চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) নির্বাচনের আর মাত্র ১ সপ্তাহ বাকি। নির্বাচনের দিন যত ঘনিয়ে আসছে নির্বাচনী উত্তাপও সেভাবে বাড়ছে। নির্বাচনী প্রচারের সাথে সাথে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ বাড়ছে। ইতিমধ্যে নির্বাচনী প্রচারে নিহত ও আহত হওয়ার খবর এসেছে, যা শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী পরিবেশের পরিপন্থি। অস্ত্রের ব্যবহার হয়েছে কোন কোন স্থানে, সহিংসতায় স্থানীয়দের সাথে বহিরাগতরাও অংশ নিচ্ছে। অবশ্য আইনশৃঙ্খলবাহিনীও বসে নেই, ধরপাকড় চলছে, পরস্পরবিরোধী মামলাও হচ্ছে। পুলিশের নানা তৎপরতা সত্ত্বেও ভোটারদের মনে দুশ্চিন্তা বাসা বেঁধেছে। নির্বাচন সহিংস মুক্ততা না হলে অন্তত নির্বাচনের আগে পরে পরিবেশ শান্তিপূর্ণ না হলে ভোটারদের মনে আস্থা ফিরে আসবে না।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহিংসতা সৃষ্টিকারী কাউকে ছাড় দেয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, নগরীর বেশ কয়েকটি ওয়ার্ড ও ভোটকেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ। এসব এলাকায় আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর টহল জোরদার করতে হবে। ঝুঁকিপূর্ণ ভোট কেন্দ্রগুলির জন্য অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিতে হবে। নির্বাচন এলে স্থানীয়ভাবে সন্ত্রাসী মাস্তানদের উপদ্রব বেড়ে যায়, তারা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে ঢুকে পড়ে কু-মতলব হাসিলে। এসব সন্ত্রাসী মাস্তানদের তালিকা নিশ্চয়ই পুলিশ প্রশাসনের কাছে আছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। ইদানিং উঠতি কিশোর তরুণদের নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ার রিপোর্টও পত্র-পত্রিকায় এসেছে। অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে যাতে তাদের সন্তান-স্বজন নির্বাচনী সহিংসতা-সংঘাতে না জড়ায়। প্রতিটি থানার অফিসার ইনচার্জকে নির্বাচনী পরিবেশ যাতে অশান্ত না হয় সে ব্যাপারে কঠোর হওয়ার জন্য তাদের বলেছেন মর্মে পত্রিকান্তরে প্রকাশ। সন্ত্রাস-মাস্তানদের বিরুদ্ধে এখন থেকেই অভিযান পরিচালনা করা উচিত।
নির্বাচন কমিশনের উচিত নির্বাচন সংক্রান্ত প্রতিটি অভিযোগ যথাযথ তদন্ত করে সুরাহা করা। এতে কমিশনের প্রতি প্রার্থীদের আস্থা বাড়বে। নির্বাচন কমিশনের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে নগরীর ৬ থানার অফিসার ইনচার্জকে বদলি করেছে সিএমপি।
দেশে সদ্যসমাপ্ত দ্বিতীয় দফা পৌরসভার নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি বাড়ার সচিত্র প্রতিবেদন বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় এসেছে। এর আগের নির্বাচনগুলিতে ভোটারখরা ছিলো, ফলে আশানুরূপ ভোটার না আসায় জনমতের প্রতিফলন ঘটেনি যথাযথভাবে।
সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও অধিক ভোটারের উপস্থিতি নির্বাচনী পরিবেশকে প্রাণবন্ত করে তোলে, এর মাধ্যমে গণতন্ত্রের বিকাশও নিশ্চিত হয়। সকল রাজনৈতিক দল, প্রার্থীকে অবশ্যই সচেতন হতে হবে যাতে নির্বাচনের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ থাকে। ভোটাররা যাতে ভোট কেন্দ্রে আসে সে জন্য প্রার্থীদের প্রচার প্রচারণা, জনসংযোগ বাড়াতে হবে। ডিজিটাল প্রযুক্তির আশ্রয় নিতে হবে।
নির্বাচন কমিশন এখন থেকে আইনের প্রয়োগে কঠোর হলে ভোটাররা আশ্বস্ত হবে। নাগরিকগণ সংঘাত ও সহিংসতামুক্ত চসিক নির্বাচন দেখতে চায়।
মতামত সম্পাদকীয়