রাঙ্গুনিয়ায় বৌদ্ধ ভিক্ষুর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠানে ভার্চুয়াল বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী
‘প্রকৃতপক্ষে সকল ধর্মের মর্মবাণী হচ্ছে মানবসেবার মাধ্যমে সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি স্থাপন করা, মানুষের মঙ্গল করা। ধর্মের এই মর্মবাণী সকলে ধারণ করতে পারলেই পৃথিবীতে কোন হানাহানি, মারামারি এবং অশান্তি আর থাকবে না।’
গতকাল শুক্রবার বিকেলে রাঙ্গুনিয়া সংঘরাজ ভিক্ষু সমিতি ও রাঙ্গুনিয়া উপজেলা বৌদ্ধ সমিতির সভাপতি এবং উপজেলার কেন্দ্রীয় সৈয়দবাড়ি ধর্মচক্র বিহারের অধ্যক্ষ প্রয়াত বিমলজ্যোতি মহাস্থবিরের আন্ত্যেষ্টিক্রিয়া উদ্যাপন অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, আমাদের এই বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ক্ষেত্রে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের কাছে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এই দেশে হিন্দু মুসলিম, বৌদ্ধ খ্রিষ্টান, বাঙালি, মগ, চাকমা সকল ধর্মের সকল জাতির মানুষের যে সহাবস্থান এবং সাম্প্রদায়িক সম্পর্ক তা পৃথিবীতে বিরল।
দুইদিনব্যাপী অনুষ্ঠানের শেষ দিনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভার সংঘরাজ জ্ঞানশ্রী মহাস্থবির। অনুষ্ঠানে উদ্বোধক ছিলেন রাঙ্গুনিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান স্বজন কুমার তালুকদার। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভার উপসংঘরাজ ধর্মপ্রিয় মহাস্থবির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বিমান চন্দ্র বড়ুয়া, রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার মেয়র মো. শাহজাহান সিকদার, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ সদস্য কামরুল ইসলাম চৌধুরী, সুখবিলাস ফিসারিজ অ্যান্ড প্ল্যানটেশনের চেয়ারম্যান এরশাদ মাহমুদ, ধর্মসেন মহাস্থবির, মনিলাল তালুকদার, প্রসেনজিৎ তালুকদার।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র পাকিস্তান থেকে বেরিয়ে এসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র গঠিত হয়েছিল। আমাদের এই দেশে মাঝে মধ্যে সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প মাথাচাড়া দিয়ে প্রভাব ফেলার চেষ্টা চালায়। কিন্তু আমাদের এই অসাম্প্রদায়িকতা এই অপশক্তিকে সবসময় দমন করেছে। এখনও একটি সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী আমাদের এই দেশকে, সমাজকে হেয় করার চেষ্টা করে।
তিনি বলেন, আমাদের এই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এবং সম্মিলিত শক্তির কাছে তারা অতীতে যেমন পরাভূত হয়েছে তেমনি বর্তমান এবং ভবিষ্যতেও পরাভূত হবে। আমাদের প্রথম পরিচয় আমরা বাঙালি। সকল ধর্মের মানুষের মিলিত রক্তস্রোতের বিনিময়ে এই বাংলাদেশ রচিত হয়েছে। সাম্প্রদায়িক অপশক্তির স্থান বাংলাদেশে হতে পারে না।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিমল জ্যোতি মহাস্থবির বৌদ্ধ ধর্মের একজন ভিক্ষু ছিলেন। কিন্তু তিনি হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সবধর্মের মানুষের প্রিয় একজন মানুষ ছিলেন। তিনি তার দয়া, মমতা ও ভালবাসা দিয়ে সমস্ত মানুষের ভালবাসা এবং শ্রদ্ধার মানুষ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছেন। তার বর্ণাঢ্য জীবন থেকে সব ধর্মের মানুষের অনেক কিছু শেখার আছে। তিনি তার আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব দিয়ে সব ধর্মের মানুষকে সহজে আপন করে নিতে পারতেন।
এ মুহূর্তের সংবাদ