২১ রানে ৬ উইকেট নেন সিরাজ, ভাঙলেন ৩৩বছরের রেকর্ড
সুপ্রভাত ডেস্ক
গতবারের এশিয়া চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কা শিরোপা ধরে রাখার সুযোগ পেয়েছিল। পুরো টুর্নামেন্টে আন্ডারডগ হিসেবে খেলে চমক দেখানো দলটি ফাইনালে ভারতের কাছে পাত্তাই পেলো না। রোববার দেশের মাটিতে বিব্রতকর ব্যাটিংয়ে হার মানলো তারা। শ্রীলঙ্কাকে গুঁড়িয়ে চ্যাম্পিয়ন হলো ভারত।
এশিয়া কাপের ফাইনালে বড় প্রত্যাশা নিয়ে শুরুতে ব্যাটিং নিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। কিন্তু ব্যাট করতে নামতেই তাদের শুরুটা হলো দুঃস্বপ্নের মতো। এক ওভারের গতিঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে পড়েছে লঙ্কানদের ব্যাটিং। পেসার মোহাম্মদ সিরাজ চতুর্থ ওভারে ৪ উইকেট নিয়ে শুরুতেই স্বাগতিকদের ব্যাটিংয়ে ধস নামিয়েছেন। ষষ্ঠ ওভারে আবার আঘাত করে তুলে নিয়েছেন ম্যাচের পঞ্চম উইকেট। তাতে ১২ রানে পড়ে শ্রীলঙ্কার ৬ উইকেট! মাঝে কুশল মেন্ডিস প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করলে তাকেও বোল্ড করেছেন তিনি। শ্রীলঙ্কা সবশেষ তিন উইকেট হারায় হার্দিক পান্ডিয়ার কাছে। ১৫.২ ওভারে ৫০ রানে অলআউট স্বাগতিকরা, যা ভারতের বিপক্ষে তাদের সর্বনিম্ন ওয়ানডে স্কোর।
ফাইনালের মতো মঞ্চে এমন সূচনা মোটেও প্রত্যাশিত নয়। কিন্তু ভারতের পেসারদের সামনে লঙ্কানরা শুরুতে দাঁড়াতেই পারেনি। তৃতীয় বলে কুশল পেরেরাকে শূন্যরানে গ্লাভসবন্দি করিয়েছেন জসপ্রীত বুমরা। তার পর চতুর্থ ওভারে সিরাজ বোলিংয়ে এলে হতশ্রী হয়ে পড়ে লঙ্কানদের ব্যাটিং। প্রথম বলে পাথুম নিসাঙ্কাকে (২) তালুবন্দি করিয়েছেন। এক বল বিরতি দিয়ে পর পর তুলে নিয়েছেন সাদিরা সামারাবিক্রমা (০) ও চারিথ আসালাঙ্কার উইকেট (০)। তাতে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও জেগেছিল। সেটি হয়তো হয়নি, কিন্তু এক বল বিরতি দিয়ে ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার উইকেট (৪) তুলে নিয়ে শুরুতেই লঙ্কানদের খাদের কিনারে ঠেলে দিয়েছেন তিনি। তাতে ১২ রানে পড়ে পঞ্চম উইকেট।
এক ওভার বিরতি দিয়ে আবার বল করতে এসে অধিনায়ক দাশুন শানাকাকে বোল্ড করেছেন সিরাজ। তাতে একই স্কোরে পড়েছে লঙ্কানদের ষষ্ঠ উইকেট!
