নগরীর পাহাড়তলী থানাধীন এলাকায় মেসার্স খাজা ভান্ডারের চালের গুদামে এনএসআই চট্টগ্রাম মেট্রো শাখার গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সেনাবাহিনী, ভোক্তা অধিকার ও পাহাড়তলী থানা পুলিশের সমন্বয়ে অভিযান চালানো হয়।অভিযোগ ছিল, প্রতিষ্ঠানটি খাদ্য অধিদপ্তরের মোটা চাল সংগ্রহ করে রাখতো। পরে তা মেশিনে চিকন চালে পরিণত করে বিভিন্ন ব্রান্ডের বস্তায় বাজারজাত করতো। এবং মেসার্স আশুগঞ্জ ট্রেডার্স, তীর মার্কা সুপার চাল, প্রজাপতি মার্কা, নুরজাহান ব্রান্ড, চিংড়ি মাছ মার্কা, আপেল ব্রান্ডসহ বিভিন্ন ব্রান্ডের নামে চাল বস্তায় ভরে বিক্রি ও গুদামজাত করে আসছিলো প্রতিষ্ঠানটি। অভিযানকালে চালের বস্তায় ওজনেও কম পাওয়া গেছে।
এমন একটি অপরাধের জন্য কর্তৃপক্ষ মেসার্স খাজা ভান্ডারের মালিক মো. শাহাবুদ্দিনকে নগদ ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়াও মালিকপক্ষকে মৌখিক সতর্কতাসহ লিখিত কারণ দর্শানোর নির্দেশনা দেয়া হয় এবং বিভিন্ন ব্রান্ডে মোড়কজাতকৃত বস্তা কেটে বাজারজাতকরণের অনুপযোগী করা হয়।
বাজারে চিকন-মোটা দুই ধরনের চালই পাওয়া যায়। আগের দিনে মোটা চালের ভাতের কদর ছিল মধ্যবিত্তের ঘরে। তবে দিন বদলে মোটার জায়গা দখল করে নিচ্ছে চিকন চাল। অটোমেটিক মেশিনের চাল দেখতে সুন্দর সরু-ঝরঝরে, না বেছেই সহজে চড়িয়ে দেওয়া যায় চুলায়। ফলে এমন চালের দিকে সাধারণ মানুষের ঝোঁক বেশি। যেমন, দেশে মিনিকেট নামে কোনো ধান নেই। এই নামের কোনো ধানের আবাদও হয় না দেশে। এমনকি এগুলো কেউ আমদানিও করে না। কিন্তু বাজারগুলোতে এই নামের চাল বিক্রি হচ্ছে অবাধে। নিষিদ্ধ হওয়ার পরও অসাধু ব্যবসায়ীরা এই নামে চাল বিক্রি করছেন। এতে প্রতারিত হচ্ছেন ভোক্তারা। তবে ব্যবসায়ীদের দাবি, চাহিদার কারণেই বাজারে এ নামে চাল বিক্রি করতে হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মত, চালের উপরিভাগের আবরণেই প্রোটিন, ভিটামিন ও মিনারেল বেশি থাকে। আর পুরো চালেই থাকে কার্বোহাইড্রেট। চাল সরু করতে উপরের আবরণ তুলে ফেলায় হারিয়ে যায় প্রোটিন, ভিটামিন ও মিনারেল।
এদের অপরাধ একাধিক। একদিকে সরকারি চাল নিজস্ব গুদামে রাখা অন্যদিকে চাল সরু করতে গিয়ে চালের অপচয় ও খাদ্যগুণ নষ্ট করা। এরপরও তাদের যে শাস্তি দেওয়া হয়েছে তাকে গুরু পাপে লঘু শাস্তি বলা যায় আরকি।