হাজারিগলিতে অভিযান : ফার্মেসির মালিকসহ গ্রেফতার ৩
নিজস্ব প্রতিবেদক :
ওষুধের মূল্যবৃদ্ধি, সংকট সৃষ্টি, ফার্মেসিস্ট সার্টিফিকেট না থাকা, আনরেজিস্টার্ড ওষুধ রাখা, বিদেশী অবৈধ ওষুধ রাখা, মূল্য কর্তন করা, নকল পিপিই, মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখার মতো কাজ করতে এতটুকু পিছপা হচ্ছে না অসাধু ওষুধ ব্যবসায়ীরা। তাদের লাগাম টেনে ধরতে জেলা প্রশাসনের চারজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে নগরীর পাইকারি ওষুধ মার্কেট হাজারিগলিতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করার হয়। অভিযান ২৯ ফার্মেসিকে ২৯ মামলা, ১০ লাখ ৯৩ হাজার টাকা জরিমানাসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
রোববার (৭ জুন) বেলা ২ টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শিরীন আক্তার, এস এম আলমগীর হোসেন, মো. উমর ফারুক ও গালিব চৌধুরী ওই অভিযান চালান।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, নগরীর কোতোয়ালী থানার হাজারীলেইনে অভিযানে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শিরীন আক্তার ও এস এম আলমগীর হোসেন পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত ১৪ জন ফার্মেসি ব্যবসায়ীকে ৭ লক্ষ টাকা, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. উমর ফারুক ৩ লক্ষ ৪৩ হাজার টাকা, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গালিব চৌধুরী ৫০০০০ টাকা জরিমানা আদায় করেন।
অভিযানে এনাম মেডিকেলকে ৫০ হাজার, মেমোরি ড্রাগ হাউসকে ৫০ হাজার, নিউ চট্টলা মেডিকেলকে ৫০ হাজার, সবুজ ফার্মেসীকে ৪০ হাজার, সন্ধ্যা ড্রাগ হাউসকে ৪০ হাজার, গোপাল মেডিকেলকে ৩০ হাজার, যমুনা মেডিকেলকে ৩০ হাজার, আনিকা ড্রাগ হাউসকে ৩০ হাজার, ভাই ভাই ট্রেডার্সকে ১৮ হাজার ও চট্টশলা এন্টারপ্রাইজকে ৫ হাজার টাকাসহ মোট ১০ লাখ ৯৩ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক হোসাইন মোহাম্মদ ইমরান ও কামরুল হাসান, র্যাব ও পুলিশের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। জনস্বার্থে এ ভ্রাম্যমাণ আদালতের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসন।
ফার্মেসির মালিকসহ গ্রেফতার ৩
নগরের হাজারিলেইন থেকে বেশি দামে ওষুধ বিক্রির অভিযোগে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মো. আশরাফ (২৮), অনিক ধর (১৮) ও মো. আকবর হোসেন (১৮)।
পুলিশ জানায়, সুলতানুল আরেফীন নামে এক যুবক দুপুরে ‘ইভেরা সিক্স’ ট্যাবলেট কিনতে হাজারিগলির ছভিলা কমপ্লেক্স এর মেসার্স এ গফুর ফার্মায় যান। ইভেরা সিক্স ওষুধটি আছে কিনা দোকান কর্মচারী কফিল উদ্দিন (পলাতক) আসামি মো. আশরাফ ও অনিক ধরের কাছে জানতে চান। এসময় তারা একে অপরের দিকে ইশারা ইঙ্গিতে কথা বলে আরেফীনকে ওষুধটির ব্যাপারে জানাচ্ছেন বলে জানান।
কিছুক্ষণ পর ওষুধটির এক পাতার দাম ১ হাজার টাকা বলে ক্রেতা আরেফীনকে জানান পলাতক আসামি কফিল উদ্দিন। এরপর আরেফীন অন্যান্য দোকানে গিয়ে ওষুধটি না পেয়ে পুনরায় গফুর ফার্মায় গিয়ে তা কেনার ইচ্ছা পোষণ করেন। এসময় দোকানদার কফিল উদ্দিন ওষুধটি শেষ হয়ে গেছে বলে আরেফীনকে জানান। তাৎক্ষণিক বিষয়টি সেখানে অভিযানে থাকা কোতোয়ালী থানা পুলিশকে জানান আরেফীন।
এরপর অভিযান চালিয়ে গফুর ফার্মার পরিচালক মো. আশরাফকে আটক করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তিনি তার ফার্মেসিতে লুকিয়ে রাখা ইভেরা সিক্স ট্যাবলেটের দুটি পাতা বের করে দেন। পালানোর চেষ্টাকালে অনিক ধর ও মো. আকবর হোসেনকে আটক করলেও কৌশলে পালিয়ে যান কফিল উদ্দিন।
কোতোয়ালী থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন বলেন, করোনা মহামারির মধ্যে ধৃত আসামিরা অবৈধভাবে ওষুধ মজুদ করে নির্ধারিত দামের অধিক মূল্যে বিক্রি করে আসছিল। গ্রেফতার হওয়া আসামি এবং পলাতক আসামির বিরুদ্ধে বাদি হয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইন এর ২৫ ধারায় মামলা করেছেন ওষুধ ক্রেতা আরেফীন।