৪৫ বিদ্যালয়ে শতভাগ পাশ

শতভাগ পাশে বেসরকারি বিদ্যালয়ের সংখ্যা বেশি
জিপিএ -৫ প্রাপ্তিতে এগিয়ে সরকারি বিদ্যালয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

২০২৩ সালের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষার ফলাফলে শতভাগ পাশ করেছে চট্টগ্রাম নগরীর ৪৫টি স্কুল। এর মধ্যে সরকারি মুসলিম হাই স্কুল শীর্ষে থাকলেও বেসরকারি বিদ্যালয়গুলোর সংখ্যাই বেশি। পাশের হারে সরকারি বিদ্যালয়কে লটারি পদ্ধতিতে ভর্তি হওয়া অকৃতকার্য শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে দিচ্ছে বলে জানাচ্ছেন শিক্ষকেরা।
গতকাল শুক্রবার বেলা ১২টায় মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়। চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের অধীনে এ বছর ২১৬ কেন্দ্রে ১ হাজার ১০৭ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১ লক্ষ ৫৪ হাজার ৭৬৯ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছে। পাশের হার ৭৮ দশমিক ২৯ শতাংশ যা গতবছরের তুলনায় ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ কম। জিপিএ ৫ পেয়েছে ১১ হাজার ৪৫০জন যা গত বছর ছিলো ১৮হাজার ৬৬৪জন। শতভাগ পাশ করেছে চট্টগ্রামের ৪৫টি বিদ্যালয়।
শতভাগ পাশের এই তালিকায় সরকারি বিদ্যালয় হিসেবে সরকারি মুসলিম হাই স্কুল শীর্ষে থাকলেও বেসরকারি বিদ্যালয়ের সংখ্যা বেশি। শতভাগ পাশ হওয়া ৪৫টি বিদ্যালয়ের মধ্যে সরকারি মুসলিম হাই স্কুল, কুতুবদিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও হাজী মুহাম্মদ মুহসিন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ছাড়া অন্য কোনো সরকারি বিদ্যালয় নেই। জিপিএ-র ভিত্তিতে প্রথম স্থান অধিকার করা চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলও নেই সেই তালিকায়। ১জন ছাত্রের অকৃতকার্যতার কারণে বিদ্যালয়টির পাশের হার দাঁড়িয়েছে ৯৯ দশমিক ৭৯ শতাংশে। জিপিএ-৫ এর ভিত্তিতে দ্বিতীয় স্থানে থাকা খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৫ জন ছাত্রীর অকৃতকার্যতার জন্য পাশের হার দাঁড়িয়েছে ৯৮ দশমিক ৯৮ শতাংশ। এদিকে শতভাগ পাশের তালিকায় শীর্ষে থাকা সরকারি মুসলিম হাই স্কুল জিপিএর তালিকায় রয়েছে তৃতীয় স্থানে।
শতভাগ পাশ করা বিদ্যালয়ের তালিকায় শীর্ষে থাকা সরকারি মুসলিম হাই স্কুলের পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৪৬০ জন। জিপিএ ৫ পেয়েছে ৩৩১জন।
দ্বিতীয় স্থানে আছে চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজ যেখানে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২৫৩জন। জিপিএ ৫ পেয়েছে ১৭৬ জন।
তৃতীয় স্থানে আছে হালিশহর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ। যেখানে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২১৪ জন। জিপিএ ৫ পেয়েছে ১৫৮ জন।
চতুর্থ স্থানে রয়েছে ক্যান্টনমেন্ট ইলিশ স্কুল অ্যান্ড কলেজ। যেখানে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২০০জন। জিপিএ ৫ পেয়েছে ১৩০জন।
পঞ্চম স্থানে রয়েছে সিলভার বেল গার্লস হাই স্কুল। যেখানে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১৭৭ জন। জিপিএ ৫ পেয়েছে ১৪১জন।
৬ষ্ঠ স্থানে রয়েছে সেন্ট স্কলাস্টিকা গার্লস হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ। যেখানে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১৭৬ জন। জিপিএ ৫ পেয়েছে ৯০জন।
সপ্তম স্থানে রয়েছে ইস্পাহানি পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ। যেখানে পরক্ষার্থী সংখ্যা ১৭৪জন। জিপিএ ৫ পেয়েছে ১০৪জন।
অষ্টম স্থানে রয়েছে চিটাগাং ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনির্ভাসিটি স্কুল অ্যান্ড কলেজ। যেখানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৬৯ জন। জিপিএ ৫ পেয়েছে ৭৯ জন।
নবম স্থানে রয়েছে হাজী মুহাম্মদ মুহসিন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়। যেখানে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১৬৩জন। জিপিএ ৫ পেয়েছে ৮৭জন।
দশম স্থানে আছে বি এ এফ শাহীন স্কুল অ্যান্ড কলেজ। যেখানে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১৪৮জন। জিপিএ ৫ পেয়েছে ৭১জন।
জিপিএ পদ্ধতিতে শীর্ষস্থান অধিকার করা চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম শতভাগ পাশের তালিকা থেকে ছিটকে পড়া প্রসঙ্গে বলেন,‘ আমাদের একজন ছাত্র অকৃতকার্য হয়েছে। গতবারও এক ছাত্র পালিয়ে যায় যার ফলে সে অনুপস্থিত হিসেবে চিহ্নিত হয়। সে ভর্তি হয়েছিলো নবম শ্রেণি থেকে। শুরু থেকে সে এখানকার ছাত্রই ছিলোনা। এর ফলে আমরা শতভাগ পাশের তালিকা থেকে ছিটকে পড়ি। লটারি পদ্ধতিটি এ বছরই চালু হয়েছে। মন্ত্রণালয়ে আমাদের চেয়ে বিজ্ঞ যারা তারাই এই সিদ্ধান্তটা নিয়েছে যে ভালো খারাপ সব ছাত্র সব বিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাবে, তাই হয়তো এই পদ্ধতিটি চালু করা হয়েছে। এ ছাড়াও অনেক কারণে এই পদ্ধতি চালু হতে পারে আমি নিশ্চিত নই। তবে এর হয়তো ফলে ভালো সরকারি স্কুলগুলো শতভাগ পাশের তালিকা থেকে ছিটকে পড়ছে।’ শতভাগ পাশের দ্বিতীয় স্থানে থাকা চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজের অধ্যক্ষ কর্নেল মুজিবুল হক সিকদার বলেন,‘আমাদের প্রতিষ্ঠানে সরকারি সব নীতিমালা মানা হয় লটারি পদ্ধতিতে। তাই আমাদের এখানেও বলবৎ আছে। তবে আমরা সব শিক্ষার্থীর পর্যাপ্ত যত্ন নিশ্চিত করতে নরমাল সিডিউলের পরীক্ষাগুলো ছাড়াও বিভিন্ন পরীক্ষা নিয়ে থাকি। তাদের বিষয় অনুযায়ী দুর্বল ছাত্রদের বিশেষ যত্ন নেই। অভিভাবকদের অবহিত করি যাতে তারা বাড়িতেও এসব বিষয়ে ছাত্রদের বিশেষ যত্ন নিতে পারে। সব ছাত্র যাতে পরীক্ষার্থীয় ভালো ফলাফল করে উত্তীর্ন হতে পারে এ ব্যাপারে আমরা সচেষ্ট থাকি।’