নিজস্ব প্রতিবেদক »
সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে তিনটি সংস্থা ৪ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এবার রেকর্ড বৃষ্টি হওয়ায় এবং এ প্রকল্পগুলো শেষ না হওয়ায় প্রবল জলাবদ্ধতায় নগরবাসী কষ্ট পেয়েছেন। আমাদের দ্বন্দ্ব-বিভেদ ভুলে সমন্বয়ের মাধ্যমে চট্টগ্রামের স্বার্থে একযোগে কাজ করতে হবে।
তিনি গতকাল সোমবার টাইগারপাস চসিক ভবনে চট্টগ্রামে মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন বিষয়ক আন্তঃদপ্তর সমন্বয় সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
সভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে মেয়র জলাবদ্ধতার কারণ হিসেবে প্রধান ৩৬টি খালের খনন কাজ চলমান থাকা, যার ফলে অনেক খালের মাটি এখনও অনোত্তলিত থাকা, আরো অপ্রধান ২১টি খাল প্রকল্পের আওতায় না থাকা, সেগুলো দখল এবং ভরাট হয়ে যাওয়া, ময়লার আস্তরণ পড়ে কর্ণফুলী নদীর পানি ধারণক্ষমতা অতীতের তুলনায় কমে যাওয়া, জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় স্লুইস গেইটের কাজ অসম্পন্ন থাকা, পাম হাউজের কাজ অসম্পন্ন থাকা, রিটাইনিং ওয়ালের কাজ অসম্পন্ন থাকা, জলাধারগুলো ভরাট হয়ে যাওয়া, ব্রিজের নিচ দিয়ে পাইপ দিয়ে বিভিন্ন রকম তারের সংযোগ স্থাপন করা ইত্যাদিকে দায়ী করেন।
জলাবদ্ধতা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘পানি উঠবে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতেও পানি উঠে। কিন্তু পানি দ্রুত নিষ্কাশিত হতে হবে। পানি উঠার পর কত দ্রুত পানি নিষ্কাশন করা হচ্ছে সেটা হলো বিষয়।’
সিটি করপোরেশনের প্রশংসনীয় ভূমিকার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘গতবছর কোরবানির সময় আমরা ৭ ঘণ্টার মধ্যে কোরবানির বর্জ্য অপসারণ করেছি। এ বছরে তা করেছি ৫ ঘন্টার মধ্যে।’
চট্টগ্রামের উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় থাকা জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের স্লুইসগেট ও পাম হাউজের চলমান কাজ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘স্লুইট গেইটগুলোর কাজ এখনও সম্পন্ন হয়নি। পাম হাউজের কাজও সম্পন্ন হয়নি। স্লুইস গেটের কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন না হওয়ার ফলে জোয়ারের পানি শহরে ঢুকে পড়েছে। যদি এগুলো সম্পন্ন হতো তাহলে প্রবল জোয়ারেও শহরে পানি ঢুকতে পারতো না।’
মেয়র বলেন, ‘আমরা আজকে বসেছি, প্রকল্পের অধিকাংশ কাজ ১ বছরের মধ্যে সম্পন্ন হবে। আমরা সিটি করপোরেশন, সিডিএ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, বন্দর, রোড অ্যান্ড হাইওয়েসহ সকল সংস্থা মিলে যে সমস্ত ত্রুটি আছে সেগুলো চিহ্নিত করে সমন্বিতভাবে আলোচনার মাধ্যমে এগুলো সমাধান করবো। কাজগুলোকে এগিয়ে নিয়ে যাবো। আমরা চট্টগ্রামকে সুন্দর বাসযোগ্য জলাবদ্ধতামুক্ত নগর হিসেবে গড়ে তোলার জন্য কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে যাবো।’
সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মু. আনোয়ার পাশা, চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম ফজলুল্লাহ, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী মাহমুদুল হোসেন খান, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সচিব মিনহাজুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আবু রায়হান দোলন, পুলিশের এডিশনাল কমিশনার এম এ মাসুদ,সিডিএ’র ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী হাবিবুর রহমান, সিডিএ জলাবদ্ধতা প্রকল্পের পরিচালক লে. কর্নেল মো. শাহ আলী, চসিকের সচিব খালেদ মাহমুদ, চসিকের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মর্কতা মুহাম্মদ আবুল হাশেম, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মুনিরুল হুদা, কর্ণফুলী সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক রাজীব দাশ, প্যানেল মেয়র গিয়াস উদ্দিন, কাউন্সিলর মোবারক আলী, শৈবাল দাস সুমন, আব্দুল মান্নান এবং মো. এসরারুল হক।