চউক চেয়ারম্যানের সাথে চসিক প্রশাসক
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন বলেছেন, আজ থেকে নগর উন্নয়নে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন সমন্বয়ের মাধ্যমে প্রকল্প বাস্তবায়ন করে যাবে। তিনি বলেন, চট্টগ্রামের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুবই আন্তরিক ও সংবেদনশীল। তাই চট্টগ্রাম নগরীর উন্নয়নে সুদূরপ্রসারী, অবকাঠামোগত ও দৃশ্যমান উন্নয়নের জন্য যথেষ্ট বরাদ্দ দিয়ে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের অনুমোদন দিয়েছেন। এই বিপুল পরিমাণ বরাদ্দের যথার্থ ব্যবহারের মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চট্টগ্রামবাসীর আকাক্সক্ষা পূরণ করতে হবে।
তিনি গতকাল বিকেলে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ চেয়ারম্যান আলহাজ মোহাম্মদ জহিরুল আলম দোভাষের সাথে সিডিএ ভবন কার্যালয়ে সাক্ষাৎকালে এ কথা বলেন। তিনি বলেন, চট্টগ্রামের উন্নয়নের ক্ষেত্রে যেখানে সমস্যা ও প্রতিবন্ধকতা দেখা দেবে, পারস্পরিক সমন্বয়ের মাধ্যমে তার সমাধান নিশ্চিত করতে পারলে শুধু চট্টগ্রামবাসী নয় সমগ্র বাংলাদেশ উপকৃত হবে। কেননা চট্টগ্রাম বাংলাদেশের অর্থনৈতিক হৃদপি-। চট্টগ্রাম বন্দর পৃথিবীর অন্যতম প্রধান প্রাকৃতিক বন্দর। এর ঐতিহ্য প্রায় ৩ হাজার বছরের। পাহাড়-নদী-সমুদ্রবেষ্টিত চট্টগ্রাম নগরী ভূপ্রাকৃতিক ঐশ্বর্যে ভরপুর। তাই চট্টগ্রামকে বিশ্বের অন্যতম নান্দনিক শহর হিসেবে গড়ে তোলার যথেষ্ট উপাদান রয়েছে। এই সম্ভাবনার আলোকে চট্টগ্রামের উন্নয়ন, আর্থসামাজিক কল্যাণ ও সেবার সাথে সংশ্লিষ্ট সকল সরকারি-আধাসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত সংস্থাগুলোকে একই লক্ষ্য নিয়ে একীভূত হতে হবে।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম নগরীর প্রধান সমস্যা জলাবদ্ধতা। শুধুমাত্র সমন্বয়হীনতার কারণে এখন পর্যন্ত জলাবদ্ধতা সমস্যার স্থায়ী সমাধান হয়নি। তবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিানা এই সমস্যা নিরসনে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়, সেনাবাহিনী, ওয়াসা ও সিটি করপোরেশনকে একাধিক মেগা প্রকল্প দিয়েছেন। এ সকল প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে চসিকের সাথে সমন্বয় সাধনের বিষয়টিও তিনি নির্ধারণ করে দিয়েছেন। সুজন উল্লেখ করেন যে, জলাবদ্ধতাসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম সিটি করপোেেরশনের যে জনবল ও অভিজ্ঞতা রয়েছে তা অন্য কোনো সরকারি-আধাসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার নেই। তাই এই সমস্ত প্রকল্প বাস্তবায়নে সহযোগিতা প্রদানের জন্য চসিক মুখিয়ে আছে। তিনি চউক চেয়ারম্যানকে জানান, চট্টগ্রাম নতুন রেলওয়ে স্টেশনের সামনের পার্কিং স্পটটি এখন ব্যবহার হচ্ছে না। এখানে রেল কর্তৃপক্ষের সাথে একাত্ম হয়ে একটি ৫তলা বিশিষ্ট পার্কিং জোন করা যেতে পারে। এজন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে প্রকল্পপত্র পেশ করা হবে। এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে চউক-এর সহযোগিতা কাম্য। তিনি জানান, চট্টগ্রাম উন্ননের সাথে সংশ্লিষ্ট ২৩টি সংস্থা প্রধানদের নিয়ে একটি সমন্বয় কমিটি হবে এবং একটি করে মাসিক সভা হবে। এতে পারস্পরিক দূরত্ব কমে আসবে। বৈঠকে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়াম্যান আলহাজ মোহাম্মদ জহিরুল আলম দোভাষ চসিক প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজনকে অবহিত করেন যে, আমি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই চট্টগ্রামের উন্নয়নের সাথে সংশ্লিষ্ট সরকারি, আধাসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত সেবাসংস্থাগুলোর সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা শুরু করি। ২০২০ সালের শুরুতে আমার এই সমন্বয় প্রচেষ্টা সফল হয় এবং এর সুফলও পাচ্ছি। আমি আন্তরিকভাবে পারস্পরিক সমন্বয় ও সহযোগিতাকে গুরুত্ব দিই। আমরা যদি পরস্পর আন্তরিক হই তাহলে সমন্বয় সাধনের ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা থাকবে না। প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে, নাগরিক দুর্ভোগ যেন প্রলম্বিত না হয়। তিনি চট্টগ্রামে পৃথক পৃথক বাস ও ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণে চসিক প্রশাসকের আগ্রহ ও পরিকল্পনার সাথে ঐকমত্য পোষণ করে বলেন, এ দুটি টার্মিনাল নির্মাণ এখন সময়ের দাবি। এতে পরিবহন সেক্টরে ব্যবস্থাপনাগত শৃংখলা আসবে। তবে সবচেয়ে বেশি এখন যেটি দরকার তা হলো টার্মিনালের জন্য জায়গা নির্ধারণ করা। এই পুরো উদ্যোগটি নির্ভর করবে যথাযথ সমন্বয় সাধনের ওপর। তিনি চট্টগ্রাম নগরীতে যানজট সমস্যার সমাধানে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাকে আধুনিক ও যুগোগযোগী করার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।
বৈঠকে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সচিব মোহম্মদ সাইফুল আলম চৌধুরী, প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস্, চসিক প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্নেল সোহেল আহমদ, প্রশাসকের একান্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল হাশেম, চউকের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এএএম হাবিবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। বিজ্ঞপ্তি