সালাহ উদ্দিন সায়েম :
নগর ছাত্রদলের সিনিয়র-জুনিয়র কর্মীদের সমন্বয়ে হচ্ছে কমিটি। ২০০০ সালের পর এসএসসি পাশ কর্মীদের নিয়ে আহ্বায়ক কমিটি গঠনের কথা থাকলেও সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদ। এখন ২০০০-২০০৪ সাল ও ২০০৫-২০০৬ সালে এসএসসি পাশ সিনিয়র-জুনিয়র কর্মীদের নিয়ে সমন্বয়ের মাধ্যমে কমিটি গঠন করা হচ্ছে। দুই পদ্ধতিতে কমিটির দুটি খসড়া তালিকা তৈরি করেছে ছাত্রদলের চট্টগ্রাম মহানগরের কমিটি গঠনের দায়িত্বে থাকা নেতৃবৃন্দ। সপ্তাহ খানেকের মধ্যে কমিটির তালিকা কেন্দ্রে জমা দেওয়া হবে। নগর ছাত্রদলের কমিটি গঠনের সাথে সম্পৃক্ত কেন্দ্রীয় দায়িত্বশীল একজন নেতা সুপ্রভাতকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
জানা গেছে, ২০১৩ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১০ দফা নগর ছাত্রদলের কমিটি পুনর্গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নানা কারণে কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া ভেস্তে যায়। সম্প্রতি ১১ দফায় নগর ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্র।
গত ৯ জুলাই ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ নগর কমিটির নেতাদের সাথে ভার্চুয়াল সভা করেন। সভায় ২০০০ সালের পর এসএসসি পাশ ও অবিবাহিত ছাত্রদের নিয়ে মহানগরের ৩১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। এ লক্ষ্যে দলীয় কার্যালয় নাসিমন ভবনে কমিটিতে পদ প্রত্যাশীদের আবেদন ফরম বিতরণ করে নগর ছাত্রদল।
২০০০ সালে এসএসসি পাশ কর্মীদের নিয়ে কমিটি গঠনের বিরোধিতা করে নগর ছাত্রদলের একাংশের কর্মীরা। তারা এ নিয়ে নগর বিএনপির দলীয় কার্যালয় নাসিমন ভবনে বিক্ষোভ করেন। তারা নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্করকে অবরুদ্ধও করেছিলেন। পরে নগর বিএনপি নেতৃবৃন্দ ছাত্রদলের কেন্দ্রের কাছে সিনিয়র-জুনিয়র কর্মীদের সমন্বয়ে কমিটি করার সুপারিশ করেন। এরপর ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ তাদের পূর্ববর্তী সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন।
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল গতকাল সুপ্রভাতকে বলেন, নগর ছাত্রদলের ২০০০-২০০৪ সাল ও ২০০৫-২০০৬ সালে এসএসসি পাশ সিনিয়র-জুনিয়র কর্মীদের নিয়ে সমন্বয়ের মাধ্যমে কমিটি গঠন করা হচ্ছে। এর মধ্যে দলের আন্দোলন-সংগ্রামে ভূমিকা রাখা ত্যাগী ও যোগ্য কর্মীদের বেছে নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে কমিটির একটা খসড়া তালিকা তৈরি করা হয়েছে। শিগগিরই কমিটি ঘোষণা করা হবে।
জানা গেছে, আহ্বায়ক কমিটির পরিধি হতে পারে ৩১ কিংবা ৫১ সদস্যের।
২০১৩ সালের ১১ জুলাই গাজী মো. সিরাজ উল্লাহকে সভাপতি ও বেলায়েত হোসেন বুলুকে সাধারণ সম্পাদক করে নগর ছাত্রদলের ১১ সদস্যের আংশিক কমিটি গঠন হয়। এর মধ্য কমিটির এক যুগ্ম সম্পাদক জালাল উদ্দিন সোহেল মারা গেছেন। তিন মাসের জন্য গঠিত এই কমিটি এখন ৭ বছর মেয়াদ পার করেছে। এর মধ্যে ছাত্রদলের ১০ সদস্য সবাই কেউ বিএনপি, কেউ যুবদল ও কেউ স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটিতে প্রবেশ করেছেন। তারা এখন একসাথে দুটি সংগঠনের পদে দায়িত্ব পালন করছেন।
নগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলু বলেন, যোগ্যতার মানদ- নির্ধারণ নিয়ে জটিলতা তৈরি হওয়াতে কেন্দ্র এখন ২০০০-২০০৪ সাল ও ২০০৫-২০০৬ সালে এসএসসি পাশ কর্মীদের সমন্বয়ের মাধ্যমে কমিটি গঠন করতে যাচ্ছে।
২০০০-২০০৪ সালে এসএসসি পাশ কর্মীদের নিয়ে নগর ছাত্রদলের কমিটির যে খসড়া তালিকা তৈরি করা হয়েছে তাতে প্রথম সারির পাঁচজন কর্মীর নাম জানা গেছে। এর মধ্যে আহ্বায়ক পদে দুজনের নাম রয়েছে। এরা হলেন, ইফতেখার উদ্দিন নিবলু ও মহসিন কবির আপেল। নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেনের অনুসারী নিবলু নগরীর আকবর শাহ থানা এলাকায় থাকেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমানের অনুসারী আপেল থাকেন নগরীর পাঁচলাইশ এলাকায়।
বাকি তিনজন হলেন-রিফাত হোসেন শাকিল, গাজী শওকত, নিয়াজ মোরশেদ খান ও নওশেদুর রহমান।
২০০৫-২০০৬ সালে এসএসসি পাশ কর্মীদের কমিটির যে খসড়া তালিকা তৈরি করা হয়েছে তাতে ১০ জন কর্মীর নাম জানা গেছে। এরা হলেন-সাইফুল আলম, তরিকুল ইসলাম তানভীর, আসিফ চৌধুরী লিমন, শরিফুল ইসলাম তুহিন, জিএম সালাউদ্দিন কাদের, সামিয়াত আমিন জিসান, শামসুদ্দিন, জহির উদ্দিন বাবর, ফখরুল ইসলাম শাহীন ও আলাউদ্দিন আলো।
প্রসঙ্গত, নগর ছাত্রদলের কমিটি গঠনের সাথে সম্পৃক্ত কেন্দ্রীয় দায়িত্বশীল একটি সূত্র থেকে এ খসড়া তালিকার তথ্য জানা গেছে।