নিজস্ব প্রতিনিধি, রাউজান »
প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে ‘নমুনা ডিম’ ছেড়েছে মা মাছ। গতকাল মঙ্গলবার ভোর ৬টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত ডিম ছাড়ে।
গতকাল রাউজান ও হাটহাজারীর ডিম সংগ্রহকারীরা নৌকা ও জাল নিয়ে হালদা নদী থেকে ডিম সংগ্রহ করেন।
রাউজানের উরকিরচর ইউনিয়নের খলিফার ঘোনা, উরকিরচর, পশ্চিম আবুর খীল, নাপিতের ঘাট, মইশকরম, হাটহাজারীর মদুনাঘাট, চ্ইালতা খালী, বাড়িঘোনা, আমতোয়া, মাছুয়াঘোনা, পোড়ালীর মুখ এলাকায় মা মাছ হালদা নদীতে ডিম ছাড়ে। ওই সময়ে ডিম সংগ্রহকারীরা নদীতে নৌকা ও জাল দিয়ে ডিম সংগ্রহ করেন।
সকালে হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছাড়ার সংবাদ পেয়ে সকাল ১০টা থেকে বিকাল পর্যন্ত হালদায় জোয়ারের সময়ে ডিম সংগ্রহকারীরা রাউজানের আবুর খীল, নাপিতের ঘাট, খলিফার ঘোনা, উিেকরচর, মগদাই, আজিমের ঘাট, কাসেম নগর, কাগতিয়া, পশ্চিম বিনাজুরী, দক্ষিণ গহিরা, পশ্চিম গহিরা অংকুরী ঘোনা, পশ্চিম গহিরা ও হাটহাজারীর মদুনাঘাট, খলিফারঘোনা, মাছুয়াঘোনা, দক্ষিণ মাদার্শা, আমতোয়া ও গড়দুয়ারা এলাকায় ডিম সংগ্রহ করতে দেখা যায়।
পূর্ব গড়দুয়ারা এলাকার ডিম সংগ্রহকারী আবু তাহের বলেন, ভোরে ভাটার সময়ে নদীতে মা মাছ ডিম ছেড়েছে তা আমরা জানি না। ভাটার সময়ে হালদা নদীর নিচু এলাকায় ডিম সংগ্রহকারীরা নদী থেকে ডিম সংগ্রহ করেন। সকাল ১০টার সময়ে নদীতে ডিম ছাড়ার সংবাদ পেয়ে হালদা নদীর উচু এলাকার ডিম সংগ্রহকারীরা নৌকা ও জাল নিয়ে নদীতে জাল বসিয়ে ডিম সংগ্রহ করার জন্য যায়। দুপুরের সময়ে নদীতে ভরা জোয়ারের সময়ে হালদা নদী থেকে মা মাছের ডিম সংগ্রহ করতে থাকি।
দুপুরে জোয়ারের সময়ে হালদা নদী থেকে দুটি নৌকা নিয়ে চার জন মিলে ৩ কেজি ডিম সংগ্রহ করেন বলে জানান, গহিরা মোবারক খীল এলাকার ডিম সংগ্রহকারী শাহ আলম।
অনেকেই এই ডিম নমুনা ছেড়েছে বলে দাবি করেন। কেউ কেউ বলছেন হালদা নদীতে মা মাছ পুরোদমে ডিম ছেড়েছে। তবে ভোরে ভাটার সময়ে হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছাড়ার সময়ে বেশিরভাগ সংগ্রহকারীরা ডিম সংগ্রহ করতে পারেনি । ভাটার সময়ে ডিম ছাড়ার পর অনেক ডিম ভাটার স্রোতের পানিতে কর্ণফুলী নদী হয়ে সাগরে চলে যায় বলে ধারণা করছেন হালদা পাড়ের বাসিন্দারা।
ডিম সংগ্রহকারীরা ডিম ফুটিয়ে ডিম থেকে রেনু উৎপাদনের জন্য রাউজানের গহিরা মোবারক খীল, পশ্চিম বিনাজুরী আই, ডি, এফ এর হ্যচারি, হাটহাজারীর মদুনাঘাট, মাছুয়া ঘোনা, দক্ষিণ মাদার্শা এলাকার হ্যচারি ও হালদা নদীর তীরে খনন করা মাটির কুয়াগুলো প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে বলে জানান রাউজান উপজেলা মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন। তিনি বলেন, হালদা নদীতে ভোরে মা মাছ নমুনা ডিম ছেড়েছে। দুপুরে ভরা জোয়ারের সময়ে হালদা নদীর রাউজান হাটহাজারীর বিভিন্ন স্পটে ডিম সংগ্রহকারীরা নৌকা ও জাল নিয়ে নদী থেকে ডিম সংগ্রহ করছেন। কি পরিমাণ ডিম সংগ্রহ করা হয়েছে তা এখনো জানা যায়নি। ডিম সংগ্রহকারীরা ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছে ন। ডিম সংগ্রহ করে ফিরে আসলে পরিমাণ জানা যাবে।
এ ব্যাপারে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শ্রীবাস চন্দ্র চন্দ বলেন, হালদা নদীতে মা মাছ নমুনা ডিম ছেড়েছে। আবারো প্রবল বর্ষণ ও বজ্রপাত হলে পুরোদমে ডিম ছাড়বে বলে আশা করছি।
জানা যায়, গতকাল রাউজান অংশের মইশকরম এলাকার চইল্যাখালিতে ডিম সংগ্রহকারী পাকিরাম দাশ, হরিরন্জন দাশ, সন্তোষ দাশ, সুজিত দাশ এবং সুনিলদাশ ১১টি নৌকার মাধ্যমে ডিম সংগ্রহ করেন। প্রতিটি নৌকায় গড়ে ২ থেকে ২.৫ বালতি করে ডিম সংগ্রহ করেন তারা।
উল্লেখ্য, ৬ থেকে ১০ মে পর্যন্ত হালদায় কার্পজাতীয় মাছের ডিম ছাড়ার অমাবস্যার জো চলছে। হালদা নদীতে আমবস্যার জোতে পুরোদমে ডিম ছাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।