১২০ কোটি টাকার মধ্যে ইতিমধ্যে ১৪ কোটি টাকা পাওয়া গেছে জনগণ থেকে। বাকি অর্থায়নও জনগণ করবে : মা ও শিশু হাসপাতাল
নিজস্ব প্রতিবেদক :
চট্টগ্রামে ৫০ শয্যার ক্যান্সার হাসপাতাল করছে মা ও শিশু হাসপাতাল। আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালের ১০ কাঠা ভ‚মির ওপর গড়ে তোলা হচ্ছে এই হাসপাতাল। সম্পূর্ণ জনগণের টাকায় ইতিমধ্যে প্রায় ১৪ কোটি টাকার একটি তহবিল গড়ে উঠেছে এবং বাকি টাকাও জনগণের সাহায্যে সংগৃহীত হবে, এমনই আশাবাদ আয়োজকদের। প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আবেদন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ভিত্তিপ্রস্তর করার পর থেকে শুরু হবে প্রকল্পের নির্মাণ কাজ।
প্রকল্পটি সম্পর্কে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের কার্যনির্বাহী কমিটির কোষাধ্যক্ষ এবং ক্যান্সার হাসপাতাল বাস্তবায়ন কমিটির সদস্যসচিব রেজাউল করিম আজাদ বলেন, ‘২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের ৮ কাঠা জমি বরাদ্দ দিয়েছিলেন। সেই ভূমির সাথে হাসপাতালের আরো দুই কাঠা ভূমি যুক্ত করে ১০ কাঠার ওপর ক্যান্সার হাসপাতাল গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছি। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ আণবিক শক্তি কমিশন, পরিবেশ অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট সব দপ্তর থেকে অনুমোদন নেয়া হয়েছে। এখন অপেক্ষা শুধু ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত দিয়ে আমরা এটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে চাই। এজন্য সময় চেয়ে আবেদনও করেছি।’
এটি কত তলার ভবন হবে, জানতে চাইলে আজাদ বলেন, ‘মা ও শিশু হাসপাতালের এক নম্বর গেট দিয়ে প্রবেশের সময় হাতের ডানপাশের জায়গায় ১০ তলার ক্যান্সার হাসপাতাল ভবন নির্মাণ করা হবে। এর প্রতিটি ফ্লোরের স্পেস ৫৫ হাজার বর্গফুট।’
প্রকল্প বাস্তবায়নে কত টাকার বাজেট এবং এর সংস্থান প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা ভবন নির্মাণ এবং মেডিকেল ইকুইপমেন্টসহ হাসপাতালটি চালু করতে ১২০ কোটি টাকার বাজেট নির্ধারণ করেছি। এর মধ্যে ভবন নির্মাণের টাকা আমাদের হাতে আছে।’
টাকা কোথায় পেলেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘২০১৬ সালে ক্যান্সার হাসপাতাল নিয়ে কাজ শুরু করার পর চট্টগ্রামের মানুষ এবং বিভিন্ন শিল্প গ্রæপ আমাদের সহায়তায় এগিয়ে এসেছে। এখন পর্যন্ত আমাদের হাতে নগদ চার কোটি টাকা রয়েছে এবং পাইপ লাইনে রয়েছে আরো প্রায় ১০ কোটি। এই অর্থে আমরা ভবন নির্মাণের কাজ শেষ করতে পারবো। তবে ইকুইপমেন্টসহ অন্যান্য খরচ বরাদ্দেও চট্টগ্রামবাসী এগিয়ে আসবে। আর জনগণের টাকায় এই হাসপাতালটি নির্মিত হবে।’
প্রাথমিকভাবে কবে নাগাদ ভবন নির্মাণের শুরু ও শেষ করতে চান? জবাবে রেজাউল করিম আজাদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যেদিন ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন সেদিন থেকেই নির্মাণ কাজ শুরু করতে চাই। সব মিলিয়ে দেড় বছরের মধ্যে আমরা নির্মাণ কাজ শেষ করে দুবছরের মধ্যে রোগীভর্তি কার্যক্রম শুরু করতে পারবো। এজন্য প্রথমদিকে আমরা একটি কেমোমেশিন দিয়ে চিকিৎসা শুরু করবো এবং পরবর্তী সময়ে আরেকটি মেশিন আনা হবে। ইতিমধ্যে মেশিনসহ আনুষঙ্গিক ইকুইপমেন্টের অর্ডার দেয়া হয়েছে। একদিকে ভবন নির্মাণের কাজ চলবে, অপরদিকে ইকুইপমেন্টও চলে আসবে।’
উল্লেখ্য, ১৯৭৯ সালে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত জেনারেল হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ, নার্সিং কলেজ, নার্সিং ইনস্টিটিউট, ইনস্টিটিউট অব চাইল্ড হেলথ এবং অটিজম এন্ড চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট সেন্টার পরিচালনা করে আসছে প্রতিষ্ঠানটি। ১০ হাজার আজীবন সদস্যের ভোটে ২৪ সদস্যের মাধ্যমে এটি পরিচালিত হচ্ছে। তিন বছরের জন্য এসব সদস্য নির্বাচিত হয়ে থাকেন।
অন্যদিকে চট্টগ্রামে ক্যান্সার হাসপাতাল না থাকায় এই হাসপাতালটিকে এখন সময়ের দাবি বলে বিবেচনা করা হচ্ছে।