সুপ্রভাত ডেস্ক <
করোনার বিরাজমান পরিস্থিতিতে সরকার সোমবার থেকে এক সপ্তাহের জন্য সারাদেশ লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
শনিবার সকালে নিজের সরকারি বাসভবন থেকে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি একথা জানান।
এ বিষয়ে শনিবার সন্ধ্যার মধ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বিস্তারিত জানাবে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, লকডাউনে শিল্প কলকারখানা শর্তসাপেক্ষ চালু থাকতে পারে।
দেশে করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার দ্রুত বেড়ে যাওয়ায় সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং মাস্ক পড়াকে জরুরি কর্তব্য মনে করে সেগুলো পালন করার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় সরকার ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে, কিন্তু এখনো অনেকেই মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধির প্রতি অনিহা দেখাচ্ছে, যা প্রকারান্তরে ভয়াবহ পরিস্থিতি নিয়ে আসতে পারে। নিজের সুরক্ষায় সবার সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করাই এখন মূল কাজ।
গত বছরের ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর ১৮ মার্চ প্রথম কারো মৃত্যুর কথা জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এরপর মহামারি নিয়ন্ত্রণে গত বছরের ২৩ মার্চ প্রথমবারের মত ‘সাধারণ ছুটির’ ঘোষণা দেয় সরকার।
শুরুতে গত বছরের ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ‘ছুটি’ ঘোষণা হলেও পরে তার মেয়াদ বাড়ে কয়েক দফা। টানা ৬৬ দিনের সাধারণ ছুটি শেষ হয় গত বছরের ৩০ মে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার সকাল পর্যন্ত দেশে ৬ লাখ ২৪ হাজার ৫৯৪ জনের দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে উল্লেখিত সময় পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৯ হাজার ১৫৫ জনের। আর সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৫ লাখ ৪৭ হাজার ৪১১ জন। এর মধ্যে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে রেকর্ড ৬ হাজার ৮৩০ জনের দেহে এই ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে এবং মৃত্যু হয়েছে আরও ৫০ জনের।
বিএনপি যে নেতিবাচক ভাইরাসে আক্রান্ত তা করোনার চেয়েও ভয়াবহ- এমন মন্তব্য করে ব্রিফিংয়ে আওয়ামী লীগের সাংধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, করোনা মহামারিতে জনগণের পাশে না দাঁড়িয়ে ঘরে বসে মিডিয়ায় ঝড় তোলা আর সরকারের অন্ধ সমালোচনা ও মিথ্যাচারই বিএনপির সফলতা। তারা সরকারের কোনো উদ্যোগ চোখে দেখে না।
লকডাউন নিয়ে অপপ্রচার, করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে মিথ্যাচার এবং সরকারের ব্যর্থতা খোঁজা বিএনপির রোজনামচা- একথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, একটি দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হয়েও দুর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর ন্যূনতম মূল্যবোধও তারা হারিয়ে ফেলেছে।
সেতুমন্ত্রী বলেন, জনগণের সম্পদ বিনষ্ট আর নৈরাজ্য সৃষ্টির মাধ্যমে বিএনপি ও তার সহযোগীরা যে তাণ্ডবলীলা চালিয়েছে তার জন্য বিএনপিকেই জনগণের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।
আন্দোলনের নামে জনগণের ওপর প্রতিশোধ নেওয়াই এখন বিএনপির কৌশল বলেও এ সময় মন্তব্য করেন তিনি।
যারা কথা দিয়ে কথা না রেখে দূরপাল্লায় দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করছে, তাদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, দুর্যোগের মধ্যে জনগণের দুর্ভোগ বাড়াবেন না।
রমজান এলেই এক শ্রেণীর ব্যবসায়ী নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বাড়িয়ে দেয়, যা শাস্তি যোগ্য অপরাধ- একথা উল্লেখ করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশ্যে বলেন, অহেতুক মূল্য বৃদ্ধি ও মজুদদারিতা নিয়ন্ত্রণে সরকার সতর্ক রয়েছে। ইতোমধ্যে সরকার নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছে।
তিনি বলেন, বাজার অস্থির করার কোনো অপপ্রয়াস সরকার মেনে নেবে না, কোনো ধরনের সিন্ডিকেটের কাছে সরকার বাজার ব্যবস্থাকে জিম্মি হতে দেবে না।