চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের রিট
নিজস্ব প্রতিবেদক
‘কেন চারুকলা স্থানান্তর হবে না’ জানতে চেয়ে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনে একটি রিট আবেদন করে চারুকলা ইনস্টিটিউটের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সভাপতি ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় উপার্চাযসহ ৭ জনকে বিবাদি করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৩০ দিনের মধ্যে শিক্ষার্থীদের লিখিত আবেদন নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
গতকাল রোববার দুপুর সাড়ে ১২টায় হাইকোর্টের বিচারক কে এম কামরুল কাদের ও মোহাম্মদ আলীর ডিভিশন বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন।
বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সাকিব মাহবুদ বলেন, ‘জহির রায়হান অভি এবং শিহাব শাহরিয়ার নামের দুজন পিটিশনার চলতি বছরের জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে একটি রিট আবেদন করেন। ‘কেন চারুকলা স্থানান্তর হবে না’ জানতে চেয়ে হাইকোর্ট ডিভিশনে এ রিট আবেদন করা হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সভাপতি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় উপার্চাযসহ ৭ জনকে বিবাদি করা হয়।
তিনি আরও বলেন, ‘পিটিশনকারীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে চারুকলা মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের আবেদন জানান। কিন্তু প্রশাসন এ বিষয়ে কোনো মীমাংসায় না পৌঁছালে আন্দোলন গড়াতে থাকে। আজ (১৯ ফেব্রুয়ারি) ২য় শুনানি পূর্বক হাইকোর্ট ডিভিশন ৩০ দিনের মধ্যে শিক্ষার্থীদের লিখিত আবেদন নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন।’
অন্যদিকে গতকাল সকাল সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব ভবনের সামনে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী জহির রায়হান অভি বলেন, ‘আমরা চলতি বছরের জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে হাইকোর্ট ডিভিশনে একটি রিট আবেদন করি। এটি ছিলো ‘কেন চারুকলা স্থানান্তর হবে না’ জানতে চেয়ে। আজকে (১৯ ফেব্রুয়ারি) হাইকোর্ট এর রায় ঘোষণা করে। যেখানে বলা হয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর আমাদের করা ‘চারুকলা মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তর’ প্রসঙ্গে করা লিখিত আবেদনের দ্রুত নিষ্পত্তি করতে। এই মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা সেই নির্দেশের বাস্তবায়ন চাইছি।’
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ৩ ও ৫ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর চট্টগ্রাম চারুকলা ইন্সটিটিউটের তৎকালীন পরিচালক অধ্যাপক প্রণব মিত্রের সুপারিশক্রমে ‘চারুকলা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরে প্রসঙ্গে’ পৃথক দুটি আবেদন জমা দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তবে এ ব্যাপারে এরপর আর কোনো সিদ্ধান্ত জানা যায়নি। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মতে, এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত আন্দোলনের ৩ মাস গড়িয়ে গেলেও সুরাহা না হওয়ায় তারা হাইকোর্টের হস্তক্ষেপ পেতে রিট পিটিশন দায়ের করেন।
প্রসঙ্গত, গত ২ নভেম্বর থেকে ক্লাসে পোলেস্তরা খসে পড়াকে কেন্দ্র করে ২২ দফা ইনস্টিটিউট সংস্কার আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে সেটি চারুকলাকে মূল ক্যাম্পাসে ফেরানোর একদফা দাবিতে রূপ নেয়। আন্দোলনের ৮২ দিন পর চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি সশরীরে ইনস্টিটিউটে এসে তালা খুলে ক্লাস শুরুর আহ্বান করেন। কিন্তু প্রতিশ্রুতি পূরণ না হওয়ায় পুনরায় আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা।