রাজু কুমার দে, মিরসরাই »
মিরসরাইয়ে বৈদুত্যিক খুঁটি রেখেই চলছে সড়কের উন্নয়ন কাজ। উপজেলার খৈয়াছড়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত ‘দুয়ারু’ নামের এই সড়কটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সঙ্গে সংযুক্ত। এই সড়কে অত্র ইউনিয়নের প্রায় তিন গ্রামের ৫ হাজার জনসাধারণ চলাফেরা করে। দালান ঘর নির্মাণ, কৃষি কাজে ব্যবহৃত ভারি যানবাহন চলার কারণে গত কয়েক বছর ধরেই সড়কটির বেহাল অবস্থা। জনদুর্ভোগ লাঘবে সড়কটির সংস্কার কাজ শুরু হলেও নতুন করে জটিলতা তৈরি হয়েছে সড়কের ওপরে থাকা বিদ্যুতের খুঁটি নিয়ে। খুঁটি সরাতে উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় ও বিদ্যুৎ বিভাগের মধ্যে চিঠি চালাচালি হলেও কার্যত কোনো ফল পাওয়া যায়নি। ফলে খুঁটি রেখেই কাজ করেছে কর্তৃপক্ষ। এতে যানবাহন চলাচলে সমস্যার পাশাপাশি দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
জানা গেছে, খৈয়াছরা ইউনিয়নের ‘দুয়ারু’ নামের এই সড়কটি দীর্ঘ ১ হাজার ১০০ মিটার। গত বছর সড়কটি সংস্কারের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হলে কাজ পায় ‘রাজিয়া এন্টারপ্রাইজ’। ১ কোটি ৫৩ লাখ টাকা ব্যায়ে সড়কটির উপরে বসনো হচ্ছে বক্ল। পূর্বে সড়কটি সরু থাকায় ভারি যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হতো। তাই বর্তমানে সড়কটি প্রশস্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। আর এতে প্রধান প্রতিবন্ধকতা হিসেবে দেখা যায় বিদ্যুতের খুঁটি। প্রায় এক হাজার ১০০ মিটারের সড়কের ওপর ১০টি বিদ্যুতের খুঁটি রয়েছে। কোনটি সড়কের দুই থেকে আড়াই ফুট আবার কোনটি তিন ফুট। আবার কোনটি সড়কের একেবারে মাঝে রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, খুঁটিগুলো রাস্তার মাঝে বসানোয় রাস্তা দিয়ে ঠেলাগাড়ি, ভ্যান ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল করতে সমস্যা হচ্ছে। চলাচল করলেও এক পাশের গাড়ি দাঁড়িয়ে থেকে আরেক পাশের গাড়ি চলাচল করতে হয়। ফলে অসুস্থ রোগীকে অনেক দূর হাঁটিয়ে গাড়িতে তুলতে হয়। রাস্তা দিয়ে বড় গাড়ি প্রবেশ না করায় মালামাল কাঁধে করে আনা-নেওয়া করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও ইউপি সদস্য মোহাম্মদ নুর উদ্দিন জানান, বারবার অভিযোগ দিলেও খুঁটিগুলো সরাতে মিরসরাই পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। খুঁটি না সরিয়ে উন্নয়ন কাজ করলে মানুষের ভোগান্তির আরো বাড়বে।
খৈয়াছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহফুজুল হক বলেন, বিদ্যুৎতের খুঁটি গুলা সরিয়ে নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। বাজেটের কিছু জটিলতা রয়েছে। বাজেটে পেলে বিদ্যুৎ বিভাগ অতি দ্রুত খুঁটিগুলো সরিয়ে নিবে বলে জানিয়েছে।
রাজিয়া এন্ট্রারপ্রইজের স্বত্ত্বাধিকারি ঠিকাদার মো. শাহজাহান মিয়াজী বলেন, বৈদুত্যিক খুঁটিগুলো সরানোর জন্য উপজেলা প্রকৌশলী অফিস থেকে বিদ্যুৎ অফিস বারবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। তারা কিছু দিনের মধ্যে খুঁটিগুলো সরিয়ে নিবে বলেছে।
মিরসরাই উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিজান উদ্দিন বলেন, সড়কে বৈদ্যুতিক খুঁটি সরানোর কাজ পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগের। তাদের চিঠি দেওয়া হয়েছে। যে কোনো সময় তারা সরিয়ে নিবে।
মিরসরাই পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার সাইফুল আহম্মদ বলেন, এলজিইডি চিঠি দেয়ার পর তাদের প্রতিনিধি দল আসলে আমরা খুঁটি সরিয়ে দিই। আমাদের কাছে চিঠি দিলে হবে না। তাদের প্রতিনিধি দল এসে কোন খুঁটি কোন জায়গায় পড়েছে তা দেখিয়ে দেয়ার পর আমরা সরিয়ে নিবো।