সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন করতে হবে

নগর পূজা পরিষদের প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা

বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ নগরীর উদ্যোগে গতকাল সোমবার বিকালে আন্দরকিল্লা চত্বরে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
শারদোৎসব চলাকালীন চট্টগ্রামের প্রধান পূজামণ্ডপ জে এম সেন হলসহ সারা বাংলাদেশে অপশক্তি কর্তৃক প্রতিমা ভাংচুর, পূজা বন্ধ, মঠ-মন্দির-ঘর বাড়ি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ, হত্যাসহ পূজার্থীদের উপর হামলায় জড়িত দুষ্কৃতিকারীদের দ্রুত গ্রেফতার এবং দ্রুত বিচার আইনে আলাদা আলাদা মামলা করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
নগর পূজা পরিষদের সভাপতি লায়ন আশীষ কুমার ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক হিল্লোল সেন উজ্জ্বলের সঞ্চালনায় সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মিলন কান্তি দত্ত। প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ পূজা পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটার্জী।
আরও বক্তব্য রাখেন জন্মাষ্টমী পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি সুজিত কুমার বিশ্বাস, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী প্রবীর কুমার সেন, কেন্দ্রীয় পূজা পরিষদের যুগ্ম সাধারণ-সম্পাদক শ্যামল পালিত, নগর পূজা পরিষদের সাবেক সভাপতি সাধন ধর, অরবিন্দ পাল অরুন, অ্যাডভোকেট চন্দন তালুকদার, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ নগরীর সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিতাই প্রসাদ ঘোষ, ইসকনের বিভাগীয় সম্পাদক চিন্ময় কৃষ্ণদাস ব্রক্ষ্মচারী মহারাজ, প্রবর্তক ইসকন মন্দিরের লীলারাজ গৌরদাস মহারাজ, কাউন্সিলর জহরলাল হাজারী, শৈবাল দাশ সুমন, পুলক খাস্তগীর, রুমকি সেনগুপ্ত, নগর পূজা পরিষদের সহ-সভাপতি অধ্যাপক অর্পন কান্তি ব্যানার্জী, লায়ন দুলাল চন্দ্র দে, সুমন দেবনাথ, রত্নাকর দাশ টুনু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুজিত দাশ ও শ্রীপ্রকাশ দাশ অসিত, সহ-সভাপতি অরূপ রতন চক্রবর্তী, সাংবাদিক প্রদীপ শীল, বিপ্লব কুমার চৌধুরী, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মিথুন মল্লিক, অ্যাডভোকেট নিখিল কুমার নাথ, সজল দত্ত, অ্যাডভোকেট নটু চৌধুরী, বিপ্লব সেন, সাংগঠনিক সম্পাদক অঞ্জন দত্ত, দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট টিপু শীল জয়দেব, বৃষ্টি বৈদ্য, বিভিন্ন সংগঠনের সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম অখণ্ডমণ্ডলী সভাপতি মনোতোষ মজুমদার, চট্টগ্রাম জেলা সৎসঙ্গের সাধারণ সম্পাদক লায়ন শংকর সেনগুপ্ত, মনোহরখালী দুর্গাপূজা উদ্যাপন পরিষদের পক্ষে অনুপ বিশ্বাস, জুয়েলার্স সমিতি চট্টগ্রামের সাবেক সহ-সভাপতি প্রণব সাহা, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংষ্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. শিপক নাথ, অধ্যাপিকা বিজয়লক্ষ্মী দেবী, দক্ষিণ জেলা পূজা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রুবেল দেব প্রমুখ।
সমাবেশে প্রধান অতিথি মিলন কান্তি দত্ত বলেন, সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন এখন সময়ের দাবি। অতীতে সনাতন সম্প্রদায়ের উপর যে হামলা হয়েছিল তার সঠিক বিচার না হওয়ায় আজ সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী শারদোৎসব চলাকালীন হামলা চালানোর দুঃসাহস দেখিয়েছে। আজ এই সমাবেশ থেকে সরকারের কাছে আহ্বান জানাই অতীতে ছাড় দেয়া হলেও এবার হামলায় যারা জড়িত তাদের যেনো আর ছাড় দেয়া না হয়। তা না হলে পূজা উদ্যাপন পরিষদের পক্ষ থেকে বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
সমাবেশে প্রধান বক্তা নির্মল কুমার চ্যাটার্জী বলেন, অবিলম্বে প্রকৃত দোষীদের গ্রেফতার করে দ্রুতবিচার আইনে বিচার করার জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।
সমাবেশে মহানগর পূজা পরিষদের পক্ষ থেকে সভাপতি লায়ন আশীষ কুমার ভট্টাচার্য বাংলাদেশ সরকারের কাছে ৭ দফা দাবি পেশ করেন। দাবিসমূহ হলো ’৭২ এর সংবিধানের আলোকে সকল সম্প্রদায়ের সমঅধিকার নিশ্চিত করা, সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন করা, এবারের শারদোৎসব চলাকালীন চট্টগ্রামের প্রধান পূজামণ্ডপ জেএম সেন হলসহ সারা বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি কর্তৃক দুর্গা প্রতিমা ভাংচুর, মঠ-মন্দিরে হামলা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, হত্যা ও পূজার্থীদের উপর হামলায় জড়িত দুষ্কৃতিকারীদের দ্রুত গ্রেফতার এবং দ্রুত বিচার আইনে আলাদা আলাদা মামলা করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া, ক্ষতিগ্রস্ত মঠ-মন্দির, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ঘরবাড়ি সরকারি ব্যবস্থাপনায় নির্মাণ, নিহত ব্যক্তির পরিবারকে রাষ্ট্রীয়ভাবে সহযোগিতা করা, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় করা, পূজামণ্ডপ, মঠ-মন্দির, ঘর-বাড়ি, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানে হামলায় জড়িতদের খুঁজে বের করে এবং হামলার কারণ অনুসন্ধানে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত একজন বিচারপতির মাধ্যমে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করার জোর দাবি জানানো হয়।
লায়ন আশীষ কুমার ভট্টাচার্য বলেন, সরকার আমাদের এই দাবিসমূহ অবিলম্বে বাস্তবায়ন করবে, না হয় পূজা পরিষদ থেকে বৃহত্তর কর্মসূচির ডাক দেয়া হবে।
বিজ্ঞপ্তি