একবার করোনা সংক্রমণ থেকে সেরে উঠেছেন। সম্পূর্ণ সুস্থ। আর হয়তো কখনও সংক্রমণ হবেও না। কিন্তু তার মানে কি একটা খারাপ স্মৃতি হিসেবেই শুধু থেকে যাবে এই সংক্রমণ? বোধ হয় না। সারা জীবন হয়তো এই সংক্রমণের ক্ষত বয়ে বেড়াতে হবে। এমনই আশঙ্কা বিজ্ঞানীদের। এই সংক্রমণের ফলে বদলে যেতে পারে ব্যক্তিত্ব, দুর্বল হয়ে যেতে পারে স্মৃতিশক্তি, কমে যেতে পারে কাজ করার ক্ষমতা।
সম্প্রতি ‘দ্য ইউরোপিয়ান অ্যাকাডেমি অব নিউরোলজি’ (ইএএন)-র সপ্তম কংগ্রেসে ইতালির মিলান বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সমীক্ষাপত্র তুলে ধরে বক্তারা দাবি করেছেন, এমন প্রচুর উদাহরণ গোটা বিশ্ব জুড়েই পাওয়া যাচ্ছে, যেখানে সংক্রমণ সেরে গেলেও সম্পূর্ণ রূপে আর আগের মানুষটি ফিরে আসছেন না। বদলে যাচ্ছে তাঁর ব্যক্তিত্ব, আচার আচরণ। স্নায়ুর উপর করোনাভাইরাসের মারাত্মক প্রভাবের কারণেই এমনটা হয় বলে দাবি করা হয়েছে।
কোভিড থেকে সেরে ওঠার ২ মাস পরে বহু রোগীর স্নায়ু পরীক্ষা করে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁদের মস্তিষ্কে এমআরআই করা হয়েছে। বিজ্ঞানীদের দাবি, প্রতি ৫ জনের ১ জন ‘পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার’-এ ভুগছেন। অবসাদেও আক্রান্ত হচ্ছেন প্রায় ১৬ শতাংশ। এর সব ক’টির প্রভাব পড়ছে ব্যক্তিত্বের উপর।
এছাড়াও সেরে ওঠা রোগীদের মধ্যে বেশ কয়েকটি সমস্যা দেখা যাচ্ছে পরবর্তী সময়ে।
- কর্মক্ষেত্রে যে ধরনের কাজ করতে হয়, তার দক্ষতা কমছে
- নানা ধরনের ভাবনার ক্ষমতা কমছে
- কোনও তথ্য জানার পরে, সেটি আত্মস্থ করতে সমস্যা হচ্ছে
- রং বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে
- কোনও বস্তু কতটা দূরে আছে, তা অনেকেই বুঝতে পারছেন না
বিভিন্ন মাত্রায় রোগীদের মধ্যে এই লক্ষণগুলি দেখা যাচ্ছে। সবচেয়ে বড় কথা, প্রায় ২৫ শতাংশের মধ্যে এই সব ক’টি লক্ষণ একসঙ্গে দেখা যাচ্ছে।
করোনার কারণে হাসপাতালে যাঁদের চিকিৎসা হয়, তাঁদের ফুসফুসের সমস্যাটাই সবচেয়ে প্রকট ভাবে দেখা যায় এবং সেটির চিকিৎসাই প্রাধান্য পায়। কিন্তু দূরের ভবিষ্যতে অন্য সমস্যা অপেক্ষা করে রয়েছে বলে সতর্ক করছেন চিকিৎসকেরা।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা