নিজস্ব প্রতিবেদক »
টানা কয়েক দিন স্থিতিশীল থাকার পর হঠাৎ করে আবার দাম বেড়েছে পেঁয়াজের। এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারি ও খুচরা বাজারে পচনশীল মসলাপণ্যটির দাম কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় হঠাৎ করে আবার পেঁয়াজের দাম বেড়েছে।
দেশীয় নতুন পেঁয়াজের সরবরাহ শুরু হওয়ায় কয়েক দিন ধরে দেশের বাজারে মসলাপণ্যটির দাম কমতে শুরু করে। তবে গতকাল শনিবার হঠাৎ করে চট্টগ্রাম সর্ববৃহৎ পাইকারি ও খুচরা বাজারসহ দেশের খুচরা ও পাইকারি পর্যায়ে পেঁয়াজের দাম একযোগে বৃদ্ধি পায়।
জানা গেছে, খাতুনগঞ্জে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ পাইকারি পর্যায়ে ৪৪ টাকা থেকে ৪৬ টাকায় বিক্রি হয়, যা এক সপ্তাহ আগেও ২৮ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি করেছেন ব্যবসায়ীরা। আর চীন থেকে আমদানিকৃত পেঁয়াজ পাইকারিতে ৪৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়, যা এক সপ্তাহ আগে ৩২ টাকায় বেচাকেনা হয়েছে।
হঠাৎ করে দাম বৃদ্ধির বিষয়ে খাতুনগঞ্জের পেঁয়াজের পাইকারি ব্যবসায়ী হক স্টোরের স্বত্বাধিকারী মো. আবুল বাশার বলেন, ভারতের স্থানীয় বাজারেও দাম বাড়তি চলছে। আমাদেরও কিনতে হচ্ছে বেশি দামে, তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
খাতুনগঞ্জের পিঁয়াজের আড়তদার আর ট্রেডিং এর স্বত্বাধিকারী আশীষ মজুমদার বলেন, শ্যামাপূজা উপলক্ষে ভারতের শ্রমিকরা সপ্তাহখানেক মাল লোড আনলোড ও পরিবহনের কাজ থেকে বিরত থাকবে। যার কারণে যেখানে ১০ গাড়ি মাল আসার কথা সেখানে আসবে ৩ গাড়ি। শ্রমিকদের এই অনুপস্থিতির কারণে পেঁয়াজের বাজারেও প্রভাব পড়েছে। ভারতের বাজারেও বেশি দামে বিক্রি করছে যার কারণে এখানে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, গত চারদিন আগে ভারতের পাইকারি বাজারে পেঁয়াজ ৪২ থেকে ৪৬ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে।
পাইকারির পাশাপাশি রিয়াজউদ্দিন বাজারে খুচরা পর্যায়ে গতকাল দাম বেড়ে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৪৮ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হয়, যা এক সপ্তাহ আগেও ৩০ থেকে ৩২ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
একইভাবে কেজিতে ২০-২৫ টাকা বেড়েছে পাকিস্তানি পেঁয়াজের দাম। গতকাল খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে কেজি প্রতি পাকিস্তানি পেঁয়াজ বিক্রি হয় ৪৫-৫০ টাকা দরে, যা গত শনিবার পর্যন্ত ৩৫ টাকার মধ্যে বিক্রি হয়েছে।
এছাড়া প্রথমবারের মতো হল্যান্ড থেকে আমদানিকৃত পেঁয়াজ গতকাল পাইকারিতে ৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৩৬ টাকার নিচে। আর চীনা পেঁয়াজ এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয় ২৭-৩০ টাকার মধ্যে। কেজিতে ১০-১৫ টাকা বেড়ে একই মানের পেঁয়াজ ৪৫-৫০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।
খাতুনগঞ্জের কাঁচাপণ্য ব্যবসায়ী ও আলী ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী জসিম উদ্দিন বলেন, অস্থির বাজারে মুনাফার উদ্দেশ্যে ভারতের বিকল্প হিসেবে বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করেছেন ব্যবসায়ীরা। এ সময় সরবরাহের চাপে বাড়তি দামে আমদানি করা পেঁয়াজে লোকসান দিয়েছেন বহু ব্যবসায়ী। ফলে গত দু-তিন সপ্তাহ পেঁয়াজ আমদানি কমিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এতে বাজারে পণ্যটির আবার সরবরাহ সংকট তৈরি হয়েছে। ফলে মাত্র দু’দিনের ব্যবধানে পণ্যটির দাম কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।