ধাক্কা সামাল দেওয়ার চেষ্টায় কিছুক্ষণ আগলে থাকার চেষ্টা করেছেন কুশল মেন্ডিস। তাতে ভেল্লালাগের সঙ্গে মিলে ২১ রান যোগ করেছেন। কিন্তু শক্ত ছিল না সেই প্রতিরোধ। ৩৩ রানে মেন্ডিসকে বোল্ড করে সেই প্রতিরোধটাও ভেঙে দিয়েছেন সিরাজ। পরের ওভারে ভেল্লালাগেকে পান্ডিয়া ফিরিয়ে দিলে এটা নিশ্চিত হয়ে যায় যে শেষটা বেশি দূর গড়াচ্ছে না।
শেষটা করেন হার্দিক পান্ডিয়া। তার দুই স্পেলে ৬ বলের মধ্যে শেষ তিন ব্যাটার আউট। ১২তম ওভারে দুনিথ ভেল্লালাগেকে লোকেশ রাহুলের ক্যাচ বানান তিনি। ১৬তম ওভারে প্রথম দুই বলে প্রমোদ মাদুশান ও মাথিশা পাথিরানাকে ফিরিয়ে ভারতকে গুটিয়ে দেন হার্দিক।
৭ ওভারে ২১ রান দিয়ে ৬ উইকেট নেন সিরাজ। ২.২ ওভারে মাত্র ৩ রান দিয়ে তিন উইকেট পান হার্দিক। খবর বাংলাট্রিবিউন।
সিরাজের ভয়ংকর বোলিংয়েই ভারতের জয় একপ্রকার নিশ্চিত হয়ে যায়। আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয় ৬.১ ওভারে। ইশান কিষাণ ও শুবমান গিলের ওপেনিং জুটিতে জিতে গেছে ভারত। সপ্তম ওভারের প্রথম বলে ইশানের সিঙ্গেলে তারা ১০ উইকেটের জয়ে অষ্টম এশিয়া কাপ ট্রফি নিশ্চিত করে। ইশান ২৩ ও শুবমান ২৭ রানে অপরাজিত ছিলেন।
স্বপ্নের মতো লাগছে: সিরাজ
ভারতের বিপক্ষে নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে সর্বনিম্ন ৫০ রানে অলআউট শ্রীলঙ্কা। বল হাতে দারুণ ভূমিকা রেখে সিরাজ নিজের অনুভূতি জানান।চতুর্থ ওভারে সিরাজ বোলিংয়ে এলে হতশ্রী হয়ে পড়ে লঙ্কানদের ব্যাটিং। প্রথম বলে পাথুম নিসাঙ্কাকে (২) তালুবন্দি করিয়েছেন। এক বল বিরতি দিয়ে পর পর তুলে নিয়েছেন সাদিরা সামারাবিক্রমা (০) ও চারিথ আসালাঙ্কার উইকেট (০)। তাতে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও জেগেছিল। সেটি হয়তো হয়নি। কিন্তু এক বল বিরতি দিয়ে ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার উইকেট (৪) তুলে নিয়ে শুরুতেই লঙ্কানদের খাদের কিনারে ঠেলে দিয়েছেন তিনি। তাতে ১২ রানে পড়ে পঞ্চম উইকেট। এক ওভার বিরতি দিয়ে আবার বল করতে এসে অধিনায়ক দাশুন শানাকাকে বোল্ড করেছেন সিরাজ। তাতে একই স্কোরে পড়েছে লঙ্কানদের ষষ্ঠ উইকেট! ধাক্কা সামাল দেওয়ার চেষ্টায় কিছুক্ষণ আগলে থাকার চেষ্টা করেছেন কুশল মেন্ডিস। তাতে ভেল্লালাগের সঙ্গে মিলে ২১ রান যোগ করেছেন। কিন্তু শক্ত ছিল না সেই প্রতিরোধ। ৩৩ রানে মেন্ডিসকে বোল্ড করে সেই প্রতিরোধটাও ভেঙে দিয়েছেন সিরাজ। ৭ ওভারে ২১ রান দিয়ে ছয় উইকেট নেন সিরাজ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডেতে সেরা বোলিং ফিগারের ৩৩ বছরের পুরোনো রেকর্ড ভেঙেছেন তিনি। ১৯৯০ সালে পাকিস্তানের ওয়াকার ইউনুস ২৬ রান খরচায় ৬ উইকেট নেন।
এই কীর্তি গড়ার পথে দ্বিতীয় দ্রুততম ৫০ ওয়ানডে উইকেটের মাইলফলক ছুঁয়েছেন সিরাজ। ১০০২ বল লেগেছে তার। সিরাজের ওপরে কেবল অজন্তা মেন্ডিস, ৫০ উইকেট নেন ৮৪৭ বলে। শ্রীলঙ্কার ইনিংস শেষে সিরাজ বলেছেন, ‘স্বপ্নের মতো লাগছে। শেষবার আমি থ্রিবান্দ্রামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে একই কাজ করেছিলাম। শুরুতেই চার উইকেট নেই। কিন্তু পাঁচ উইকেট পাইনি। নিয়তিতে যা আছে সেটাই পাবেন। আজ খুব বেশি চেষ্টা করিনি। সাদা বলের ক্রিকেটে আমি সবসময় সুইং খুঁজি। আগের ম্যাচগুলোতে তেমন পাইনি। আজ সুইং হচ্ছিল এবং আউটসুইঙ্গারে উইকেট পেলাম। ব্যাটাররা ড্রাইভ খেলুক, চাচ্ছিলাম।’