এদিকে শেষ খবরে জানা গেছে, গতকাল রাত ১০টায় অল্প যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে। অনেক পর্যটক রাতেই হোটেল ছেড়েছেন। সাড়ে তিন ঘণ্টা কর্মসূচি চলার পর রাত ৯টায় জেলা আওয়ামী লীগের ঊর্ধ্বতন নেতাদের আশ্বাসে বিক্ষোভ কর্মসূচি প্রত্যাহার হয়।
গতকাল রোববার বিকেলে পৌর মেয়র মুজিবুর রহমানসহ ১৪ জনকে আসামি করে মামলা রুজু করা হয়। এরপর কক্সবাজার শহরসহ অন্যান্য স্থানে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন তার কর্মীসমর্থকেরা।
কক্সবাজার সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মুনীর উল গিয়াস মামলা বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মুনাফ সিকদারকে গুলি করার ঘটনায় মুজিবুর রহমানসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গুলিবিদ্ধ মুনাফ সিকদারের বড় ভাই মো. শাহজাহান বাদি হয়ে মামলা করেন বলে জানা যায়।
গত বুধবার (২৭ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে কক্সবাজার শহরের সুগন্ধা এলাকায় মুনাফ সিকদারসহ দুইজনকে গুলি করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। মুনাফ সিকদারের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তিনি বর্তমানে চমেকে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
মুনাফ সিকদার (৩২) শহরের পেশকারপাড়া এলাকার শাহাব উদ্দিন সিকদারের ছেলে। তিনি জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি এবং শহর যুবলীগের সভাপতি প্রার্থী। আহত অপরজন হলেন, কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালীর ছনখোলা এলাকার গিয়াস উদ্দিনের ছেলে মো. তারেক (২২)।
এ ঘটনার পর আহত মুনাফ সিকদার এক ভিডিও বার্তায় বলেন, আমাকে মুজিবুর রহমান মেয়রের নির্দেশে গুলি করা হয়েছে। ওরা গুলি করার সময় বলছিল, তুই মুজিব চেয়ারম্যানের সাথে লাগছিস? মুজিব চেয়ারম্যানের সাথে আর লাগবি? এই বলে পিছন থেকে গুলি করে পালিয়ে যায়।
তার বক্তব্যের ওই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে। এ বিষয়ে জানার জন্য মেয়র মুজিবুর রহমানকে কয়েকদফা ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মুনীরুল গিয়াস জানান, অপরাধীদের চিহ্নিত ও গ্রেফতার করতে মাঠে নেমেছে পুলিশ। কারও ইন্ধনে এ ঘটনা হলে তাকেও আইনের আওতায় আনা হবে।