বাড়ছে সংক্রণের ঝুঁকি
রুমন ভট্টাচার্য :
সরকারের নির্দেশনা পর নগরীর অধিকাংশ সেলুন খুলেছে। সামনে ঈদ তাই সেলুনে বাড়ছে মানুষের ভিড়। কিন্তু সেলুন খোলার ব্যাপারে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে সেলুন মালিকদের ১৪ শর্ত দেওয়া হলেও মালিকদের কেউ মানছেন না সে শর্তগুলোর একটিও। ফলে তৈরি হচ্ছে সংক্রমণের ঝুঁকি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, অন্যান্য দোকানের চেয়ে সেলুন থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি। কারণ সেলুনে ব্যবহৃত একই সরঞ্জাম একাধিক ব্যক্তির জন্য ব্যবহার করা হয়।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম মহানগর সেলুন মালিক কল্যাণ সমিতিতে সদস্য সংখ্যা প্রায় ৪ হাজার ১০০। তবে স্বাস্থ্যবিধির ১৪ শর্তের বিষয়ে জানা নেই অনেকের। খোদ সমিতির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক শর্তগুলোর কিছুই নাকি এখনও জানেন না। তবে সাবেক এক নেতার দাবি এত নিয়ম মেনে দোকান চালানো কোনদিনও কারো পক্ষে সম্ভব নয়।
সরেজমিন নগরীর কয়েকটি সেলুনে গিয়ে দেখা যায়, ১৪ শর্তের মধ্যে সেলুন খোলার আগে জীবাণুমুক্তকরণ সামগ্রী, প্রবেশপথে তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণে সরঞ্জাম স্থাপন, ভিড় কমানোর জন্য রিজারভেশন ব্যবস্থা, সিট ব্যবধান দেড় মিটারের কম না রাখা এসব কোনোকিছুই চোখে পড়েনি। কর্মচারীদের কারো মুখে মাস্ক আছে আবার কারে মুখে নেই। অধিকাংশ কাস্টমারদের মুখেও মাস্ক ছিল না। অনেকটা আগের নিয়মেই চলছে সব সেলুন।
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক একজন সেলুন মালিক বলেন, ‘১৪ শর্ত দেওয়া হয়েছি শুনেছি। কিন্তু পড়িনি। সমিতি থেকে কোনোরকম নির্দেশনা এখনও পাইনি। আমরা ছোট দোকান এতগুলো শর্ত কীভাবে মানব? আমাদেরও তো চলতে হবে। যতটুকু সম্ভব ততটুকু মানার চেষ্টা করছি।’
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মহানগর সেলুন মালিক কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুভাষ শীল সুপ্রভাতকে বলেন, ‘১৪ শর্তে কী কী আছে আমি জানি না। তবে আমার দোকানে প্রতিদিন জীবাণুনাশক ব্যবহার করছি। আমি যেটা করছি অন্য কেউ সেটা নাও করতে পারে।’
১৪ শর্ত মানার ব্যাপারে সমিতির পক্ষ থেকে নির্দেশনা ও তদারকি থাকবে কি-না জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কোনো সদুত্তর দেননি।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মহানগর সেলুন মালিক কল্যাণ সমিতির সাবেক সভাপতি কেশব রায় সুপ্রভাতকে বলেন, ‘সরকারের নির্দেশনায় স্বাস্থ্যবিধির ১৪ শর্তের সব নিয়ম কোনদিনও কারো পক্ষে মানা সম্ভব নয়। এতগুলো নিয়ম মেনে দোকান খোলার চেয়ে বন্ধ রাখাই ভালো।’
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন সেখ ফজলে রাব্বি সুপ্রভাতকে বলেন, ‘সেলুন খোলার ব্যাপারে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে সেলুন মালিকদের যে ১৪ শর্ত দেওয়া হয়েছে তা অবশ্যই মানতে হবে। না হলে বিপদ বাড়বে। কারণ সেলুনের দোকানে ব্যবহৃত একই সরঞ্জাম একাধিক ব্যক্তির উপর ব্যবহার করা হয়। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের কঠোর মনিটরিং প্রয়োজন।’
এ মুহূর্তের সংবাদ