নিজস্ব প্রতিনিধি, রাউজান »
প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদী থেকে মা মাছের সংগৃহিত ডিম ফুটানোর কাজে ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করেছেন সংগ্রহকারীরা। এবার ডিমের পরিমাণ ১৪ হাজার কেজি থেকে ১৮ হাজার কেজি পর্যন্ত হবে জানান রাউজান উপজেলা সিনিয়র মৎস অফিসার পিযুষ প্রভাকর।
গত ১৮ জুন রোববার দিবাগত রাত ১২টা থেকে রাত ৩টা পর্যন্ত হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছাড়ে। রাউজান-হাটহাজারীর ৩শ’ ৫৮ জন ডিম সংগ্রহকারী ১৫৫টি নৌকা নিয়ে ডিম সংগ্রহ করে।
রাউজানের পশ্চিম গহিরা অংকুরী ঘোনা, দক্ষিণ গহিরা, গহিরা মোবারকখীল, পশ্চিম বিনাজুরী, কাগতিয়া, আজিমের ঘাট, মগদাই, পশ্চিম আবুর খীল নাপিতের ঘাট, উরকিরচর, হাটহাজারী উপজেলার গড়দুয়ারা, নয়াহাট, রামদাশ হাট, বাড়ীঘোনা, আমতোয়া, শাহ মাদারী ও মাছুয়াঘোনা এলাকায় হালদা নদী থেকে ডিম সংগ্রহ করা হয়।
ডিম সংগ্রহকারীরা সোমবার ভোররাত থেকে রাউজানের গহিরা মোবারক খীল হ্যচারি ও পশ্চিম বিনাজুরী আইডিএফ এর হ্যচারি, হাটহাজারীর মদুনাঘাট, মাছুয়া ঘোনা, শাহ মাদারী হ্যাচারিতে ও হালদা নদীর বিভিন্ন স্পটে নদীর তীরে খনন করা মাটির কুয়ায় ডিম ফুটানোর ব্যস্ত রয়েছেন। রাউজানের দক্ষিণ গহিরা মোবারক খীল এলাকার বাসিন্দা, ডিম সংগ্রহকারী ইলিয়াছ বলেন, হালদা নদী থেকে ডিম সংগ্রহ করে গহিরা মোবারক খীল এলাকায় হ্যচারির কুয়াতে রেখে ডিম ফুটানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।
রাউজানের পশ্চিম গহিরা অংকুরী ঘোনা এলাকার সুজিত বড়ুয়া বলেন, আমিসহ ৫ জন মিলে দুটি নৌকা নিয়ে হালদা নদী থেকে ১২ বালতি ডিম সংগ্রহ করি। সংগৃহিত ডিম বাড়ির পাশে নদীর তীরে মাটির দুটি কুয়ায় রেখে ফুটানোর কাজ করছি। হালদা নদীর মা মাছ ডিম ছাড়লে ডিম থেকে রেনু ফুটানোর জন্য রাউজানের পশ্চিম গহিরা এলাকায়, গহিরা মোবারক খীল, কাগতিয়া, রাউজানের গহিরা মোবারক খীল হ্যচারি ও হাটহাজারীর মদুনাঘাট, মাছুয়া ঘোনা, শাহ মাদারী এলাকায় হ্যচারী নির্মাণ করা হয়। তার মধ্যে রাউজানের পশ্চিম গহিরা ও কাগতিয়া এলাকায় নির্মাণ করা হ্যচারি কয়েক বছর ধরে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। রাউজানের গহিরা মোবারক খিল হ্যচারি ও পশ্চিম বিনাজুরি আইডিএফ এর হ্যচারি, হাটহাজারীর মদুনাঘাট, মাছুয়া ঘোনা, শাহ মাদারী হ্যচ্যারিতে ডিম ফুটানোর কাজ চলছে।
বর্তমানে ১শ’ ৭৭টি মাটির কুয়ায় ডিম সংগ্রহকারীরা সনাতন পদ্ধতিতে ডিম ফুটানোর কাজ করছে । ডিম ফুটিয়ে রেণু উৎপাদন করার পর ডিম সংগ্রহকারীদের কাছ থেকে মৎস্যচাষী, মৎস্য প্রকল্পের মালিকেরা এসে রেণু কিনবে এবং পুকুর, জলাশয় বা মৎস্য প্রকল্পে চাষ করবে।
ডিম সংগ্রহকারী কয়েকজন বলেন, ডিম ফুটানোর জন্য নির্মাণ করা হ্যাচারি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় পশ্চিম গহিরা ও কাগতিয়ার হ্যচারি পুনঃনির্মাণ ও কয়েকটি নতুন হ্যচারি করলে ডিম ফুটানো আরো সহজ হবে। এবার ডিম ফুটানোর জন্য পর্যাপ্ত কুয়া ও হ্যচারি না থাকায় হালদা সংগ্রহকারীরা বিপুল পরিমাণ ডিম সংগ্রহ করেননি ।