ভিসুভিয়াসের ঘুম ভাঙার দিনে
ওর নাম ছিলো পম্পি। আমি ও-নাম বদলে দিয়ে
ভালোবেসে ডেকেছিলাম – পমপেই, ও পম্পেই।
ইতিহাসের পাতায় পাতায় আমরা কূজনে ব্যস্ত
দু’জন।
ঘুমন্ত ভিসুভিয়াসের আকাশে উড়তে দেখেছিলাম
উড়ন্ত পাখিদের কল-কাকলী, মুখর পম্পেই নগরী
কল-কোলাহল।
গিয়েছিলাম, আমরা বৈকালিক কবিতা সভায়
অন্ধ নিডিয়ার সাঁজি থেকে ফুল কিনে নিয়ে।
যুবক-যুবতীরা চুম্বন শেষে প্রসূতিসদন।
তারপর, নেমে আসছে সিঁড়ি বেয়ে নগরীর ব্যস্ত
জনপদে, মুখর নাগরিকতায়
মনোরম সুগন্ধ ছড়িয়ে দিয়ে নবজাতকের।
কী যে ছিলো আমাদের সেইসব দিন আহা, দিন!
ভিসুভিয়াসের আগুন পাথর লাভা ছাইয়ের চাদর
বিছানোর আগে!
পম্পেই, বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে ন্যস্ত ল্যাপটপে
তোমার আঙুল আজ। সেই দিনগুলো মনে পড়ে কি?
জলযোগ, কেউ আছে কি
জলযোগ, তোর টেবিলে আছে কি কেউ?
মোমের মতোন জ্বলেছিলো দিনে রাতে,
এলো গেলো মেতে আড্ডাতে কতোজনই !
ছিলো কেউ নিয়ে হৃদয়ে রক্তপাত।
বেদনা ভুলেছে, মুছে গেছে কারো ক্ষত
বাঁশি-সুলতান জয়জয়ন্তী ধরেছে অকস্মাৎ।
শুনেছো কাহিনী, আসা-যাওয়া কতো কষ্ট, তা কি কেউ পাও?
কতোজনই যায়, উধাও… উধাও… উধাও…
পান্থ থাকে না পান্থশালায় চিরকাল,
তৃষ্ণায় আসে বচনমাধুরী জলপানে,
বন্দী তো নয় – স্বাধীন চিত্ত সবারই,
চৈতন্য গলির অমৃতসমান উৎসবে।
সুন্দর আজও শান্তির খোঁজে যাযাবর,
সত্য কখনও উঁকি দিয়ে ফিরে যায়,
ঠিকানা কাহারও, এইখানে – নাই নাই।
ডুবুরীজীবনের কাহিনী
ক্যাম্পাসের নিস্তব্ধ পথ, বিদায়ের দিনে ফারিয়েল
পাথরচোখে বলেছিলো, “শুভ হোক তোর।”
জানি না কী শুভ হয়েছিলো, খুঁজি অতঃপর!
খুঁজি এক মহাদেশ লস্ট আটলান্টিস, হারানো
গন্ডোয়ানাল্যান্ড, মায়ের নোলক, শৈশবের ওই সেই
দুধসাদা দাঁত, গর্তের ইঁদুর, প্রেমপত্র দিদির লেখক,
ডুবে যাওয়া টাইটানিক জাহাজের অতল ঠিকানা,
অতন্দ্র কালের কোলে সিন্ধুসভ্যতার খোঁজে মগ্ন
হই, মেতে রই অদম্য ডুবুরী।
ছায়াঢাকা শাল-শিরিষের পথে দ্রুত আঁধারের হাত
সেইদিন নেমে এসে, সব গান সুর মুছে দিয়েছিলো।
ফারিয়েল তুই আজ মহাকাশ নাক্ষত্রিক জগতের
তুখোড় সন্ধানী,
আমাদের প্রতীক্ষার কাল আর শেষ কবে হবে?
ত্রিবেণীর ঘাটে ভোজন-পূজন
পদ্মাবতী, পদ্মপাতায় জল টলমল জল,
চাঁদ মুর্চ্ছায় চাঁদের গায়ে
উতলা হাওয়ায় ঝড়েরও কোলাহল।
পাড়ে যদি যাবি,
সাবধানে ফেল্ ডিঙির বৈঠা বাওয়া।
পাতার স্নেহরা যেনো নাহি যায় সরে
বিন্দুজলও যেনো না ঝরে পড়ে
ত্রিবেণীর ঘাটে পৌঁছেই খাওয়া-দাওয়া।
প্রজন্ম তোমার জন্মদিন
তুমি জন্মেছিলে আজ
শুভ জন্মদিন।
পৃথিবীর দেশে দেশে প্রজন্ম নবীন,
বাস্তুবিদ্যা লোককাণ্ড
জ্ঞান কর্ম অর্থভাণ্ড
যত কাণ্ড সত্য-শিব-সুন্দর আবাদে
অতীতের পুণ্যে পাও বিকাশের বীণ।
চিত্ত পুষ্পময় করো
সিদ্ধান্তে স্বাধীন।
পাপ
তুমি বললে, “না ছুঁয়ো না পাপ।”
তোমার কিছুই ছুঁতে পারি না
কেমন অভিশাপ?