১ নভেম্বর থেকে সেন্টমার্টিনে যেতে কোনো বাধা না থাকলেও পর্যটকদের দেখা মিলছে না দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপটিতে। ফলে যাত্রী সংকটের কারণে কোনো জাহাজ টিকিট বিক্রি করতে পারেনি। সে কারণে কোনো জাহাজ সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে ছেড়ে যায়নি। সেন্টমার্টিনে হোটেল ও রিসোর্ট ব্যবসায়ী, শ্রমিক, মাছ ব্যবসায়ী, ভ্যান ও অটোরিকশা, ইজিবাইক চালকসহ পর্যটন ব্যবসানির্ভর মানুষ আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন পর্যটকের জন্য।
তবে ডিসেম্বর থেকে দুই মাস রাতে থাকার অনুমতি থাকায় জাহাজ মালিকরা ডিসেম্বরের প্রথম দিন থেকে নিয়মিতভাবে জাহাজ চলাচলের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাছাড়া কক্সবাজার শহরের নুনিয়াছড়া বিআইডব্লিউটিএ জেটিঘাট থেকে সাগর পথে ১২০ কিলোমিটার দূরের পথ পাড়ি দিয়ে সেন্টমার্টিনে দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসা কঠিন। এ ভোগান্তির কারণে পর্যটকেরা সেন্টমার্টিন যেতে চাচ্ছেন না। যার কারণে পর্যাপ্ত পর্যটক পাওয়া যায়নি। রাতে থাকতে পারলে হয়ত পর্যটক বাড়তে পারে।
সেন্টমার্টিনের সি প্রবাল রিসোর্টের পরিচালক ও অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম সাংবাদিকদের জানান, ‘দ্বীপের যাদের নিজস্ব মালিকানায় হোটেল-রিসোর্ট, কটেজ এবং রেস্তোরাঁ রয়েছে কিংবা যারা ভাড়া নিয়েছেন, তাদের সবার দীর্ঘদিনের আশা-আকাঙ্ক্ষা এখন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। পরিবেশ রক্ষার নামে পর্যটকদের ভ্রমণে যে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে তাতে পর্যটকদের আগ্রহ অনেকটা কমে গেছে । তিনি বলেন, নভেম্বর থেকে পর্যটকদের আসার কথা ছিল। কিন্তু পর্যটক সংকটের কারণে জাহাজ কর্তৃপক্ষ পর্যন্ত এখনো যাত্রী নিয়ে দ্বীপের উদ্দেশে রওনা দিতে পারেনি। দ্বীপের দুই-আড়াই শতাধিক যেসব হোটেল-রিসোর্টে, কটেজ ও রেস্তোরাঁ রয়েছে সেগুলো এখন খালি পড়ে আছে ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে দিনে দুই হাজার পর্যটক আসার অনুমতি থাকলেও বাস্তবে কতজন আসবে তা বলা কঠিন। হোটেল-রিসোর্ট পরিচালনায় কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতনসহ নানা খরচ থাকে। কয়েক মাসের মৌসুমের আয় দিয়ে পুরো বছরের খরচ চালাতে হয়। এবারে সেই আয় পোষাবে কি না, তা নিয়েই বড় দুশ্চিন্তা।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফয়েজুল ইসলাম জানান, ‘দ্বীপের প্রায় ৯৫ শতাংশ মানুষ পর্যটন ও মাছ শিকার নির্ভর জীবিকা নির্বাহ করেন। সারাবছর দ্বীপবাসীরা অপেক্ষা করেন কয়েক মাসের পর্যটন মৌসুমের জন্য। এ মৌসুমের আয়ের ওপর নির্ভর করে তাদের সারাবছরের সংসার খরচ। নভেম্বর মাস থেকে পর্যটকদের দ্বীপে ভ্রমণে আর বাধা নেই তবুও কেউ আসছে না। কারণ এ মাসে সেন্টমার্টিনে রাত্রী যাপন করা যাবে না। নভেম্বর মাস শুরু ৯ দিনেও কোনো পর্যটক দ্বীপে আসেনি।
আসলে পর্যটন কর্তৃপক্ষ ও পরিবেশ অধিদপ্তরের উদ্দেশ্য নিয়ে মানুষ সন্দিহান। তারা কী করতে চায়, কী বলতে চায় তা পরিস্কার নয়। পরিবেশ তথা দ্বীপ রক্ষা যেমন জরুরি তেমনি করে দ্বীপের মানুষকে রক্ষা করাও জরুরি। নিয়মনীতি মেনে চলতে বাধ্য করে দ্বীপে পর্যটকদের যাওয়ার ও থাকার অনুমতি দেওয়া উচিত।
এ মুহূর্তের সংবাদ


















































