শ্রাবণেও বৃষ্টি নেই দুশ্চিন্তায় আমন চাষিরা

রাউজান

নিজস্ব প্রতিনিধি, রাউজান »

আষাঢ় ও শ্রাবণ এই দুইমাস বর্ষা কাল। বর্ষায় বৃষ্টির পানিতে চারদিক টইটম্বুর থাকে। কিন্তু এবছর বর্ষায় পর্যাপ্ত বৃষ্টির অভাবে খাল-বিল, নদী-নালা শুকিয়ে চৌচির। শুষ্ক মৌসুমে পানি সংকটে চাষাবাদ ব্যাহত হলেও সাধারণত পানি সংকট হয়না বর্ষাকালে। কিন্তু জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রভাবে চলতি বর্ষায় পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হচ্ছে না। এতে ব্যাহত হচ্ছে আমন চাষাবাদ, বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। আষাঢ় মাসে পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় যথাসময়ে আমনের বীজ ফলাতে পারেনি অনেক কৃষক। যারা বীজ বুনেছিলেন পানি সংকট আর প্রচ- রোদে তাদের বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে বলে দাবি কৃষকদের। এখন শ্রাবণ মাস, এ মাসেও বৃষ্টির দেখা নেই। পানির সংকটে অনিশ্চয়তার মুখে এবারের আমন ধানের চাষাবাদ।

উপজেলা কৃষি বিভাগের সূত্রমতে, রাউজানে এবছর আমনের টার্গেট জমি ১২ হাজার ১০ হেক্টর। জুলাই মাসের ১৬ তারিখ থেকে আমন রোপণ শুরু হয়। বীজতলা তৈরি হয় আরও ১৫দিন আগে। এরমধ্যে ৩ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে আমন রোপণ শেষ হয়েছে। সাধারণত জুন মাসে বৃষ্টি শুরু হলেই বীজতলার কাজ শুরু হয়। জুলাই মাসের শুরুর দিকে রোপণ করা হয়। আমন রোপণে উত্তরাংশের সঙ্গে দক্ষিণাংশের এক মাসের পার্থক্য থাকে।

উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের কৃষক আবুল হাশেম বলেন, ‘বীজতলায় প্রস্তুতকৃত আমন ধানের চারা ২৫ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে জমিতে লাগানো হয়। বর্তমানে চারার বয়স দেড় মাস অতিক্রম হলেও যেন বাধ সেধেছে বৃষ্টি।’

রাউজান পৌরসভার কৃষক মো. বশর বলেন, ‘প্রতিবছর বৃষ্টির পানিতেই আমরা চাষাবাদ করে থাকি। কিন্তু চলতি মৌসুমে বৃষ্টির দেখা নেই। এখন মানুষের পারিশ্রমিক কম, কিন্তু বৃষ্টির জন্য অপেক্ষায় আছি।’

নোয়াপাড়া ইউনিয়নের আবুল কাশেম বলেন, ‘বৃষ্টি হলেই বীজতলা তৈরি করা হবে। কেউ কেউ সেচের মাধ্যমে জমিতে বীজধান ফেলেছেন।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাসুম কবির বলেন, ‘বৃষ্টি না হওয়ায় ৩শ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হচ্ছে না। তবে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বৃষ্টিপাত হলে ওই ৩শ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ করা যাবে। কৃষকদের ধৈর্য্য ধরতে হবে। আমরা কৃষকদের সেচের মাধ্যমে রোপনের পরামর্শ দিচ্ছি। শুকনো বীজতলার সমস্যা হচ্ছে না, কিন্তু যারা ভেজা বীজতলা করেছেন বা পানির উপর নির্ভরশীল তাদের একটু সমস্যা হচ্ছে। ধান রোপণ দেরিতে হলে ফলনও দেরিতে হবে। সেক্ষেত্রে সবজি চাষাবাদে কিছুটা প্রভাব পড়তে পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ধানের চারার বয়স বেশি হলে তেমন সমস্যা হবে না। যাদের চারার বয়স ৩০ দিন পার হয়ে গেছে তাদের বিকল্প পানির ব্যবস্থায় রোপণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’