সুপ্রভাত ডেস্ক »
রপ্তানি নীতি ২০২৪-২০২৭-এর খসড়ার অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এতে এ মেয়াদের শেষ বছরে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১১০ বিলিয়ন ডলার। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও বৈশ্বিক বাণিজ্য পরিস্থিতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এই লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
প্রেস সচিব বলেন, ‘এ নীতির উদ্দেশ্য হচ্ছে রপ্তানি প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি, আমদানি-রপ্তানির মধ্যে ভারসাম্য আনা এবং বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা।
‘এছাড়াও রপ্তানি বাণিজ্যের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের অবস্থান সুদৃঢ়করণে রপ্তানি নীতির ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ, পাশাপাশি দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রম বিকাশকে উৎসাহিত করতেও সহায়ক।’
প্রস্তাবিত রপ্তানি নীতির প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো ব্যাখ্যা করতে গিয়ে প্রেস সচিব জানান, ২০২৪-২৭ মেয়াদের শেষ বছরে রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ১১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে।
অন্যান্য বৈশিষ্ট্যের মধ্যে রয়েছে, রপ্তানিকারকদের উৎসাহিত করতে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) নিয়ম অনুযায়ী আর্থিক প্রণোদনার বিকল্প ব্যবস্থা-সংক্রান্ত নির্দেশিকা এবং রপ্তানিতে নারী ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সম্পৃক্ত করার জন্য নির্দিষ্ট নীতিমালা সুপারিশ করা হয়েছে। খবর টিবিএস।
রপ্তানি প্রক্রিয়ায় বেশ কয়েকটি খাতকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত খাতে সম্ভাবনাময় নতুন কিছু পণ্য ও সেবা, যেমন সবজি, হস্ত ও কারুপণ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বিশেষ উন্নয়নমূলক খাতে স্পিনিং ও ফ্যাব্রিক উৎপাদন ও ডাইং-প্রিন্টিং ফিনিশিং অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত সেবা খাত ও বিশেষ উন্নয়নমূলক সেবা খাটের প্রতিও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
রপ্তানি সম্প্রসারণে সহায়ক পদক্ষেপ গ্রহণের ব্যবস্থা ঠিক করা হয়েছে। এতে খাতভিত্তিক কিছু সুপারিশ করা হয়েছে। ওষুধশিল্প ও চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং হস্তশিল্পজাত পণ্যকে নতুনভাবে এ অংশে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া সেবা খাতের রপ্তানি সম্প্রসারণে সহায়ক পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য একটি নতুন অধ্যায় সংযোজন করা হয়েছে।
‘রপ্তানি নিষিদ্ধ পণ্য তালিকা’ এবং ‘শর্তসাপেক্ষে রপ্তানি পণ্য তালিকা’ হালনাগাদ ও এইচএস হেডিংসহ উল্লেখ করা হয়েছে। রপ্তানি-সংক্রান্ত জাতীয় কমিটি, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন কমিটি এবং রপ্তানি-সংক্রান্ত কারিগরি কমিটির পঠন ও কার্যপরিধিও এই নীতিমালায় সন্নিবেশ করা হয়েছে।
ওয়াসা আইন সংশোধন
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় ‘পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০১৪’-এর খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
নগরবাসীর নিরাপদ পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার যথাযথ পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণের লক্ষ্যে ওয়াসাসমূহ (ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা রাজশাহী ও সিস্টে) গুরুতপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ওয়াসাগুলোর কার্যক্রম ‘পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ ১৯৯৬’ এবং এ আইনের আওতায় প্রণীত বিভিন্ন বিধিমালা দ্বারা পরিচালিত হয়ে থাকে।
প্রেস সচিব এ বিষয়ে বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে জনস্বার্থে ওয়াসার আওতায় সঠিক নাগরিক সেবা এবং প্রশাসনিক কার্যক্রম নিশ্চিত করার জন্য আইনটির কিছু সংশোধন প্রয়োজন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ‘পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০১৪’-এর খসড়া প্রণয়ন করা হয়।
সংশোধিত অধ্যাদেশের বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে রয়েছে: অত্যাবশ্যক বিবেচনায় জনস্বার্থে সরকার যেকোনো ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালককে অপসারণ ও নিয়োগ করতে পারবে; সরকার যেকোনো ওয়াসার কর্মকর্তা-কর্মচারীকেও অপসারণ ও নিয়োগ করতে পারবে; এবং সরকার যেকোনো ওয়াসা বোর্ড বাতিল করতে পারবে।
মালদ্বীপ থেকে বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনতে চুক্তি
এছাড়াও মালদ্বীপের কারাগারে আটক সাজাপ্রাপ্ত বাংলাদেশি বন্দিদের দেশে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে ‘অ্যাগ্রিমেন্ট বিটুইন দ্য গভর্নমেন্ট অভ দ্য পিপলস রিপাবলিক অভ বাংলাদেশ অন ট্রান্সফার অভ প্রিজনারস’ শীর্ষক চুক্তির খসড়া অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ।
মালদ্বীপের বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে জানানো হয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে মালদ্বীপের বিভিন্ন কারাগারে বাংলাদেশি নাগরিকরা বিভিন্ন অভিযোগে আটক আছেন। কারাবন্দিরা তাদের অবশিষ্ট সাজার মেয়াদ বাংলাদেশের কারাগারে ভোগ করার ইচ্ছা পোষণ করছেন।
প্রস্তাবিত চুক্তিটি স্বাক্ষর হলে মালদ্বীপের কারাগারে আটক বাংলাদেশি সাজাপ্রাপ্ত বন্দিদের বাংলাদেশে ফেরত জানা সম্ভব হবে বলে জানান প্রেস সচিব।