নিজস্ব প্রতিবেদক
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের উপাচার্য প্রফেসর আনোয়ারুল আজিম আরিফ বলেছেন, বাংলাদেশের সাংবাদিকতা জগতে অবিস¥রণীয় নাম অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ। দীর্ঘদিন সততা, নীতি-নিষ্ঠার সাথে সাংবাদিকতার মাধ্যমে অনন্য নজির স্থাপন করেন। শিক্ষকতা, সাংবাদিকতার পাশাপাশি রাজনীতিও করেছেন। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে রাউজান আওয়ামী লীগ পক্ষ থেকে এমএনএ নির্বাচিত হন। ১৯৭৫ সালে বাকশালের চট্টগ্রাম গর্ভনর নিযুক্ত হন। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে সত্তরের নির্বাচন এবং দেশের সকল সামাজিক-সং¯কৃতি আন্দোলনে সম্পৃত্ত ছিলেন। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়ন কমিটির অন্যতম সদস্য । বিভিন্ন অবদানের কারণে অধ্যাপক খালেদ বাংলাদেশের ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হন।
গতকাল বৃহস্পতিবার প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ স্মারক বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি ‘স্বাধীনতার ৫০ বছর : প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শিরোনামে স্মারক বক্তব্য উপস্থাপন করেন।
প্রফেসর আনোয়ারুল আজিম আরিফ বলেন, অধ্যাপক খালেদ ছিলেন বহুগুণে গুণান্বিত একজন মানুষ। নিজের মধ্যে সাংবাদিকতা, রাজনীতি, সংস্কৃতি, শিক্ষাসহ নানা গুণের সমন্বয় ঘটিয়েছিলেন তিনি। নানা সামাজিক-সাংস্কৃতিক আন্দোলনে তিনি ছিলেন নেতৃত্বদানকারী ব্যক্তিত্ব। চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অসাম্প্রদায়িক আন্দোলনে তাঁর দৃপ্ত পদচারণা সমাজকে বারবার সঠিক পথের দিশা দিয়েছে।
প্রেস ক্লাব সভাপতি আলহাজ আলী আব্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ। যুগ্ম সম্পাদক নজরুল ইসলামের সঞ্চালনায় শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন দৈনিক আজাদীর পরিচালনা সম্পাদক ওয়াহিদ মালেক, দৈনিক আজাদীর সহযোগী সম্পাদক কবি রাশেদ রউফ এবং অধ্যাপক খালেদের ছেলে মোহাম্মদ জহির।
সভাপতির বক্তব্যে প্রেস ক্লাব সভাপতি আলী আব্বাস বলেন, অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ একজন সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ, সংস্কৃতিবিদ ছাড়াও তিনি একজন দক্ষ ক্রীড়া সংগঠকও ছিলেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি দল নিয়ে তিনি মালয়েশিয়া গিয়েছিলেন।
দৈনিক আজাদীর পরিচালনা সম্পাদক ওয়াহিদ মালেক বলেন, বহু গুণে গুণান্বিত অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ ছিলেন একজন নিরহংকারী বিনয়ী মানুষ। উনার সঙ্গে দেখা করার জন্য বর্তমান নেতাদের মতো কোনো প্রটোকল লাগত না। আমি উনার নিকটাত্মীয় হতে পেরে নিজেকে গৌরবান্বিত বোধ করছি।
প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ বলেন, অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ প্রজন্মের বাতিঘর। সততা, নিষ্ঠা ও নীতির প্রশ্নে তিনি ছিলেন আপসহীন।
কবি রাশেদ রউফ বলেন, অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদকে আমরা সাংবাদিকতা জগতের পথিকৃৎ হিসেবে শ্রদ্ধা করি। বাংলাদেশের প্রগতিশীল আন্দোলনে একজন নেতৃত্বদানকারী মানুষ হিসেবে তিনি ছিলেন পুরোধা ব্যক্তিত্ব।
অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদের ছেলে মো. জহির বলেন, আমার বাবা ইতিহাসের সঙ্গে জড়িত হয়ে রয়েছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ বর্তমান সরকার আমার বাবাকে স্বাধীনতা পুরস্কার প্রদান করে, বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে আমি বাবার পুরস্কারটি গ্রহণ করেছিলাম।
অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সহসভাপতি সালাউদ্দিন মোহাম্মদ রেজা, সহসভাপতি স ম ইব্রাহীম, অর্থ সম্পাদক রাশেদ মাহমুদ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক নাসির হায়দার, সমাজসেবা ও আপ্যায়ন সম্পাদক মো. আইয়ুব আলী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আলীউর রহমান, কার্যকরী সদস্য দেবদুলাল ভৌমিক, মনজুর কাদের মনজু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।