সেন্সরে পরীক্ষা হবে ওয়াসার পানি

‘রিয়্যাল টাইম ওয়াটার কোয়ালিটি’

নিজস্ব প্রতিবেদক »

রিয়্যাল টাইম ওয়াটার কোয়ালিটি মনিটর স্টেশনের মাধ্যমে সেন্সর দিয়ে পানির গুণগত মান পরীক্ষা করছে চট্টগ্রাম ওয়াসা। পাইলট প্রকল্প হিসেবে হালিশহর ও চকবাজার এলাকায় বাসানো হয়েছে দুইটি পৃথক স্টেশন। ৬০ লাখ টাকায় কেনা দুইটি যন্ত্রে প্রতি ৫ মিনিট পর পরীক্ষা হচ্ছে পানির গুনগত মান। সুফল পেলে আগামীতে আরও এমন স্টেশন করার পরিকল্পনা রয়েছে সংস্থাটির।

সংস্থা সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে পানির গুণমান (পিএইচ) পরীক্ষায় ‘রিয়্যাল টাইম ওয়াটার কোয়ালিটি’ নামে এই উন্নত প্রযুক্তি সংযোজন করে চট্টগ্রাম ওয়াসা। এ যন্ত্রে রয়েছে চারটি সেন্সর। যার মাধ্যেমে যাচাই করা যাবে পানির গুণগত মান। যার মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য পানির পিএইচের পরিমাণ, ক্লোরিনের পরিমাণ, ঘোলাটে পানির পরিমাণ যাচাই করা যাবে। যা প্রচলিত নিয়মে পরীক্ষা করতে নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবে পাঠিয়ে পরীক্ষা করতে হয়। এতে সময়ও অনেক বেশি লাগে। কিন্তু চট্টগ্রাম ওয়াসার নতুন এই সংযোজনে নিরাপদ ও সুপেয় পানি নিশ্চিত করবে পাঁচ মিনিটে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওয়াসার এক কর্মকর্তা বলেন, ‘এই পাইলট প্রকল্পে দুইটি যন্ত্র বসাতে ৬০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। অস্ট্রিয়ার ‘স্ক্যান’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে এ যন্ত্র দুইটি আমদানি করা হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানটি পানির গুনগত মান যাচাইকারক প্রতিষ্ঠান হিসেবে বেশ পরিচিত। হাইড্রোক্লুরো প্লাস নামে একটি দেশীয় প্রতিষ্ঠান বিদেশ থেকে আমদানি ও স্থাপন মেসিন বসানোর কাজ করেছে। এই উন্নত প্রযুক্তি সঠিকভাবে পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ করলে পানির মান পরীক্ষা করতে পারবে ১০ বছর পর্যন্ত।’
এ প্রকল্পের পরিচালক চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম বলেন, ‘রিয়্যাল টাইম ওয়াটার কোয়ালিটি- প্রযুক্তি ইতোমধ্যে চট্টগ্রামের হালিশহর বি-ব্লকে ও চকবাজারে স্থাপন করা হয়েছে। এ প্রযুক্তি সফল হলে ল্যাবের উপর নির্ভরতা কমবে। এছাড়াও অল্প সময়ের মধ্যে পানির গুণগত মান যাচাই করা সম্ভব হবে। আমাদের এই পাইলট প্রকল্প সফল হলে আগামীতে প্রযুক্তি আরও উন্নত করা হবে।’

এ প্রযুক্তি ব্যবহারের কারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামবাসীকে নিরাপদ পানি সরবরাহের লক্ষ্যে ওয়াসা কাজ করে যাচ্ছে। গত বছরে চট্টগ্রাম ওয়াসার ভূগর্ভস্থ পানিতে পাওয়া যায় ক্ষতিকর ‘কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া’।

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) এক গবেষণায় নগরের ৫ ওয়ার্ডের পানিতে বিষাক্ত ধাতু পাওয়ার বিষয়টি জানা যায়। এর প্রেক্ষিতে ‘রিয়্যাল টাইম ওয়াটার কোয়ালিটি’ প্রযুক্তির মাধ্যমে পানির পিএইচ-এর পরিমাণ, ক্লোরিনের শনাক্ত করা গেলেও পানিতে থাকা ক্ষতিকর ‘কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়ার’ ও বিষাক্ত ধাতু শনাক্ত করা যাবে এই যন্ত্রের মাধ্যমে।