স্পিডবোট উল্টে শিশুর মৃত্যু, নিখোঁজ আরও তিন শিশু
নিজস্ব প্রতিনিধি, সন্দ্বীপ »
সন্দ্বীপে স্পিডবোট উল্টে নুসরাত জাহান আনিকা (১২) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় নিখোঁজ রয়েছে তিন শিশু। গতকাল সন্দ্বীপের গুপ্তছড়া ঘাটের কাছে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, ২০ যাত্রী নিয়ে বুধবার সকাল সোয়া নয়টায় কুমিরা ঘাট থেকে ছেড়ে আসা স্পিডবোটটি সন্দ্বীপের গুপ্তছড়া ঘাটের কাছাকাছি এসেই দুর্ঘটনা কবলিত হয়ে উল্টে যায়। এতে ১৬ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হলেও তিন শিশু এখনো নিখোঁজ রয়েছে।
জানা গেছে, স্থানীয় একটি হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নুসরাত জাহান আনিকা নামে এক শিশুর মৃতদেহ বেডে পরে আছে, তার আরো দুটি জমজ বোন আদিবা ও আরিফা (৬) নৌ দুর্ঘটনার পর থেকে এখনো নিখোঁজ, তারা মগধরা আমতলী এলাকার বড় ছাইয়ার বাড়ীর আলাউদ্দিনের মেয়ে। অন্যদিকে হাসপাতালের অন্য একটি ওয়ার্ডে দুর্ঘটনায় উদ্ধার হওয়া শিমা (৩৫) ও তার ৫ বছরের মেয়ে আনিশাকে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. এ এস এম নাজেম। তবে শিমার ১০ বছরের ছেলে সৈকত এখনো নিখোঁজ। অপরদিকে দুপুরের দিকে মাইটভাঙ্গা ঘাটের কাছ থেকে জীবিত উদ্ধার হওয়া ৫ জনকে দ্রুত চিকিৎসার জন্য স্থানীয় সন্দ্বীপ মেডিক্যাল সেন্টার হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এরা হচ্ছে মুছাপুরের মো. আরিফ (৩১) ও তার স্ত্রী রূপা বেগম (২১) ও বিআইডব্লিউটিসি’র জাহাজের মাস্টার মো. সাহাবউদ্দিন (৫০) ও তার দুই ছেলে মো. আবদুর রহমান আরাফাত (১৫) ও মো. আবদুল মন্নান রিফাত (১৮)। তারা হচ্ছেন মুছাপুর ৩ নম্বর ওয়ার্ডের দাদনের গো বাড়ীর। সকাল ১১টায় গুপ্তছড়া ঘাটের ইজারাদের অফিসে তথ্য সংগ্রহে গিয়ে দেখা যায় অফিসে তালা মারা এবং স্টাফরা লাপাত্তা।
এদিকে দুর্ঘটনার খবর পেয়ে গুপ্তছড়া ঘাটে ছুটে যান সন্দ্বীপ উপজেলা চেয়ারম্যান মাস্টার শাহজাহান বিএ, উপজেলা নির্বাহী অফিসার সম্রাট খিসা, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মাইনউদ্দিন মিশন, পৌর মেয়র মোক্তাদের মাওলা সেলিম, সন্দ্বীপ থানার ওসি বশির আহমদ খান। তারা দুর্ঘটনা কবলিতদের উদ্ধার তৎপরতার খোঁজ খবর নেন।
উদ্ধার হওয়া যাত্রীরা জানান, স্পিডবোটের পাখায় জেলেদের মাছের জাল আটকে যাওয়ায় বোট উল্টে যায়। তবে সকাল থেকেই সাগর উত্তাল ও প্রবল বাতাস থাকা সত্ত্বেও ঘাট ইজারাদার কেন ঝুঁকি নিয়ে বোট চালালো তার সঠিক জবাব মেলেনি।
স্থানীয়রা জানান, এপ্রিল মাসটা যেনো সন্দ্বীপের জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে ’৯১ এর ২৯ এপ্রিলের প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড়, ২০১৭ সালের ২ এপ্রিল লাল বোট ডুবিতে ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।